Shebaru

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ লাভের উপায়

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ লাভের উপায়

আমেরিকার শিক্ষার মান, জীবনযাত্রার মানসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাদি যে কোনো তরুণ শিক্ষার্থীকে চৌম্ব্কের ন্যায় আকর্ষণ করতে যথেষ্ট। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য প্রতিবছর আমেরিকায় পাড়ি জমান দেশের অনেক শিক্ষার্থী। বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার সুযোগসহ আছে বেশ কিছু স্কলারশিপও। তাই তো উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মেধাবী শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ হচ্ছে আমেরিকা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের তরুণ ও মেধাবী শিক্ষার্থীরাও আমেরিকায় পাড়ি জমানোর স্বপ্নে বিভোর। আর সেই স্বপ্ন জয় করে প্রতিবছর বেশ ভাল সংখ্যক শিক্ষার্থীই উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন আমেরিকাতে। এবং তাদের মেধা ও অধ্যবসায়ের সমন্বয়ে সফলতার সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছেছেন। 

এই বিজয়ীদের কাতারে আপনিও সামিল হতে পারবেন। এর জন্য শুধু দরকার একটু অধ্যবসায় আর সঠিক গাইডলাইন। তবে সমস্যাটা হচ্ছে, আমরা এই সঠিক গাইডলাইনের অভাবেই উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় যাওয়া নিয়ে ধোয়াশায় পড়ে যাই। যার ফলে বিভিন্ন সহজ বিষয় গুলোও আমাদের মনে জট পাকাতে থাকে। অনার্স , মাস্টার্স নাকি পিএইচডি কোন ডিগ্রীর জন্য আমেরিকা যাওয়া উত্তম? কখন আবেদন করতে হয়? ভর্তি ও ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন? আমাদের অনেকের মনেই স্বাভাবিকভাবে এই প্রশ্ন বা চিন্তা চলে আসে। এবং এই প্রশ্ন বা চিন্তাগুলো আমাদের মনে জট পাকাতে পাকাতে উচ্চশিক্ষার এই সহজ বিষয়টিকে দুর্বোধ্য করে তোলে। আর নানা মুনীর নানান মত শুনে আমরা হয়ে যাই বিভ্রান্ত।

তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই, আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ নিয়ে আপনাদের মনের যাবতীয় সব জট এবং নানান সব বিভ্রান্তির একেক করে সমাধান করবো আজকের এই ভিডিও এর মাধ্যমে। আপনাদেরকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধাপে ধাপে বর্ণ্না করবো পুরো ভিডিও জুড়ে। তাহলে শেষ পর্যন্ত আমার সাথেই থাকুন।

আমেরিকায় ডিগ্রি

আমরা সাধারণত ব্যাচেলর ডিগ্রী, মাস্টার্স ডিগ্রী, ডক্টরেট ডিগ্রী এই তিন ধরনের ডিগ্রীর সম্পর্কে বেশ ভালভাবেই জানি। এবং আমরা এ সম্পর্কেও জানি যে, আমেরিকায় এ সকল ডিগ্রীতে স্কলারশিপের কম-বেশি সুযোগ-সুবিধা আছে। আমেরিকার এই সমস্ত ডিগ্রীর পাশাপাশি আরেকটি ডিগ্রীও কিন্তু আছে, সেটি হলো এসোসিয়েট ডিগ্রী। মূলত মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে  এই এসোসিয়েট ডিগ্রীতে ভর্তি হওয়া যায়। এই কোর্সের মেয়াদকাল ২ বছর। তবে বাংলাদেশ থেকে খুব একটা শিক্ষার্থী এই প্রোগ্রামে যায় নাহ। তবে এখন আসা যাক বাকি তিনটি ডিগ্রী অর্থাৎ ব্যাচেলর ডিগ্রী, মাস্টার্স ডিগ্রী, ডক্টরেট ডিগ্রী এই তিনটি ডিগ্রী প্রসঙ্গে। এই তিনটি কোর্স বা ডিগ্রী মূলত দুটি প্রোগ্রামের অন্তর্গত। একটি হলোঃ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এবং আরেকটি হলোঃ গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম। 

ব্যাচেলর ডিগ্রী মূলত আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর অন্তর্গত। আর মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম মূলত গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর অন্তর্গত। 

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম 

মূলত আপনি যদি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর পরই আমেরিকায় পাড়ি জমাতে চান, তবে আপনাকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে যেতে হবে। আর এই আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্র্যাম আমাদের দেশের অনার্স প্রোগ্র্যামের মতো। এই প্রোগ্র্যামের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মতোই চার বছর সময় লাগে। 

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর ক্ষেত্রে,

Bachelor of Science (BS/BSc), Bachelor of Fine Arts (B.F.A.), Bachelor of Engineering (B.Eng.), Bachelor of Arts (BA), Bachelor of Architecture Degree (B.Arch.), Bachelor of Design (B.Des.) সহ আরো  বিভিন্ন ডিগ্রি রয়েছে। এর মধ্যে Bachelor of Arts (BA) and the Bachelor of Science (BS/BSc) সবচেয়ে কমন। প্রতিবছরেই বাংলাদেশী প্রায় অনেক শিক্ষার্থীই এই সকল কোর্স বা প্রোগ্রামে স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকায় বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি গুলোতে পড়তে যাচ্ছে। 

তবে শুনতে কটু হলেও এটা সত্যি যে, আমেরিকায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম গুলোর ক্ষেত্রে ফান্ডিং সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাদি তুলনামূলক অনেক কম। এর কারন হচ্ছে আমেরিকার প্রায় বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোই আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের তেমন স্কলারশিপ দেয় নাহ। আর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে রিসার্চ এসিস্টেন্ট হিসেবেও কাজ করার সুযোগ খুব একটা বেশি নাহ। তাই টিউশন খরচ সহ সব ধরনের খরচ নিয়ে তাল মিলিয়ে চলাটা একটু দুঃসাধ্য ব্যাপার বটে। 

তবে আপনার যদি তীব্র আকাঙ্খা আর নিজের উপর বিশ্বাস থাকে, তবে আপনি ফুল স্কলারশিপও ম্যানেজ করতে পারবেন। 

গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম 

আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি যে, মাস্টার্স বা পিএইচডি গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর অন্তর্গত। এক্ষেত্রে এটি আমাদের অজানা নয় যে, অনার্স প্রোগ্রামের পরই মাস্টার্স প্রোগ্রাম এর জন্য আবেদন করতে হয়। এবং এই মাস্টার্স বা এমফিল প্রোগ্রামের মেয়াদ মূলত দুই বছরের হয়ে থাকে। আর পিএইচডি এর জন্য মুলত আবেদন করা হয় এই মাস্টার্স বা এমফিল প্রোগ্রামের পরে। এক্ষেত্রে সাধারণত সাড়ে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে, তবে ক্ষেত্রবিশেষ ছয় বছর ও লাগতে পারে। সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকার মতো একজন শিক্ষার্থীর প্রতিমাসে সেমিস্টার ফি হয়ে থাকে।  এক্ষেত্রে প্রতি সেমিস্টার ফি বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে স্কলারশিপ পেলে আপনার ফি তো বাদই অনেক ক্ষেত্রে সেভিংসও করতে পারবেন।

মূলত এই মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে প্রচুর স্কলারশিপ দেওয়া হয়। মাস্টার্স বা পিএইচডি এর ক্ষেত্রে আপনি ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমাতে পারেন। আবার এসিস্টেন্টশিপ অর্থাৎ রিসার্চ এসিস্টেন্টশিপ বা টিচার্স এসিস্টেন্টশিপ এর মাধ্যমে ফান্ডিং পেয়েও আমেরিকায় পাড়ি জমাতে পারেন। মূলত ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্যারামিটারের উপর ভিত্তি করে একজন শিক্ষার্থীকে টিউশন ফি, ওয়েভার সহ নানান সুবিধাদি দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সুবিধাদি পাওয়ার জন্য যে প্যারামিটার এর  কথা বললাম, সেই প্যারামিটার গুলো কি কি? বেশ, এই প্রশ্নের ডিটেইলস উত্তর আমি কিছুক্ষণ পরেই দিচ্ছি। এবার আসা যাক, রিসার্চ আর টিচার্স এসিস্টেন্টশিপ এর ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজস্ব গবেষণার কাজকে ত্বরান্বিত করার জন্য বা ল্যাবের কাজের জন্য রিসার্চ এসিস্টেন্টশিপ দিয়ে থাকে। আর মূলত শিক্ষকরা তাঁদের ব্যস্ততার কারণে যাবতীয় কাজ যেমন পরীক্ষার ডিউটি, খাতা চেক, নাম্বারিং ইত্যাদির জন্য টিচার্স এসিস্টেন্টশিপ দিয়ে থাকে।  

আরেকটি ব্যাপার বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমেরিকায় বিশ্বমানের অনেক নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে সেরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় হলোঃ Massachusetts Institute of Technology (MIT), Stanford University, Harvard University, California Institute of Technology, University of Chicago, এছাড়াও অনেক ভাল ভাল সব বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে আমেরিকাতে। যারা উদ্ভাবন এবং গবেষণায় সফলতার স্বাক্ষর রেখে আসছে। এই সব বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বিভিন্ন নামকরা স্কলারশিপ চালু রয়েছে। তম্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্কলারশিপ হলোঃ  Foreign Fulbright Student Program, Joint Japan World Bank Graduate Scholarships, AAUW International Fellowships, Illinois Wesleyan University Scholarships, Concordia College Scholarship, Dartmouth College Scholarships, Clark University Scholarships, Berea College Scholarships ইত্যাদি সহ আরো অনেক স্কলারশিপ রয়েছে।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং যোগ্যতা 

তাহলে জেনে নেওয়া যাক আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এ স্কলারশিপ পেয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমাতে হলে আপনার কি ধরনের যোগ্যতা বা কাগজাদির দরকার হবে। 

  • আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম বা ব্যাচেলর ডিগ্রীতে আবেদনের জন্য আপনাকে সেকেন্ডারী লেভেল অর্থাৎ এইচএসসি বা A লেভেল উত্তীর্ণ হতে হবে। এক্ষেত্রে এই পর্যায়ে আপনার ভালো গ্রেড থাকতে হবে। আর ভালো গ্রেড আপনার ভালো সাব্জেক্টে ভালো ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ পাবার পথকে অনেকটা এগিয়ে দিবে। এবার আসি গ্র্যাজ্যুয়েট লেভ্লের ক্ষেত্রে গ্রেড বা সিজিপিএ এর ভূমিকা নিয়ে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকোয়ারমেন্ট বেইস লাইন হিসেবে কতৃপক্ষ কতৃক একটা নির্দিষ্ট সিজিপিএ উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ নুন্যতম কতটুকু সিজিপিএ থাকলে কোনো শিক্ষার্থী ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবে সেটি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ক্ষেত্রে সিজিপিএ কত থাকতে হবে? মূলত আপনার যদি সিজিপিএ ৩.০০ বা এর বেশি থাকে তবে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। তবে আপনার সিজিপিএ যদি এর কমও হয় তাহলে সেক্ষেত্রেও প্যারা নেওয়ার দরকার নাই। কারণ আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সিজিপিএ কখনোই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না যদি আপনার বাকি কয়েকটা দিক ভালো থাকে। তাহলে এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তবে এই বাকি কয়েকটা দিক কি? বেশ তবে বাকি কয়েকটি দিক হলো- 
  • GRE/GMAT,
  • IELTS/TOEFL,
  • Letter of Recommendation (LOR)
  • Resume
  • Statement of Purpose (SOP)

মূলত এই প্যারামিটার গুলোতে ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে পারলে আপনি সিজিপিএ এর বাধাকে অতিক্রম করতে পারবেন। 

  • যেহেতু আপনার পড়াশোনার পুরোটাই ইংলিশে হবে তাই আপনার ইংরেজীতে রিটেন এবং ওরাল কমিউনিকেশনের ক্ষমতা সম্পর্কেও ইউনিভার্সিটির অবগত হওয়া লাগবে। তাই আপনার IELTS বা TOEFL এ ভালো স্কোর থাকাটা জরুরী। IELTS বা TOEFL মুলত ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্ট। আপনি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম কিংবা গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম যেটির জন্যই যেতে ইচ্ছুক হন না কেন ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্ট টা আবশ্যক। মূলত আপনার ইংরেজী রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং, স্পিকিং ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শীতা এই এক্সামের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। এক্ষেত্রে আপনি IELTS বা TOEFL যে কোনো এক্সাম দিতে পারেন। দুটিই সমান গুরুত্ব বহন করে বর্তমানে। অনেকক্ষেত্রে রিকোয়ারমেন্টে TOEFL এ ন্যূনতম ৯০ কিংবা IELTS এ ন্যূনতম ৭ বা এরকম স্কোর উল্লেখ করে দেওয়া হয়। তাই পছন্দসই ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন পাবার জন্য ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্ট এ ভালো ফলাফল আবশ্যক।
  • গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর ক্ষেত্রে GRE বা GMAT আবশ্যক। বিজনেস স্কুল এর ক্ষেত্রে GMAT লাগে। আর অন্য সব ক্ষেত্রে GRE লাগে। GRE বা GMAT এই এক্সামে যদি আপনি ভালো স্কোর উঠাতে পারেন, তবে অ্যাডমিশন এবং ফান্ডিং/স্কলারশীপ জোগাড় করা আপনার জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে GRE এর স্কোর ৩০০ এর উপর থাকা দরকার। এই পরীক্ষাটির মাধ্যমে মূলত আপনার গাণিতিকভাবে বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা এবং ইংরেজিতে রিডিং স্কিল খুব ভালোভাবে যাচাই হয়।  আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর ক্ষেত্রে SAT বা Scholastic Assessment Test দিলেও চলে। এক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি ভেদে জেনারেল এসএটি/এসএটি-১ এর পাশাপাশি সাবজেক্ট এসএটি পরীক্ষায় অবতীর্ণ করার প্রয়োজনও হয়ে থাকে। 
  • আরেকটি গুরুত্বপূর্ন জিনিষ হচ্ছে, Essay বা Personal Statement। আপনি যেই ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করছেন, আপনি ঐ ইউনিভার্সিটির জন্য কেন নিজেকে যোগ্য মনে করছেন এবং আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতা গুলো রচনা আকারে উপস্থাপনই হচ্ছে  Essay বা Personal Statement। এক্ষেত্রে যথাসম্ভব গুছানো এবং চমৎকার একটি  Personal Statement তৈরিতে আপনাকে মনোযোগ দিতে হবে।
  • এছাড়াও আপনার আরো একটি আবশ্যকীয় ডকুমেন্ট থাকা প্রয়োজন, আর তা হলো LOR বা Letter of Recommendation। অর্থাৎ আপনার নিকটতম কোনো শিক্ষক কতৃক আপনার জন্য সুপারিশ। সহজভাবে বললে ব্যাপারটা হচ্ছে, আপনার কাছের কোনো শিক্ষক আপনাকে কোন দৃষ্টিতে মূল্যায়ণ করে, সে সম্পর্কিত একটি Letter। এক্ষেত্রে এই  Letter of Recommendation আপনি আপনার কলেজের কোনো লেকচারার বা প্রিন্সিপালের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। এবং এই সুপারিশকারীর সংখ্যা তিন জন হতে হবে। পাশাপাশি extra curricular activities এবং কম্পিউটার চালানোর দক্ষতা গুলো কিছুটা থাকা দরকার। এছাড়াও আপনার দরকার সুন্দর একটা সিভি বা রিজিউমি, ব্যাংক সল্ভেন্সি ডকুমেন্টস, পাসপোর্ট, হেলথ সার্টিফিকেট, শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট।। এ কথা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম কিংবা গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম সব ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রযোজ্য।
  • আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম কিংবা গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম এর ক্ষেত্রে গবেষণার অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক নয় । তবে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম তথা মাস্টার্স কিংবা পিএইচডির জন্য গবেষনার অভিজ্ঞতা থাকাটা অনেক উপকারী। কারণ যদি আপনার কোনো পেপার পাবলিশ থাকে, তবে তা এডমিশন কমিটির কাছে আপনার গুরুত্বটা বাড়িয়ে দিবে। যা আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনাটাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে। 

ভিসার জন্য আবেদনের নিয়মাবলী

এবার জেনে নেওয়া যাক, কোথায় এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন এবং আপনার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কি কি জিনিষপত্র দরকার।

তো প্রথমে আসা যাক, কোথায় এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন? 

বেশ, এক্ষেত্রে আপনি ঢাকার যে আমেরিকান এম্বেসী আছে, সেখান থেকে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

এবার আসা যাক পরবর্তী প্রশ্নে, আপনার ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কি কি জিনিষপত্র দরকার? 

এক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র দরকারী তা হলোঃ একাডেমীক ট্রান্সক্রিপ্ট, পাসপোর্ট , ফটো, রিজিউমি, SOP, LOR, Bank Solvency Paper, IELTS আর GRE এর Certificate, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত Offer Letter, Bank Statement, পুলিশ ক্লিয়ারান্স, হেলথ ইন্স্যুরেন্স ও মেডিক্যাল রিপোর্ট। মূলত এই কাগজপত্র গুলো ঠিকঠাক থাকলেই আপনি পেয়ে যাবেন আমেরিকার ভিসা।

আবেদনের সময়কাল 

প্রায় সবই তো জেনে ফেললেন, কিন্তু কখন আবেদন করবেন তাই যদি না জানেন, তাহলে কি হবে? তাহলে চটপট জেনে নেওয়া যাক,  আপনি বছরের কোন সময়টাতে আবেদন করতে পারবেন সে সম্পর্কে।

আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলো দুটি সেশন এ ভর্তি নিয়ে থাকে। একটি হচ্ছে ফল সেশন আরেকটি হচ্ছে স্প্রিং সেশন। সাধারণত আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ফল সেশন শুরু হয়ে যায়। আর স্প্রিং সেশন শুরু হয় সাধারণত জানুয়ারী এবং এর পরবর্তী সময়ে। 

এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, আবেদনের কতদিন পর আপনাকে ফলাফল জানানো হবে? অর্থাৎ আপনি স্কলারশিপ বা ফান্ডিং সহ আপনার ঐ আবেদনকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন কি না, সেটা আপনাকে কত মাস পর জানবে? বেশ, এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মূলত মোটামুটি ৬ মাসের মতো সময় নিয়ে থাকে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৮ থেকে ৯ মাসের মতও হয়ে থাকে।

আশা করি, আপনার আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ নিয়ে এতদিনের বাঁধানো মনের জট গুলো খুব সহজ ভাবেই খুলে গেছে। আজকের এই ভিডিও তে আমি মুলত আপনাদেরকে আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ নিয়ে একটা ওভারভিউ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তী ভিডিও গুলোতে আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ এর সমস্ত খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, আর আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

স্কলারশিপের সুযোগ


বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্কলারশিপ, অনুদান, ফেলোশিপ, অ্যাসিস্ট্যান্টশিপসহ বিভিন্ন আর্থিক সুযোগ-সুবিধাসহ আমেরিকায় পড়তে যান। মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের বিভিন্ন বিষয়ে ফান্ডিং, পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগটা বেশি থাকে। এ সুযোগের কারণে শিক্ষার্থীদের ভর্তির হার অনেক।
প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান, কলা বা আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় পড়তে যান।

পার্ট টাইম জবের সুযোগ

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীরা ২০ ঘণ্টা ‘অন ক্যাম্পাস’ কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং কর্মসূচির আওতায় পড়া শেষে ডিগ্রি–সংশ্লিষ্ট খাতে এক বছর কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট পেতে পারেন। কেউ যদি বিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও গণিতসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়েন, তাহলে তিনি এ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় তিন বছর কাজের অনুমতি পেতে পারেন।

শেষ কথা-

আমেরিকায় পড়াশোনা বিষয়ে আশা করছি, তথ্য দিয়ে আমরা আপনাদের চাহিদা আলোকে তুলে ধরতে পেরেছি। এ নিয়ে আরো জিজ্ঞাসা থাকলে আমাদের জানাতে পারেন।

PLEASE SHARE THIS

আমাদেরকে আনুসরন করুন

SOCIAl MEDIA

নিউজলেটার

আমাদের বিভিন্ন প্যাকেজ আপডেট, অফার কিংবা নিউজ আপনার ইমেইলে সবার আগে পেতে সাবস্ক্রাইব করুন।

Scroll to Top
× How can we help you?