অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বর্তমানে ক্যারিয়ার গড়তে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য একটি কর্মমুখী শিক্ষা শিক্ষা। মূলত কার, জীপ, মোটরসাইকেল, বাস, ট্রাক,
এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিদ্যাই হল অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। ২০২১ সাথে বাংলাদেশে শুধু কার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে প্রায় ৪.৫ লাখ। যা ২০০৫ সালের প্রায় দিগুণ।
এবার চিন্তা করে দেখুন এবিষয়ের চাহিদা কি হারে বাড়ছে! সুতরাং এখনি সময় এ বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করে এ ক্ষাতে ব্যবসা ও বিদেশে চাকুরীর আগামীর অপার
সম্ভাবনাকে হতের মুঠোয় আনা। নিচে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হল।
কেন অটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শিখবেন?
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর সূত্র মতে শুধু ঢাকা শহরে মোটর গাড়ির সংখ্যা প্রায় সারে সাত লাখ। আর সারা দেশে গাড়ি আছে ১৮ লাখেরও বেশি। এই লাখ লাখ গাড়ির তুলনায় অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা খুব কম।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার কি কাজ করেন?
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়াররা একটি গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের সব দায়িত্ব পালন করে। একটি গাড়ির কোথায় কী সমস্যা? কোন সমস্যা কিভাবে কাটাতে হবে?
কোথায় কোন যন্ত্রাংশ পাল্টাতে হবে বা মেরামত করতে হবে, কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাড়ি সচল করা হবে?
কোন পদ্ধতি ব্যবহার করলে সহজেই সফলতা মিলবে? ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়াররা সমস্যার সমাধান করেন।
তাঁদের নির্দেশ অনুসরণ করে অটোমোবাইল মেকানিকরা গাড়ি মেরামত করেন।
তবে প্রয়োজনে অনেক সময় অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারকেও ইঞ্জিন মেরামতে হাত লাগাতে হয়।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের পরিধি
- অটোমোবাইলের বিভিন্ন গবেষণা, নিরীক্ষা ও প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ
- গাড়ি তৈরি বা মেরামত সক্রান্ত ইকুইপমেন্ট নির্ধারণ ও প্রয়োজন অনুসারে সঠিক ব্যবহার
- নতুন গাড়ির মডেলের জন্য বাজেট তৈরি
- মূল গাড়ি তৈরির আগে অনুরূপ মডেল তৈরি
- গাড়ি কোয়ালিটি কন্ট্রোল নিশ্চিত করা
- গাড়ি তৈরি বা মেরামতের প্রতিটি ধাপে কোয়ালিটি নিশ্চিত করা
- প্রয়োজন অনুসারে গাড়ির ইম্প্রুভমেন্ট সক্রান্ত কাজ করা
- গাড়ীর যাবতীয় তথ্যাদি ডকুমেন্টেনশন করে থাকে।
কর্মক্ষেত্র সমূহ কোথায়?
আমাদের দেশে গাড়ি উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের দেশে কার সার্ভিস সেন্টারের তুলনায় অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা বেশ কম।
তাই এ সেক্টরে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বেশি। এ বিষয়ে পড়ালেখা করে তাই সাধারণত চাকরির জন্য বসে থাকতে হয় না।
মোট কথা এ বিষয়ে পড়াশোনা করে যে যে জায়গায় কাজ করা যায় তা হল-
- যারা পরিবহন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করেন, তাদেরও অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন হয়। সুতরাং সেখানে চাকুরীর সুবিধা প্রচুর।
- বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালনের জন্য অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করে থাকেন।
গাড়ি বিক্রির দোকানেও রয়েছে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের সুযোগ। আমদানি করা নতুন গাড়ি কিংবা রি-কন্ডিশন গাড়ির ত্রুটি সারাতে কাজ করে থাকেন তারা। িএ - বিদেশে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগও আছে । বিদেশে গাড়ির কারখানা থেকে শুরু করে গাড়ি মেরামতের গ্যারেজে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।
- নিজেই একটি কার সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠান দিতে পারে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে ১৮/২০ লাখ প্রয়োজন হতে পারে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে পুজিও সরবরাহ করা হয়।
- সরকারি চাকরির সুযোগ রয়েছে ইস্পাত প্রকৌশল অধিদপ্তর ও অন্যান্য মেকানিক্যাল ইকুইভ্যালেন্ট জব ফিল্ডে।
ডিপ্লোমা অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোথায় করা যায়?
সারা দেশ জুড়ে ৪৯ টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং–এ ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। সিটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানেও অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করা যায়। যেমন,
- ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- বাংলাদেশে-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- বাংলাদেশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
- শ্যামলী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউ
- মটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি
- মিরপুর পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট
- চিটাগাং টেকনিক্যাল কলেজ
- সাকিনা আজহার টেকনিক্যাল কলেজ
- বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (বিকেটিটিসি)
ভর্তির যোগ্যতা
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমার চার বছর মেয়াদি আট সেমিস্টারের এই কোর্সে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার পর যে কোন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া সম্ভব।
তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে। তবে এইচএসসি বিজ্ঞান পাশদের জন্য সরাসরি ২য় বর্ষে ভর্তির সুযোগ আছে। তবে গণিত থাকতে হবে।
ডিপ্লোমা অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মান কেমন?
ডিপ্লোমা অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সটির মান HSC সার্টিফিকেটের তুলনায় বেশি, তবে একই বিষয়ের বিএসসি ডিগ্রির তুলনায় কম।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং হল বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রবেশিকা স্তর।
দেশে বিদেশে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ উচ্চশিক্ষার সুযোগ কোথায়?
দেশে: ডুয়েট ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেকানিক্যাল, আইপিই ও মেকাট্রনিক্সে বিএসসির সুযোগ রয়েছে।
বিদেশে: নানইয়াং পলিটেকনিক (সিঙ্গাপুর), ও সরকারি অনুদানে চীনের চাঙ্গু ভোকেশনাল ইন্সটিটিউটসহ বেশ কয়েকটি পলিটেকনিক, চীন, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে।
ডিপ্লোমা অটোমোবাইল ক্যারিয়ার ও উচ্চশিক্ষা
বাংলাদেশে ১৯৬২ সালে বাংলাদেশে-সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সর্বপ্রথম অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু হয়। এরপর চালু হয় ১৯৯২ সালে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। বর্তমানে অনেকগুলো ইন্সস্টিটিউটেই এই কোর্সটি রয়েছে। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বর্তমানে একটি সম্ভাবনাময় খাত। এই শিল্পে এখন প্রয়োজন বেশ কিছু দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার যারা একাধারে উত্পাদন, বিক্রি ও মেরামতে পারদর্শী। তাদেরকে ডিজাইন, ড্রইং ও ক্যালকুলেশনে অভিজ্ঞ হতে হয়। কারিগরি ইঞ্জিনিয়াররাই সাধারনত এই ধরনের কাজ করে থাকে।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইল কি?, Types of Automobile Engineering, automobile, automotive, সেবারু,enjoy tech life,best college for automobile,benefits of automobile engineering,automobile engineering salary,what is automobile engineering in bangla,অটোমোটিভ
প্রিয় পাঠক, আশা করি অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনার আদ্যপান্ত উপরের আলোচনা থেকেই জেনে গেছেন।
প্রকৃত কথা হল, দেশে এখনো অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কর্মক্ষেত্র তেমন একটি প্রসার ঘটে নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেকানিকরাই গাড়ি মেরামতের
সব কাজ সেরে ফেলে। তাই যদি ভালো ক্যারিয়ার বা অর্থ উপার্জন করতে চান তবে বিদেশে যাওয়াই ভালো। বিদেশে এ বিষয়ে পড়াশোনার জন্য
কোন প্রশ্ন থাকলে নিচের নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইল। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আরও কোন জানার থাকলে দয়া করে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারলে খুশি হব। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
যোগাযোগঃ সেবারু,২/৪ ব্লক-জি,লালমাটিয়া,ঢাকা-১২০৭,বাংলাদেশ।০১৭১১-৯৮১০৫১,০১৮৯৭৯৮৪৪২০,০১৮৯৭৯৮৪৪২১।