ভারতে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ লাভের জন্য যে বিষয়গুলি জানা জরুরী এবং ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার বিভিন্ন দিক
নিয়ে আলোচ্য প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হল। সেই সাথে আলোচনা করা হয়েছে ভারতের স্কুল, কলেজ , ইউনির্ভাসিটিতে ভর্তি ও থাকা খাওয়াসহ সকল তথ্য।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতের প্রায় ৪৬ হাজার কলেজ ও ১০০০ টি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইন্ডিয়ার এ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ফুল বা আংশিক
স্কলারশীপের সুযোগও রয়েছে। আইসিসিআর , এসআইআই ছাড়াও ৫০% থেকে ৭০% পর্যন্ত স্কলারশীপ দিচ্ছে ভারতের বেশ কিছু সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়।
ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলো একজন বিদেশি শীক্ষার্থীর জন্য সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ ইউএস ডলারের সমপরিমাণ বার্ষিক শিক্ষাবৃত্তি দেয়।
এ স্কলারশীপ এর মধ্যে টিউশন ফি, হোস্টেল এবং মেস ফি অন্তর্ভুক্ত থাকে। এ সুযোগ শুধু আইসিসিআর (ICCR) ও SII Scholarship যারা পাবে তাদের জন্য।
বর্তমানে ইন্ডিয়ায় পড়তে যাওয়ার আগ্রহ বেড়েই চলেছে। এর জন্য ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় গুলির আন্তর্জাতিক মান ও নানা সুযোগ সুবিধা কারণ হিসেবে বিবেচিত।
কেন পড়তে ভারতে উচ্চশিক্ষা করবেন?
- আইইএল এস ও ভাইভা ছাড়াই ভর্তি সহ ভিসা প্রাপ্তি ।
- ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগ ।
- ভর্তি নিশ্চিত হলে দ্রুত ও ৯৯% ভিসা নিশ্চয়তা।
- আবাসন ও খাবারের সুবিধা ।
- পড়াশোনা শেষে জব প্লেসমেন্ট এর সুবিধা ।
- ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা হোস্টেল।
- সেশন জট মুক্ত শিক্ষা পরিবেশ ।
- বিশ্বের বড় বড় কোম্পানি ভারত থেকে নিয়োগ দেয়
ভারতে উচ্চশিক্ষা লাভে খরচ
এইচএসবিসির সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে ভারতে পড়াশোনার খরচ সবচেয়ে কম।অর্থাৎ ভারতে কোনো বিদেশি শিক্ষার্থীকে
তার উচ্চশিক্ষার জন্য বছরে মাত্র ছয় হাজার ডলার খরচ করতে হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান, সাবজেক্ট ও মান ভেদে খরচ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সেইসঙ্গে ভারতে জীবনযাপনের খরচও অনেক কম। আর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়াতে বেশ কিছু বিশেষ সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে।
ফুল স্কলারশিপের সুযোগ তো থাকছেই। ১০০% স্কলারশিপ পেলে টিউশন ফি, থাকা ও খাওয়ার খরচ পাওয়া যায়।
ভারতে উচ্চশিক্ষার বিষয় সমূহ
ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক চাহিদাসম্পন্ন প্রায় সকল বিষয়েই পড়াশোনার সুযোগ আছে।যেমন- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস, অ্যাকাউন্টিং, মেডিসিন, ডেন্টাল, ফার্মেসি, নার্সিং, ফিজিওথেরাপি, ট্যুরিজম অ্যান্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি।
এছাড়াও অনেক বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে ভারতে।
বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিষয়গুলোতে ইন্ডিয়ার ডিগ্রির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ভালো পাওয়া যায়।
কোন সাবজেক্টের কেমন ক্যারিয়ার? জানুন বিস্তারিত…
স্কলারশিপ সমূহ
ভারতে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। যেমন, আইসিসিআর স্কলারশিপ, স্টাডি ইন ইন্ডিয়া স্কলারশিপ ইত্যাদি।
এছাড়াও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বোম্বে (আইআইটিবি) স্নাতকোত্তর ও ডক্টরেট পর্যায়ে বৃত্তি, জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের সহযোগিতায় আইআইটিবি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এ বৃত্তি, আদিত্য এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউট বৃত্তি ইত্যাদি।
আইসিসিআর (ICCR) স্কলারশিপ
২০২১ সালের জন্য ভারত সরকারের বৃত্তির জন্য আবেদন আহবান করা হয়েছে। স্কলারশিপটির নাম আইসিসিআর।
ভারতের এই স্কলারশিপের আওতায় ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে মেধাবী বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা নামকরা ভারতে উচ্চশিক্ষা ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্ডারগ্রেজুয়েট, পোস্টগ্রেজুয়েট এবং পিএইচডি করার সুযোগ পাবেন। তবে শুধু মেডিকেল বিষয়ক সাবজেক্টে স্কলারশিপ দেওয়া হবে না। মেডিকেলের যাবতীয় ডিগ্রি নিজ খরচে করতে হবে।ভারতে উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ পেতে হলে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। ভারত সরকারের আইসিসিআর পোর্টালে নিজের একাউন্ট খুলে খুব সহজেই এ আইসিসিআর স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়।
সুবিধাসমূহ
- টিউশন ফি
- হোস্টেল ফি
- ফুড কস্ট
- মাসিক বৃত্তি (২০০০০-৩৫০০০ টাকা/মাসিক)
- ট্রাভেল কস্ট
সিটসংখ্যা
বাংলাদেশীদের জন্য মোট ২০০টি।
পরিক্ষা পদ্ধতি
অনলাইনে ২০০ মার্কের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। হাইকমিশনার এটি ডিল করে।
আবেদনের যোগ্যতা
- বিগত সকল পরিক্ষায় কমপক্ষে ৬০% মার্ক থাকতে হবে।
- ভেলিড পার্সপোর্ট ও সার্টিফিকেট আবশ্যক।
- ইংরেজিতে অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট সরবরাহ করতে হবে।
স্টাডি ইন ইন্ডিয়া স্কলারশিপ (SII Scholarship)
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতে রয়েছে চমৎকার একটি বৃত্তির সুযোগ। এর নাম হচ্ছে Study in India Scholarship. স্টাডি ইন ইন্ডিয়া স্কলারশীপ (SII Scholarship) এর আওতায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ভারতে সর্বচ্চ ১০০% টিউশন, হোস্টেল, ফুড স্কলারশীপ এর সুযোগ পাচ্ছে।
এছাড়াও সংশ্লিষ্ঠ ইউনিভার্সিটি সমূহের নিজস্ব ফান্ড থেকেও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা স্কলারশীপ পায়।
এ স্কলারশিপের সুবিধা সমূহ:
- ভারতের ৩৮,৮০০ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রথম ১০০ টি ইউনিভার্সিটির জন্য সরকারি ভাতা প্রদান করা হয়।
তাই কোন শিক্ষার্থী স্টাডি ইন ইন্ডিয়ার বৃত্তি পাওয়া মানে ভারতের টপ ১০০ ভার্সিটি থেকে সার্টিফিকেট অর্জন করার সুযোগ পায়।-
-
- প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে সুবিশাল ক্যাম্পাস, খেলাধুলার সুযোগ, আধুনিক লাইব্রেরি এবং প্র্যাক্টিক্যাল ল্যাব এর ব্যবস্থা রয়েছে।
- স্টাডি গ্যাপ গ্রহণযোগ্য, আই.ই.এল.টি.এস. এর বাধ্যবাধকতা নেই।
- বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ফ্রি ল্যান্সার তৈরির জন্য প্রত্যেকটি ভার্সিটি আইটি বিষয়ে পাঠদানে অনেক দক্ষতা দেখায়।
- বিশ্বের ৫০০ টি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে শিক্ষা পরবর্তী চাকরি পাওয়ার সুযোগ।
- আমেরিকা, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জার্মানীতে ক্রেডিট ট্রান্সফার সুবিধা।
-
-
ভাষা দক্ষতা
ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস বা টোফেল স্কোর থাকা বাধ্যতামূলক নয়। তবে আইইএলটিএস স্কোর থাকাটা অবশ্যই ভালো। কারণ সেখানে একাডেমিক প্রোগ্রামগুলো ইংরেজিতেই হয়। এক কথায়, বিশ্বায়নের এই যুগে ইংরেজিতে দক্ষতা
না থাকাটা অযোগ্যতার মধ্যেই পড়ে যায়।
আইইএলটিএস সম্পর্কে বিস্তারিত…