ইসলামের বাণী প্রচারে মাসিক শান্তির বাণীর ভূমিকা

মাসিক শান্তির বাণীর শ্লোগান হল- ”সত্য ও সুন্দরের প্রচারে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা”। এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ইসলামের বাণী প্রচারে ব্রত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এই পত্রিকাটি।
যারা আল্লাহর পথে মানুষকে ডাকে আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের জন্য বিশেষ মর্যাদা ও কল্যাণ বর্ষিত হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা করুন। (সূরা নাহল: ১২৫)
আল্লাহর এ বাণীর দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিপদগ্রস্থ, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ, নির্যাতিত-নিপিরীত, আশাহত, বিপথগামীসহ পৃথিবীর সকল মানুষকে সত্য ও সুন্দরের প্রতীক ইসলামের ছায়াতলে ডাকার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় মাসিক শান্তির বাণী পত্রিকাটি। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে একঝাঁক কলম সৈনিক লেখক তৈরির কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাবে শান্তির বাণী পত্রিকাটি। পাঠক’ই যার লেখক এই নীতিমালাকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষা-ভাষী লেখক ও পাঠক তৈরির কাজ করে যাবে পত্রিকাটি।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো আত্নসমর্পনকারীদের অর্ন্তভূক্ত। (৪১:৩৩)

প্রিয় নবী স. বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন ভালো কাজের পথ দেখান, সে ব্যক্তি ভালো কাজ কারীর সমান সওয়াব পায়। (মুসলিম)
রাসূল স. আরো বলেন, বাল্লেগু আন্নি ওয়ালাও আয়াতান। অর্থাৎ আমার একটি বাণী হলেও মানুষের নিকট পৌঁছে দাও।
ইসলামের ছায়া তলে মানুষকে ডাকার জন্য সর্বোত্তম পন্থা হলো এ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পারিক সহযোগিতা ও পরামর্শ করা। এতে করে দাঈ ব্যক্তিগণ একে অন্যের জ্ঞান, কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজি লাগাতে পারবে। যার ফলে ইসলামের দাওয়াতের কাজটি সহজ হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, নিজেদের সামগ্রিক ব্যাপারে পারস্পারিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন করে। (আশ-শুরা-৩৮) মাসিক শান্তির বাণী পত্রিকাটি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বাণী মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলবে।

পত্রিকার নীতিমালা:

এটি সত্য ও সুন্দরের প্রচারে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম। ইসলামের সকল বিষয়ে গবেষণাধর্মী ও সাহিত্যনির্ভর লেখাকে উৎসাহিত করা হবে। সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি বিনষ্টকারী বিষয় লেখা থেকে বিরত থাকা হবে। লেখা প্রকাশে পাঠকের আগ্রহের প্রতি লক্ষ্য রাখা হবে। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। লেখা-লিখির মাধ্যমে সমাজকে কুসংস্কার এবং ভ্রান্তি থেকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা করা হবে। সর্বপরি কারো সঙ্গে দ্বন্দ্ব নয় বরং যথাসম্ভব সদ্ভাব রক্ষা করে ইসলামের দাওয়াতের সকল কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করাই এ পত্রিকার মৌলিক নীতি।

লেখার বিষয়সমূহ:

১. সম্পাদকীয়:
২. কোরআনের আলো:
৩. হাদিসের আলো:
৪. প্রবন্ধ
৫. অনুবাদ
৬. খোৎবা
৭. জীবনী
৮. প্রত্যেক মাসের আমল
৯. শিশু বিভাগ
১০. স্থান পরিচিতি
১১. ইসলামী বিশ্ব পরিচিতি
১২. পাঠকের কলাম
১৩. প্রশ্নত্তোর পর্ব:
১৪. অন্য ধর্ম:
১৫. গল্প,কবিতা,ছড়া,উপন্যাস,নাটক ইত্যাদি
১৬. মহিলা অঙ্গন:
১৭. পরিবার ও পারিবারিক জীবন
১৮. ইসলামী সাধারণ জ্ঞান
১৯. ইসলামী সংবাদ

মাসিক শান্তির বাণী’র মাধ্যমে যেভাবে দাওয়াতী করতে পারেন:

পারিবারিক গ্রস্থাগার: আপনার বাসায় একটি গ্রন্থাগার তৈরি করুন যেখানে শান্তির বাণী পত্রিকাটির একাধিক কপি সংরক্ষণ করুন। এছাড়াও পরিবারের সদস্যদের বয়স অনুসারে বিভিন্ন ইসলামী বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা এবং ইসলামী বক্তাদের লেকচার এর অডিও-ভিডিও সংগ্রশালা গড়ে তুলুন। কোরআনের তাফসীর ও বুখারী, মুসলিমসহ সিহাহ সিত্তার হাদিস গুলির বঙ্গানুবাদ রাখুন।

পারিবারিক শিক্ষার আসর:

পরিবারের সবাই মিলে একসাথে বসে কেউ একজন শান্তির বাণী থেকে সকলের উদ্দেশ্যে পড়–ন এবং বাকিরা শুনুন। এছাড়াও একসাথে বসে ইসলামিক লেকচার শুনতে পারেন অথবা কোরআনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আয়াত ও গুরুত্বপূর্ণ হাদিসগুলোও মুখস্ত করতে পারন।

পারিবারিক প্রতিযোগিতা:

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শান্তির বাণী’র পঠিত বিষয়গুলো থেকে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারেন। পুরুস্কার হিসেবে এমন কিছু দিন যা ইসলাম মেনে চলার জন্য অনুপ্রাণিত করে। পুরুস্কার হিসেবে সদস্যদের ক্রম অনুযায়ী নামের তালিকা তৈরি করে ১ মাসের জন্য দেয়ালে টানিয়ে রাখতে পারেন। তালিকার শীর্ষে নিজের নাম থাকাটাই তাদের কাছে অনেক বড় পুরুস্কার মনে হবে।

পারিবারিক দেয়ালিকা প্রকাশ:

প্রতিমাসে একটি পারিবারিক দেয়ালিকা প্রকাশ করতে পারেন, যেখানে সদস্যগণ শান্তির বাণী পত্রিকা থেকে বিভিন্ন লেখা সংগ্রহ করে অথবা অন্য সূত্র থেকে সমসাময়িক বিষয়ের উপর লেখা, ছবি, ইসলামের বাণী প্রকাশ করতে পারে।

সাক্ষাতের সময় উপহার প্রদান:

অসুস্থ কোন রোগীকে দেখতে গেলে রোগীর জন্য উপহার হিসেবে শান্তির বাণী’র একটি সংখ্যা সাথে নিয়ে যান, রোগী এটি পড়ে তার অবসর সময় কাটাতে পারবেন। কারো বাসায় কিংবা অফিসে সাক্ষাতের জন্য গেলে উপহার হিসেবে দিতে শান্তির বাণী সঙ্গে নিন। অফিসে সহকর্মীদের প্রতি মাসে একটি শান্তির বাণী উপহার দিতে পারেন।

আর্কষণীয় স্টিকারের মাধ্যমে দাওয়াহ:

শান্তির বাণী কতৃক কোরআনের আয়াত, হাদিসের বাণী অথবা মনিষীদের ইসলামিক শ্লোগান সম্বলিত স্টিকার ছাপানো হবে। যা বিভিন্ন পাবলিক স্থানে লাগানো হবে। এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে দেওয়া হবে। যেগুলোতে ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ যেমন, সুদ, ঘুষ, মদ্য পান, পরচর্চা, প্রতারণা, নিরাপরাধ মানুষ হত্যা ইত্যাদির কুফল সম্পর্কে উল্লেখ থাকবে। স্টিকার ছাপানোর জন্য আপনার নিজের নাম বা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা করতে পারেন।

প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে দাওয়াহ:

শান্তির বাণী থেকে অথবা অন্য কোন উৎস থেকে কোরআন, হাদিসের বাণ পোস্টার আকারে নোটিশ বোর্ডে লাগিয়ে দিতে পারেন।

গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক দিবসে দাওয়াহ:

গুরুত্বপূর্ণ দিবস উপলক্ষ্যে প্রিয়জনকে কোরআনের আয়াত, হাদিসের বাণী অথবা মানুষের চিন্তার উদ্রেককারী ইসলামিক শ্লোগান লিখে শুভেচ্ছা কার্ড উপহার হিসেবে দিতে পারেন। যেগুলোতে ইসলামে নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ যেমন, সুদ, ঘুষ, মদ্য পান, পরচর্চা, প্রতারণা, নিরাপরাধ মানুষ হত্যা ইত্যাদির কুফল সম্পর্কে উল্লেখ থাকবে। অথবা শান্তির বাণী পত্রিকাও উপহার দিতে পারেন।

পত্রিকার চাঁদার মাধ্যমে দাওয়াহ:

উপহার হিসেবে কাউকে শান্তির বাণী দিতে চাইলে গ্রাহকের নাম-ঠিকানাসহ বাৎসরিক প্রত্রিকার চাঁদা পরিশোধের মাধ্যমে দাওয়াহ’র কাজ করতে পারেন।

কমিউনিটি সেন্টার ও সেমিনার হল এর মাধ্যমে দাওয়াহ:

বড় বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এমন কমিউনিটি সেন্টার বা হল/অডিটরিয়াম/প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাদের সহযোগিতায় উপস্থিত অতিথিদের মাঝে শান্তির বাণী বিতরণের ব্যবস্থা করুন।

সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে দাওয়াহ:

শান্তির বাণী কর্তৃক ইসলামিক স্কলার, দা’ঈ, ইসলামিক পত্রিকা, ইসলামিক ওয়েবসাইট, ইসলামিক সিডি-ভিসিডির দোকানসহ নানা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য সম্মাননা প্রদান করা হবে। এ আয়োজনে পুরুস্কারের একটি অংশ বা হলরুম ভাড়ার অর্থ পরিশোধ করার মাধ্যমে দাওয়াহ কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন।

ইসলামিক প্রদশর্নীর মাধ্যমে দাওয়াহ:

স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইসলামিক প্রদশর্নীর আয়োজন করা হবে। যেখানে শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইসলামিক ঐতিহ্য ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তির এমন কিছু তুলে ধরা হবে যা ইসলামিক দাওয়াহ, প্রচারে সহায়ক হতে পারে। যেখানে শান্তির বাণীতে প্রকাশিত বিভিন্ন বিরল বিষয়াবলী উপস্থাপিত হবে। এ আয়োজনে বুদ্ধি-পরামর্শ ও আর্থিক সহযোগিতা করতে পারেন।

টুরিস্ট গাইড প্রকাশের মাধ্যমে দাওয়াহ:

শান্তির বাণী পত্রিকাটি দেশে ভ্রমণে আসা বিদেশী পর্যটকদের জন্য দাওয়াহ গাইড বা টুরিস্ট গাইড প্রকাশ করবে। এই গাইডে বিভিন্ন স্থানের ঠিকানা থাকবে বিশেষত ইসলামিক স্থানগুলোর ঠিকানা। বিখ্যত মসজিদ, মাজার, মাদ্রসা, স্থানীয় ইসলামিক বিশেষজ্ঞদের ঠিকানা এ গাইডে উল্লেখ থাকবে। এ খানেও বুদ্ধি-পরামর্শ ও আর্থিক সহযোগিতা করতে পারেন।

তালিমূল কুরআন মাদ্রাসা:

শান্তির বাণী পরিচালিত তালিমূল কুরআন মাদ্রাসায় শিশু শিক্ষা কার্যক্রম, বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে কোরআন শেখানো এবং হিফজ করার ব্যবস্থা করা হবে। সেই সাথে তাওহীদ, র্শিক, বিদয়া’হ্, হালাল-হারাম, ইসলামে ব্যবসা-বাণিজ্য, ইসলামে দাম্পত্য জীবন, ইসলামে নারী অধিকার, ইসলামে বিয়ের বিধান ও অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর কোর্সের আয়োজন করা হবে। এ কোর্সে অংশ গ্রহণ করুন এবং সম্ভব হলে অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা করুন।

আপনিও হোন ইসলাম প্রচারক:

মাসিক শান্তির বাণী অথবা এখানে উল্লেখিত যে বিষয়টি আপনার ভালো লাগবে তা পরিচিত লোকদের মাঝে পৌঁছিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আপনিও হোন ইসলাম প্রচারক। এ প্রসঙ্গে প্রিয় নবী সা. বলেন, কেউ হেদায়েতের দিকে ডাকলে যতজন তার অনুসরণ করবে আহবান কারী ব্যক্তি ততজনের সমান সওয়াব লাভ করবে। তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন ঘাটতি হবে না। (সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪)

আরো পড়ুন: জুমআর দিনের আমল যা জানা জরুরী


ইসলামের বাণী প্রচারে আমাদের সহযোগী হতে পারের আপনিও। আমাদের আলোচনায় যোগ দিতে দয়া করে ফোন করুন: ০১৭১৬৪৭৪৬৭৬