আল্লাহ আমাদেরকে যেমন সুস্থ রাখেন, তেমনি রোগও দেন। আর এ থেকে পরিত্রাণ পেতে রোগ থেকে মুক্তির দোয়া ও শিখিয়ে দিয়েছেন।
অনেক সময় পরীক্ষা নেয়ার জন্যও আল্লাহ আমদেরকে রোগ-ব্যাধি, বালামুসিবত দিয়ে থাকেন ;
যাতে আমরা আল্লাহকে ভুলে না যাই। আর বিপদে -আপদে আমরা আল্লাহকে কতটুকু মনে রাখি – সেটাও আল্লাহ দেখেন।
রোগ হলে হয়তো সর্ব প্রথম আমরা ডাক্তারের শরনাপন্ন হই; কিন্তু যিনি আমাদের রোগ দিয়েছেন,তাঁর কাছে একবার হলেও কী আমরা রোগ মুক্তির জন্য সাহায্য চেয়েছি?
ডাক্তার তখনই আমাদের সাহায্য করতে পারবেন, যখন আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবো। তিনিই তো অসুখ সারানোর উসিলা হিসেবে ডাক্তার দিয়েছেন।
আল্লাহর দেয়া উসিলা ডাক্তার দেখানোর পাশাপাশি তাঁর শেখানো কিছু রোগ থেকে মুক্তির দোয়া কুরআনে বর্ণিত আয়াতে শিফা আমলের মাধ্যমে আমরা রোগ – ব্যাধি থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারি।
কিছু রোগ থেকে মুক্তির দোয়া তুলে ধরা হলো:
বিসমিল্লাহ সহ সূরা ফাতিহা :
বিসমিল্লাহিররাহমানিররাহীম
“আলহামদুলিল্লাহিরাব্বিলআলামীন। আররাহমানিররাহীম। মালিকীইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকানা’বুদুওয়াইয়্যাকানাসতায়ীন। ইহদিনাসসিরাত্বালমুস্তাক্কীম। সিরাত্বাল্লাজীনাআনআমতাআলাইহিম। গাইরিলমাগদুবিআলাইহিমওয়ালাদ্দাল্লীন। আমিন।”
সূরাতাওবার ১৪ নং আয়াত :
“ওয়া ইয়াসফি সুদুরাকাও মিম মুমিনীন।”
সূরাইউনুসের ৫৭ নং আয়াত:
“ওয়াশিফাউললিমাফিষসুদুরিওয়াহুদাওওয়ারাহমাতুললিলমুমিনীন।”
সূরা নাহলের ৬৯ নং আয়াত:
“ইয়াখরুজু মিম বুতুনিহা শারাবুম মুখতালিফুন আলওয়ানুহুফিহিশিফাউললিন্নাসি।”
সূরাশুআরার ৮০ নং আয়াত:
“ওয়াইজামারিদতু ফা হু ওয়াইয়াশফিনি।”
সূরাবানীইসরাইলের ৮২ নং আয়াত :
“ওয়া নুনাজ্জিলু মিনাল কুরআনি মাহুওয়া শিফাউও ওয়া রাহমা তুললিল মুমিনিন।”
আরও পড়ুন: দোয়া কুনুত অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ ও আমল
উপরোল্লিখিত আয়াতগুলো একবারতিলাওয়াতকরেএকটিপানিভর্তি পাত্রে ফুঁ দিয়ে পানি টুকুপানকরলেমহানমনিবআল্লাহতা’আলাজটিল ও কঠিন রোগ থেকে তাঁরবান্দাদেরকে মুক্তি দিবেন।
এছাড়াওহযরতআইয়ুব আ: স্বীয় রোগমুক্তির জন্য আল্লাহরকাছে দোয়াকরেছিলেন, “রাব্বিআন্নিমাচ্ছানিয়াদ দুররুওয়াআনতাআরহামুররাহিমীন” (সূরা আন্বিয়া-৮৩)
আল্লাহতা’আলা দয়া করেআইয়ুব আ: কে রোগ মুক্তি দিয়েতাকেতার স্ত্রী- সন্তানএবং ধন- সম্পদ সব পূর্বেরন্যায়ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
অনুরূপভাবেহযরতইউনুস আ: মাছের পেটেনিক্ষিপ্তহলে সেখান থেকে পরিত্রাণেরজন্য তিনিনিচের দোয়াখানিপড়েছিলেন, “লাইলাহাইল্লাআনতাসুবহানাকাইন্নিকুনতুমিনাজ জোয়ালিমীন (সূরাআন্বিয়া- ৮৭) ।
আল্লাহসুবহানাহুতা’আলাতার দোয়াকবুলকরেহযরতইউনুস আ: কেও মাছের পেট থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিকজীবনেফিরিয়েআনেন।
নবীজি সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি হযরতইউনুস আ: এর ভাষায় দোয়াকরবে, সে যে সমস্যায়ই থাকুকনা কেনআল্লাহতা’আলাতারডাকেসাড়াদিবেন। (তিরমিযি-৩৫০৫)
অতএব, আমাদেরও রোগ-ব্যধিহলেএবংবালামসিবতেপতিতহলেআমাদেরকেওনবীদেরশিখানোপদ্ধতিঅনুসরণকরেবিনীতভাবেআল্লাহরকাছে দোয়াকরতেহবে। আশাকরিআল্লাহআমাদেরকেসকল রোগ- ব্যধিএবংবালামুসিবত থেকে পরিত্রাণদিবেন। ইনশাআল্লাহ।
রোগ মুক্তির দোয়া:(হাদীস থেকে)
আরও পড়ুন: শুক্রবারের আমল ও জুমআর দিনের ফজিলত
দুনিয়ার বুকে বিপদ আপদ থেকে পরিত্রাণেরজন্য কুরআনের পাশাপাশি হাদীসে নববীতেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দোয়া রয়েছে। যেখান থেকে সহজে আমলযোগ্য কিছু দোয়া নিচে তুলে ধরা হলো:
১. হযরতউসমানইবনেআফফান রা: থেকে বর্ণিত, তিনিবলেন ,রাসূল সা. বলেছেন: যে ব্যক্তি সকালএবংসন্ধায় এই দোয়াটিতিনবারপাঠকরবে, কোনকিছুইতার কোনক্ষতিকরতেপারবেনা।
“বিসমিল্লাহিল্লাজিলাইয়াদুররুমা’আইসমিহিশাইয়ুনফিলআরদি, ওয়ালাফিসসামায়ীওয়াহুয়াসসামীউলআলীম। (তিরমিযি-৩৩২৪)
২. হযরতইবনেআব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, তিনিবলেন ,রাসূল সা. বলেছেন: যে ব্যক্তি এমন কোনরুগ্নমানুষের সাথে সাক্ষাৎকরবে, যারএখনোমৃত্যুরসময়উপস্থিত হয়নি- তারনিকটসাতবার এই দোয়াটিবলবে:
“আসআলুল্লাহিলআজীম, রাব্বালআরশিলআজীম,আইয়্যাশফিকা”
(তিরমিযি-২০৮৩)
আশাকরাযায়আল্লাহতা’আলাতাকে সে রোগ থকে মুক্তি দানকরবেন।
৩. হযরতইবনেআব্বাস রা: থেকে আরোবর্ণিত, তিনিবলেন ,রাসূল সা. একজন অসুস্থ বেদুইন (গ্রাম্য লোক) কে দেখতে গিয়েবললেন,
“লাবা’ছা, ত্বাহুরুনইনশাআল্লাহ” (বুখারী -৩৬১৬)
৪. হযরতআয়িশাসিদ্দিকা রা: বলেন, আমাদেরমধ্যে কেউ যখন অসুস্থ হতোতখনরাসূল সা: তাঁরডানহাত রোগীরশরীরেবুলাতেনএবংবলতেন,
“আজহাবিলবা’ছারাব্বাননাছি, ওয়াশফিআনতাশশাফী, লাশিফাআ’ইল্লাশিফাউকা,শিফাআ’লাইউগাদিরুসুক্কমা” (বুখারী -৮৫৫)
ঘুরে আসুন: কুরআন শিক্ষা : ৩০ দিনে ফ্রি অনলাইনে কুরআন শিক্ষা কোর্স
আরও পড়ুন:
- ধনী হওয়ার আমল- আজ থেকেই শুরু হোক ধনী হওয়ার পথচলা
- দোয়া কুনুত সহজ করে পড়ুন
- রোগ থেকে মুক্তির দোয়া সমূহ
- অভাব মোচনের দোয়া
সম্মানিতসুধী, আমাদের নবীজি হযরত মুহাম্মদ সা. যেভাবে রোগ থেকে মুক্তির দোয়া করতেন, আমরাও সেভাবে আমলের মাধ্যমে রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। ওয়ামা তাওফিকি ইল্লাবিল্লাহ।
লেখক: মাওলানা মুহাম্মদ তৈয়বআলী, কামিল (হাদীস); এম,এ (ইসলামিক স্টাডিজ)
অবসরপ্রাপ্ত ধর্মীয় শিক্ষক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।