ভারতে চিকিৎসা ও চিকিৎসার খরচ পৃথিবীর আনেক দেশের চেয়ে কম। অথচ ইউরোপ এবং আমেরিকার সমমানের উন্নত চিকিৎসা হয় ভারতে।
তুলনামূলক খুব কম খরচে ভারতে যে সকল চিকিৎসা হয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ক্যান্সার, লিভার, চোখ, নিউরোলজি ও হার্টের চিকিৎসা।
বাংলাদেশের সরকারী ও বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর নিত্য অনিয়মের অসহায় রোগীরা নির্ভরযোগ্য চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছে।
চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারত যাওয়া বাংলাদেশী রোগীরা সাধারণত চেন্নাই, মুম্বাই, নয়া দিল্লী, বেঙ্গালোর, ভেলর, হায়দ্রাবাদে যায়।
শুধু বাংলাদেশী রোগী নয়, ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রোগী ভারতে চিকিৎসা নিতে আসেন।
এ লেখাটিতে ভারতে চিকিৎসা ও মেডিকেল ভিসা সংক্রান্ত নানা তথ্য তুলে ধরার প্রয়াস পাব। আশা করি সকল তথ্য জানতে সাথেই থাকবেন।
ভারতের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন?
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে ভারতীয় ডাক্তারগণ অনেক অভিজ্ঞ, আন্তরিক, সহানুভূতিশীল। এবং তাঁদের জ্ঞানের পরিধি অনেক অনেক বেশী। ভারতীয় ডাক্তাররা ডিগ্রী প্রাপ্তির পরেও প্রচুর পড়াশোনা করে থাকেন। যার কারণে নতুন রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে তাঁদের ভালো ধারনা থাকে।এছাড়াও ভারতের হাসপাতাল গুলো আধুনিক ও পর্যাপ্ত পরিমাণ যন্ত্রপাতি দ্বারা সুসজ্জিত। যার কারণে প্রায় সকল ধরনের চিকিৎসা হয় ভারতে।
বড় কারণ হল, ছোট হোক কিংবা বড়, ভারতীয় হাসপাতালের ডাক্তার এবং অন্যান্য সদস্যরা অনেক সততার সাথে রোগীদের সেবা দেন।
রোগীদের চিকিৎসা খরচ কমানোর ব্যাপারেও তাঁরা নিজেরাই সচেষ্ট থাকেন। যারাই ভারত গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য, তাঁদের বেশিরভাগই
ভারতীয় ডাক্তারদের চিকিৎসার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে মেডিকেল ভিসা
প্রতি বছর কয়েক লাখ বাংলাদেশি ভারতে মেডিকেল ভিসা করেন। একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে ভারতে মেডিকেল ভিসা নিয়ে
বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছেন দুই লাখ ২৫ হাজার ৬৬৮ জন রোগী। যদিও ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির জন্য ভারত মেডিকেল ভিসা দেওয়া বন্ধ করায় অনেক কমে এসেছে। ২০২১ সালে এসে ভারত সরকার বাংলাদেশী রোগীদের জন্য প্রচুর মেডিকেল ভিসা প্রদান করছে।
কলকাতায় চিকিৎসা:
প্রতি বছর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রোগী কলকাতায় চিকিৎসা করাতে যান। এ ছাড়াও অনেক আফগান রোগী কলকাতায় চিকিৎসা করান।
বাংলাদেশ থেকে কাছে ও একই ভাষা ও সংস্কৃতি হওয়ার কারণে চিকিৎসা পর্যটনে কলকাতা বাংলাদেশীদের প্রথম পছন্দের স্থান।
ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা:
কলকাতার অ্যাপোলোসহ বিভিন্ন হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি বিদেশি রোগী আসে। বাংলাদেশের রোগীরাও অ্যাপোলো হাসপাতালে যান।
একটি জরিপ অনুযায়ী প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ছয় হাজার রোগী অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। কারণ এখানে চিকিৎসার মান উন্নত।
তবে এখানে চিকিৎসা খরচ তুলনামূলক একটু বেশি।
ভারতের এএমআরআই হাসপাতাল
অ্যাপোলোর পরেই রয়েছে এএমআরআই হাসপাতাল। সাধারণত এই হাসপাতালেও মাসে গড়ে পাঁচ হাজার বাংলাদেশের রোগী চিকিৎসা করান।
এএমআরআই হাসপাতালের একাধিক ব্রাঞ্চ রয়েছে ভারতে। ব্রাঞ্চ গুলোর মধ্যে সল্টলেকের ব্রাঞ্চে বিদেশি রোগীর সংখ্যা বেশি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতালে চিকিৎসা ও খরচ:
হার্টের চিকিৎসার জন্য বহু রোগী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হাসপাতালে যান। বিশিষ্ট চিকিৎসক দেবী শেঠি রবীন্দ্রনাথের নামে এ হাসপাতাল তৈরি করেন।
এছাড়াও ফোর্টিস, মেডিকা, রুবি জেনারেল হাসপাতালেও বহু বিদেশি চিকিৎসা করাতে যান।
ভারতের অন্যান্য হাসপাতাল সমূহ
অ্যাপোলো বা এএমআরআই হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ যাঁরা সামলাতে পারেন না, তাঁদের জন্য রয়েছে আরো অনেক ভালোমানের হাসপাতাল।
ভিআইপি রোড এবং বাইপাসের ধারে এমন হাসপাতাল প্রচুর। রয়েছে নেত্রালয়ের মত চোখের হাসপাতালও। চিকিৎসার মানেও আপোষহীন।
তুলনামূলক কম খরচে এই হাসপাতালগুলিতে বহু মধ্যবিত্ত বিদেশি চিকিৎসা করাতে যান।
ভারতে ক্যান্সার চিকিৎসা
ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য মুম্বইয়ের টাটা ক্যান্সার হাসপাতালের কথা কে না জানে? তবে কলকাতাতেও টাটা ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করেছে।
এখন কলকাতায়ও বাংলাদেশী রোগীসহ বহু বিদেশি রোগী চিকিৎসা করাতে যান।
ভেলোর চিকিৎসা সেবায় এখনও গেীরব ধরে রেখেছে
যাদের হাতে চিকিৎসার খরচ কোন সমস্যা নয়, শুধু চাই সেরা চিকিৎসা। তাঁরা এখনও দক্ষিণ ভারতের ভেলোরে চিকিৎসা করাতে পছন্দ করেন।
দীর্ঘদিন ধরে ভেলোর অত্যন্ত নামকরা চিকিৎসা কেন্দ্র। বহু মানুষ ভেলরে বাসা ভাড়া নিয়ে মাসের পর মাস থেকে বিখ্যাত ডাক্তারদের চিকিৎসা নেন।
ক্রনিক অসুখের চিকিৎসায় ভেলোর পৃথিবী বিখ্যাত। যার কারণে প্রতি বছর অনের রোগী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এসে চিকিৎসা নেয়।
নেত্রালয়ে চোখের চিকিৎসার জুড়ি নেই
চোখের চিকিৎসার জন্য কয়েক দশক ধরে এক নম্বর দক্ষিণ ভারতের নেত্রালয়। গত কয়েক বছরে কলকাতাতেও বেশ কিছু ভালো চোখের হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে।
দিশা, প্রিয়ম্বদা বিড়লা এর মধ্যে অন্যতম। অবশ্য এখন নেত্রালয়ের ব্রাঞ্চও তৈরি হয়েছে কলকাতায়।
ভারতে সরকারি হাসপাতাল চিকিৎসা ও খরচ
বাংলাদেশী রোগীরা ভারতের সরকারি হাসপাতালে খুব বেশি যান না। কারণ এখানে সিট পাওয়া যায় না। প্রচুর ভিড় থাকে।
অবশ্য অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্সে (এইমস) কিছু কিছু বাংলাদেশীসহ বিদেশি রোগী চিকিৎসা করান।
তবে ভারতের সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসার খরচ খুব কম।
হাসপাতালের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করার আগে অবশ্যই নিজে যাচাই বাছাই করে নিবেন এবং সব রকমের খোজ খবর নিয়ে নিবেন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট অন্য কারো মাধ্যমে করার চাইতে নিজে বা কাছের কারো সাহায্য নিয়ে হাসপাতালের ওয়েবসাইটে ঢুঁকে বা ফোন দিয়ে সরাসরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে ভাল হয়। এতে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকে না। তবে পরিচিত লোকজন থাকলে তাঁদের সাহায্য নিতে পারেন।
পরিশেষে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আপনার ভারত ভ্রমণ শুভ হোক এই কামনা করছি। ভারতের সুচিকিৎসা আপনাকে বা আপনার প্রিয়জনকে সম্পূর্ণ রুপে সুস্থ করে তুলবে, এই প্রত্যাশায় শেষ করছি।
ভারতীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারতেন ঘরে বসেই?
জরিপে দেখা যায় প্রতিবছর লাখো মানুষ বাংলাদেশ থেকে ভারতের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে যায়। রেগুলার চেকআপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সার্জারি, যেকোনো ধরনের চিকিৎসাসেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতই বাংলাদেশিদের প্রথম পছন্দ। বিদেশ ভ্রমণের ঝামেলা ছাড়াই ঘরে বসেই সেবারু হেল্থকেয়ার এর মাধ্যমে ভিডিও কলের সাহায্যে পাওয়া যাবে বিশ্বমানের ডাক্তারি পরামর্শ সেবা।
শেষ কথা:
যারা ভারতে চিকিৎসা নিতে ভ্রমণ করবেন তথ্য গুলো তাদের কাজে লাগবে আশা করছি। কারণ অনেকেই ভারতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়েন।
বিশেষ ভাবে বলে রাখা প্রয়োজন যে আমরা কোন হাসপাতালকে প্রোমোট করছি না। আমরা রোগীদের মতামতের ভিত্তিতে করে হাসপাতাল গুলো বাছাই করেছি।
ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল থেকে ডাক্তার সিরিয়াল ও মেডিকেল ভিসা প্রদান করা হয়।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার জন্য ইনশাআল্লাহ্ আমরা নির্ভূলভাবে মেডিকেল ভিসা ও ডাক্তার অ্যাপোয়েন্টমেন্ট করতে পারি।
ভারতে চিকিৎসা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ও পূর্বেই রোগ ও খরচের ধারণা পেতে ফোন করুন
ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল থেকে ডাক্তার সিরিয়াল ও মেডিকেল ভিসার জন্য ০১৭১৬-৪৭৪৬৭৬