বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় সকল ভালো শিক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে থাকে। এই প্রবন্ধে মেডিকেল পড়াশোনার সকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করি এটি পড়ার পর কখন, কোথায়, কিভাবে এবং কেন এমবিবিএস পড়বেন এ সকল প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন। আর জানবেন সরকারী ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা, সময় ও তারিখ ইত্যাদি। আমরা আলোচনা করব মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে।
যদিও ভর্তি পরীক্ষা সামনে আসলে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন আউট এই শিরোনামে অনেক খবর প্রায় প্রতিবারেই শোন যায়।
সে গুলোতে কান না দিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালোভাবে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বিজ্ঞপ্তি ২০২২
মেডিকেল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২১-২২ প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ হল ডিসেম্বর ২০২২ ।
বাংলাদেশের সরকারী ও বেসরকারী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য প্রযোজ্য।
ভর্তি পরীক্ষার আবেদন বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা কবে হবে?
নিচে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হল। প্রকাশিত হলে আবার আপডেট করা হবে।
- আবেদন শুরুর তারিখ: (সম্ভাব্য) ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- আবেদন শেষ তারিখ: ১ মার্চ ২০২২।
- ভর্তি পরিক্ষার তারিখ: ০২ এপ্রিল ২০২২
- ফলাফল প্রকাশের তারিখ: পরে জানানো হবে।
- ভর্তি পরিক্ষার ফি: ১০০০ টাকা মাত্র।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশীদের জন্য যারা ইংরেজি ২০২০ বা ২০২১ সনে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় এবং ইংরেজি ২০২০ বা ২০২১ সনে এইচএসসি বা সমমানের
উভয় পরীক্ষায় পদার্থ, রসায়ন ও জীববিদ্যাসহ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা ভর্তির আবেদন করার যােগ্য হবেন। ২০২০ সনের পূর্বে এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আবেদনের যােগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। দেশী ও বিদেশী শিক্ষা কার্যক্রমে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান দুটি পরীক্ষায় মােট জিপিএ কমপক্ষে ৯.০০। উপজাতীয় ও পার্বত্য জেলার অ-উপজাতীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় মােট জিপিএ
কমপক্ষে ৮.০০। এককভাবে কোন পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৫০-এর কম হলে চলবে না।
প্রশ্ন ও নম্বর বন্টন
শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ মােট ২০০ নম্বর হিসেবে নির্ধারণ করে নিম্নলিখিতভাবে মূল্যায়ন করা হয়:
১) এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ১৫ গুণ=৭৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)
২) এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-এর ২৫ গুণ=১২৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)
লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ও এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্তনম্বরের যােগ ফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়।
বাংলাদেশে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা
প্রতি বছরই ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি অনযায়ি
বলা হয়েছে পরিক্ষার আবেদন পত্র গ্রহণ শুরু হবে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১। এখানে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত দেখুন।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন
জীববিজ্ঞান ৩০, রসায়ন ২৫, পদার্থ ২০, ইংরেজি ১৫, বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ৬, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী ৪, মোট নম্বর ১০০
বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা
লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম নম্বর প্রাপ্তরা অকৃতকার্য বলে গণ্য হবেন।
শুধুমাত্র কৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সাধারণত সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি কার্যক্রম সমাপ্তির পর
এদেশের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এক্ষেত্রে খরচ অত্যন্ত বেশি।
বাংলাদেশে মেডিকেলে উচ্চতর ডিগ্রি:
মেডিকেল সাইন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেবার জন্য বাংলাদেশে একটি মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেটি হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি ঢাকার শাহাবাগে অবস্থিত। এখানে অ্যানাটমি,ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফরেনসিক মেডিসিন, কম্যুনিটি মেডিসিন, ফার্মাকোলজি, সিন-ডিডি কার্ডিওলজি, ইউরোলজি, নেক্রলজি, বেমাটোলজি ও গাইনিকোলজিতে এমফিল, এমডি করা যায়। এছাড়া সার্জারির বিভিন্ন বিষয়ে যেমন জেনারেল সার্জারি, ইএলটি অর্থপেডিক সার্জারি, নিউরোসার্জারি, সাইনাল সার্জারি, কার্ডিওথেরাপিক সার্জারি, হেপাটোরিলিয়ারী সার্জারি প্রভৃতি বিভাগে এমএস (গঝ) করা যায়।
এছাড়াও শীর্ষস্থানীয় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজে এমডি বা এমএস করার সুযোগ রয়েছে।
সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন, জাতির হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, পশু হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, জাতিয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট প্রভৃতি স্থানে ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা নেওয়া যায় আর নিপসম এর মত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নন-ক্লিনিক্যাল বা গবেষণামূলক বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়া যায়।
সরকারি মেডিকেল কলেজ এর তালিকা:
১. ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
২. স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
৩. বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
৪. ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।
৫. চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম।
৬. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী।
৭. সিলেট এম. এ. জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
৮. শের-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল।
৯. খুলনা মেডিকেল কলেজ, খুলনা।
১০. শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া।
১১. রংপুর মেডিকেল কলেজ, রংপুর।
১২. ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর।
১৩. দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর।
১৪. কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এর তালিকা:-
১. বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ, ধানম-ি, ঢাকা।
২. আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।
৩. ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড হেলথ ক্যাব, টেকনোলজি, চট্টগ্রাম।
৪. মেডিকেল করেজ পর উইমেন্স, উত্তরা, ঢাকা।
৫. জরিনা শিকদার মহিলা মেডিকেল কলেজ, রায়ের বাজার, ঢাকা।
৬. ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
৭. ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী।
৮. সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা।
৯. ডা. ইবরাহীম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
১০. জালালাবাদ আর আর মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
১১. ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, জনসন রোড, ঢাকা।
১২. কম্যুনিটি বেইসড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।
১৩. নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
১৪. হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
১৫. নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
মালয়েশিয়ায় এমবিবিএস পড়াশোনা
মেডিকেল সাইন্স পড়ার চিন্তা করলে বাংলাদেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় এমবিবিএস ভর্তি হতে পারেন। কারণ, মালয়েশিয়ায় অনেক ওয়ার্ল্ড রেংকিং এ প্রথম পাঁচশত এর মধ্যে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ রয়েছে। বাংলাদেশের মতো মালয়েশিয়াতেও এমবিবিএস কোর্সের জন্য পাঁচ বছর সময় লাগে। অন্যান্য দেশের মতো মালয়েশিয়াতেও মেডিকেল সাইন্সে পড়াশোনার খরচ তুলনামূলক বেশি।
মালয়েশিয়ায় এমবিবিএস সম্পর্কে বিস্তারিত…
বিদেশে MBBS এ ভর্তি:
এইচএসসি পরীক্ষার পরপরই যেকোন ছাত্র-ছাত্রী ইচ্ছা করলে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায়, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারে। বিদেশে ডিগ্রি নেবার ক্ষেত্রে “রয়াল ইউনিভার্সিটি অব ইংল্যান্ড” সবার চেয়ে এগিয়ে। এখান থেকে FRCS অথবা MRCP ডিগ্রি নিতে পারলে বিশ্বব্যাপী এর স্বীকৃতি রয়েছে। এছাড়া এডিনবার্গ, গ্লাসগো ও আমেরিকা, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি থেকেও ডিগ্রি নেওয়া যায়।
শেষ কথা:
উপরে তথ্যগুলো আপনার কজে আসলে আমাদের শ্রম সার্থক হবে। যদি কোন ভূল তথ্য থাকে দয়া করে নিচে কমেন্ট করে জানান আমরা সাথে সাথে
আপডেট করে দেব।আর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বিজ্ঞপ্তি ২০২২ দেখতে ভিজিট করতে পারেন স্বাস্থ্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।