ভ্রমণ গাইড

ঢাকার দর্শনীয় স্থান পর্ব দুই

ঢাকার দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে অন্যতম হল সোনারগাঁও, ফ্যান্টাসি কিংডম নন্দন পার্ক হেরিটেজ পার্ক ইত্যাদি।

সোনারগাঁও :

ঢাকা থেকে সোনারগাঁও এর দুরত্ব প্রায় ২৯ কিলোমিটার। এটি তের শতকের বাংলার প্রাচীনতম রাজধানী। এখানে রয়েছে লোকশিল্প এবং হস্তশিল্প যাদুঘর
যা দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করছে।

ফ্যান্টাসী কিংডম :

এটি একটি বিশ্বমানের বিনোদন পার্ক। ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় অবস্থিত। ফ্যান্টাসি কিংডম আশুলিয়া থিম পার্কে শিশুদের জন্যও রয়েছে চমৎকার
বিনোদনের ব্যবস্থা। এটি যেন শিশুদের স্বপ্নজগৎ। এই পার্কটি গড়ে তুলেছেন কর্ণকর্ড এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানী।

যাতায়াত :

ফ্যান্টাসি কিংডম এর নিজস্ব বাস ছাড়াও মঞ্জিল পরিবহন মতিঝিল-গুলিস্তান-পল্টন-মগবাজার-সাতরাস্তা-মহাখালী-কাকলী-খিলক্ষেত-উত্তরা-আবদুল্লাপুর-টঙ্গী
আমুলিয়া হতে প্রতি ৫ মিনিট পর পর ছাড়ে। আবাবিল, মতিঝিল-মগবাজার-শাহবাগ-শুক্রাবাদ-আসাদগেট-টেকনিক্যাল-ফ্যান্টাসি কিংডম।
আশুলিয়া, জামগড়, সাভার, ঢাকা। ফোন-৮৮১৪০৩০-৫১, ৮৮১৪০২৮ এক্স-১৮০৬, ১৮০১ ফ্যাক্স-৯৮৮৭০৩৭ ই

হেরিটেজ পার্ক :

এক যাতায় অনেক ঐতিহ্য দেখার সুযোগ মেলে হেরিটেজ পার্কে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে চিটিয়ে থাকা হাজার বছরের ঐতিহ্যের ১১টি সম্ভার নিয়ে
সাজানো হয়েছে ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় ফ্যান্টাসী কিংডমের পাশে ঢাকার দর্শনীয় স্থান হেরিটেজ পার্ক। কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্টের উদ্যোগে প্রায় চার বছর
সময় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এসব স্থাপত্যকীর্তির অবিকল অনুকৃতি। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সৌন্দর্যকে স্বল্প পরিসরে এখানে ফুটিয়ে
তোলা হয়েছে যা দেশী বিদেশী পর্যটকদের নজর কাড়ে খুব সহজেই।

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোকে বিশ্ববাসীর কাছে নতুন করে তুলে ধরা এবং সব এক জায়গায় করে দেখানো প্রয়াসে গড়ে উঠেছে কনকর্ড গ্রুপের এই পার্ক।
এডুকেশন উইথ এন্টারটেইনমেন্ট যাকে বলা হচ্ছে এডুটেনমেন্ট। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই নির্মিত হয়েছে হেরিটেজ পার্ক।
এই পার্কে নির্মিত স্থাপনাগুলো মূলের হুবহু প্রতিরূপ। এমনকি মূল স্থাপনাগুলো যেসব উপাদানে নির্মিত, প্রতিরূপ স্থাপনাগুলোতেও
ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় একই উপাদান। তবে পার্থক্যটুকু হচ্ছে আয়তনে এ গুলো মূল স্থাপনা থেকে কয়েকগুন ছোট।

দর্শনীয় স্থান টি শিশুর জন্য কেমন হবে?

শুধু এসব স্থাপনাই নয়, পরিবারের সঙ্গে আসা শিশুরাও যাতে পর্যাপ্ত বিনোদন পেতে পারে, এজন্য পার্কের এক পাশে রয়েছে নানা উত্তেজনাকর ও মজাদার সব রাইড।
ড্রাই স্লাইড, ওয়াটার প্যাস, সার্কাস, সুইং, পাইরেট শিপ, ব্যাটারির কার এবং রয়েছে ৯০ ফুট উচু ফেরি’স হুইল নামের একটি রাইড।
রয়েছে মনোরম লেক, আর লেকের চারপাশ ঘিরে রয়েছে ফ্যামিলি ট্রেন লাইন।  হেরিটেজ পার্কের একটি ব্যতিক্রমী ও বড় আকর্ষণ চিরন্তন পল্লী।
এখানে তুলে ধরা হয়েছে কৃষ্টিনির্ভর গ্রামীণ সাধারণ মানুষের জীবনচর্চার নানা উপাদান।

চিরন্তন পল্লীতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই একটা ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় আবেশে শরীর মন কেমন জুড়িয়ে যায়। কৃত্রিম গরুসহ খড়ের গোয়ালঘর,
বড় চাকাওয়ালা গরুর গাড়ি, ঢেঁকি, মাছ ধরার নান হাতিয়ার ইত্যাদি মিলিয়ে পুরোপুরি গ্রামীণ আবহ।
গ্রামের বাড়িতে যেমন বাংলাঘর নামে বিশেষ একটি ঘর থাকে, এখানেও তা আছে।

আরেকটি ঘরে রাখা হয়েছে তাঁতের চরকা ও মাটির বিভিন্ন তৈজসপত। ঘরের সামনে বসনো রয়েছে চুলা, চুলায় বিরতিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে
নানা পিঠা-ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা। আগন্তুুকদের বসার জন্য উঠানে রয়েছে শীতল পাটি ও বাঁশের বেঞ্চি।
চিরন্তন পল্লীর কিছুটা দক্ষিণে রয়েছে ফ্রি অ্যাডভেঞ্চার রাইড এরিয়া। এখানে রয়েছে নানা ধরনের গাছপালা, বসার বেঞ্চি, ছাতা ও হালকা ব্যায়াম করার উপকরণ।
এ ছাড়া পার্কজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাহারি পালকি, ঝকঝকে রিকশা, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ ও হনুমানের মূর্তি।
পার্কজুড়ে দেশী গাছের মধ্যে কাঁঠাল ও কলাগাছের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের ঐতিহ্য আর গ্রামীণ সংস্কৃতিই হেরিটেজ পার্কের মুল উপাদান।
বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে কনকর্ড হেরিটেজ মিউজিয়াম। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক চলমান কথক হেরিটেজ পার্ক।

যাতায়াত :

হেরিটেজ পার্কে যাতায়াতের জন্য রয়েছে ভালো কিছু বাস সার্ভিস। এর মধ্যে হানিফ, মঞ্জিল পরিবহন, আবাবিল ও ফ্যান্টাসি কিংডমের নিজস্ব বাস
সার্ভিসের কথা উল্লেখ করা যায়্ হানফি মেট্রো সার্ভিসের বাস মতিঝিল-শাহবাগ-পান্থপথ-শুক্রাবাদ-আসাদগেট-টেকনিক্যাল-সাভার বাইপাস হয়ে হেরিটেজ পার্ক পর্যন্ত যায়।
মঞ্জিল পরিবহনের বাসগুলো মতিঝিল থেকে ৫ মিনিট পর পর ছাড়ে। মতিঝিল-গুলিস্তান-মগবাজার-মহাখালী-খিলক্ষেত-আবদুল্লাহপুর য়ে হেরিটেজ পার্ক পর্যন্ত যায়।
আবাবিলের বাসগুলো মতিঝিল-মগবাজার-উত্তরা হয়ে হেরিটেজ পার্কে যায়। এ ছড়া ফ্যান্টাসি কিংডমের নিজস্ব বাসগুলো প্রতিদিন ধানম-ি থেকে ছাড়ে।
ঢাকার দর্শনীয় স্থান হেরিটেজ পার্কের প্রবেশমূল্য ৬০ টাকা। এখানে ছোটদের (৩ ফুটের নিচে)  প্রবেশ ফ্রি। রাইড ফি মাত্র ১০-৩০ টাকা।
এছাড়া মাঝে মধ্যে কর্তৃপক্ষ প্রবেশমূল্য ও রাইড ফিতে ছাড়ও দিয়ে থাকেন।

নন্দন পার্ক :

জীবনের ক্লান্তিময় দিনগুলোকে মুছে ফেলে নতুন আস্বাদ উপভোগের জন্য চমৎকার নিদর্শন হচ্ছে নদ্ন পার্ক।
এটি সাভারের নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে বাড়ইপাড়ায় অবস্থিত ঢাকার দর্শনীয় স্থান। সব বয়সের সবার জন্য সারা দিন নির্মল আনন্দ দিতে নন্দন
পার্কে রয়েছে মন মাতানো ২০টিরও বেশি রাইডস ও ফান গেমস। এ ছাড়াও রয়েছে বিশাল বনভোজনের আয়োজন। পার্ক খোলা থাকে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
এখানে বাইরের খাবার সঙ্গে নেয়া যায় না।

যাতায়াত : আবাবিল পরিবহন মগবাজার-আশুলিয়া হয়ে, মেট্রো বাস (এসি) মতিঝিল-ফার্মগেট হয়ে এবং সুপার বাস গুলিস্তান-ফার্মগেট হয়ে
সরাসরি নন্দন পার্ক পর্যন্ত যায়। যোগাযোগ : ফোন : ৯৮৯০২৮৩, ৯৮৯০৯২১, ৯৮৯৮৯৪৯,০১৮৯৪০৭০০৩, ০১৮৯২০২০৩৫।

বিজ্ঞাপন:
বিদেশে স্টুডেন্ট ভিসা, মেডিকেল ভিসাজব ভিসা সংক্রান্ত ১২ বছরের অধিক সময় ধরে কাজ করছে ট্রাস্ট গ্লোবাল স্টাডি লিঃ ও অ্যামেজিং গ্লোবাল
ট্যুরস এ্যান্ড ট্রাভেলস । ঠিকানা: হেড অফিস- R H Home Centre, Room 511 (5th Floor, 74/B/1 Green Rd, Dhaka 1215, Bangladesh.
মোবাইল: ০১৭৯০৫৫০০০০, টেলিফোন: ০২৪৪৮১৫২৮১


সংকলনে: আবু জাফর রাজুভিসা কনসালটেন্ট ( ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর)।
লেখাটি সর্বশেষ আপডেট করা হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
বিজ্ঞপ্তি: লেখাটি হুবহু কপি না করার জন্য অনুরোধ করছি। সাহায্যের জন্য বা রেফারেন্স হিসেবে অংশ বিশেষ ব্যবহার করতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে এই পোস্টের লিংক প্রদানের অনুরোধ করছি। লেখকের কষ্টের মূল্য প্রদানে আপনার বিবেকের প্রতি আরজি রইল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *