কানাডায় উচ্চশিক্ষা লাভের আগ্রহ শুধু বাংলাদেশীদের নয়; বরং পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম পছন্দ কানাডা। তবে বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের কানাডায় উচ্চশিক্ষার আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। কানাডার সরকার বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য study in canada ভিসা আরো সহজ করেছে। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে বৃত্তির অধীনে বা নিজস্ব অর্থায়নে কানাডায় পড়তে যাচ্ছে। কানাডার সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আপডেট তথ্য সম্পের্কেই আজকের লেখা।
কেন কানাডায় উচ্চশিক্ষা করতে যাবেন?
কানাডায় পড়াশোনার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে । এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে-
- বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে কানাডার সার্টিফিকেট গ্রহণযোগ্য।
- পৃথিবীর মধ্যে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বিবেচিত কানাডা।
- কানাডায় পড়াশোনা চলাকালীন পার্ট টাইম জব করার সুযোগ রয়েছে।
- আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক কম তাই লেখাপড়া শেষ করে পার্মানেন্ট হওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়।
- কানাডায় মাথাপিছু গড় আয় অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এজন্য চাকরিরত অবস্থায় আয়ের পরিমানও বেশি হয়।
পার্ট টাইম জব এর সুবিধা
কানাডায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য খণ্ডকালীন কাজের ভালো সুযোগ রয়েছে। কানাডার নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে একজন শিক্ষার্থী ২০ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। সে হিসাবে মাসে দেড় হাজার কানাডিয়ান ডলার আয়ের সুযোগ আছে। এছাড়াও মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে কর্মঘণ্টার সীমাবদ্ধতা থাকে না। তখন আরো বেশি কাজ করা যায়। কী কী বিষয়ে কাজ করতে পারবেন? যে বিষয়ে আপনি দক্ষ সে বিষয়েই পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ আছে। তবে, শিক্ষক সহকারী, বিক্রয়কর্মী, ফুড ক্যাটারিং, গবেষণা সহকারী, কম্পিউটার ওয়ার্কসহ বিভিন্ন খণ্ডকালীন ও ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
কানাডায় পড়ালেখা করে চাকরির সুযোগ
কানাডা অভিবাসীদের ওপর নির্ভরশীল। তাই বর্তমানে অভিবাসীরা অনেক কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। দক্ষতা, রেজাল্ট, সৃজনশীলতা ও প্রযুক্তির ওপর দক্ষতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজের সুযোগ দেয়া হয়। কানাডায় সাধারণত পড়াশোনা শেষ করার পর বিভিন্ন কাজ পাওয়া যায়। বছরের বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাকরির মেলা বা প্লেসমেন্টের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ থেকে নিয়মিত জব প্লেসমেন্ট করা হয়। এছাড়াও কানাডার বিভিন্ন সরকারি সংস্থা পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ দিচ্ছে। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও কাজের সুযোগ আছে। অ্যাকাউন্টিং, প্রকৌশল, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, আইটিসহ গবেষণাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে ।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদনের যোগ্যতা কি?
কানাডায় উচ্চশিক্ষা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করার জন্য বেশ কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। এর মধ্যে নিচের গুলো উল্লেখযোগ্য-
- একটি মনোনীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (ডিএলআই) নথিভুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে অবশ্যই কানাডার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে এবং উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুমতিপত্র লাগবে।
- একাডেমিক রেজাল্ট তুলনামূলক ভালো হতে হয়।
- প্রমাণ করতে হবে যে পড়াশোনার জন্য পর্যাপ্ত টাকা রয়েছে। টোটাল টিউশন ফি আপনার আছে কি না তা বোঝাতে হবে ।
- কোনও অপরাধমূলক রেকর্ড থাকলে হবে না, এবং একটি পুলিশ প্রশংসাপত্র/ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগবে। (প্রয়োজ্য ক্ষেত্রে)
- স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা পরীক্ষা নিতে হবে। (যদি প্রয়োজন হয়)
- প্রমাণ করতে হবে যে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরে দেশে ফেরৎ যাবে। মোটামুটি এই সকল বিষয় ফলো করলেই হয়, তবে আরও কিছু প্রয়োজনে দরকার হয়।
স্কলারশিপের কী কী সুযোগ-সুবিধা আছে?
কানাডায় সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক ফলাফল ও গবেষণার অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ততা এবং আইইএলটিএসের স্কোরের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন। এই স্কলারশিপ মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে। এছাড়াও কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে অনেক ধরনের সুযোগ আছে। এছাড়াও কুইবেক প্রভিন্সিয়াল গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ, অন্টারিও ট্রিলিয়াম স্কলারশিপসহ নানা বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য চালু আছে। শাস্ত্রী ইন্দো-কানাডিয়ান ইনস্টিটিউট, কানাডিয়ান কমনওয়েলথ স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ প্ল্যানেও আবেদন করতে পারেন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।
কানাডায় উচ্চশিক্ষা যে সকল কাগজপত্রের দরকার হয়
কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ গুলো নিন্মরূপ
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও নম্বরপত্র, এসওপি, প্রত্যায়নপত্র/রিকোমেন্ডশন লেটার ইত্যাদি।
- ব্যাংক সলভেন্সি ফাইনান্সিয়াল এবিলিটি অর্থাৎ ব্যাংকে ভালো পরিমাণ টাকা দেখাতে হয়। যাতে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে যে এই ছেলেটির লেখাপড়া করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে।
- study in canada এর জন্য আইএলটিএস বা টোফেলে ভালো রেজাল্ট থাকতে হয়।
সবচেয়ে কম টিউশন ফির বিশ্ববিদ্যালয়
সবচেয়ে কম টিউশ ফিস হচ্ছে নিউফাউন্ডল্যান্ডের মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে (Memorial University)। এখানে টিউশন ফিসটা সত্যই অনেক কম।
এখানে International Students Graduate tuition and fees $9,666 এর মত। বিস্তারিত দেখুন এখানে।
মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরেই কম খরচে যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়া যায় সেটি হল ঠান্ডার স্বর্গরাজ্য খ্যাত Saskatchewan প্রভিন্সের University of Saskatchewan এ। এই বিশ্বিদ্যালের টিউশন ফিস হল প্রতি সেমিষ্টারে $১৭২৩ কানাডিয়ান ডলার, অর্থাৎ, বাৎসরিক $৫১৭০ কানাডিয়ান ডলার।
ইউএসএ কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবছর টিউশন ফি যেখানে প্রায় বছেরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা লাগে, সেখানে কানাডায় বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিচ্ছে এর প্রায় অর্ধেকেই। অর্থাৎ ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মধ্যেই কানাডায় উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পাওয়া যায়। ফলে বাংলাদেশীদের জন্য কানাডা পড়াশোনার জন্য আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দু হয়েছে।
কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সময়
কানাডায় উচ্চশিক্ষা সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে মে পর্যন্ত সেশন থাকে। এ ছাড়া জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল আর জুনেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন শুরু হয়। পিএইচডি কিংবা পোস্ট ডক্টরেট এর ক্ষেত্রে যে সাধারণত যে কোন সময়ে ভর্তি হওয়া যায়।
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ সুবিধা
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে আগ্রহীদের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে থাকে। শিক্ষার্থীর একাডেমিক রেজাল্টের ওপর ভিত্তি করে বৃত্তি দেওয়া হয়ে থাকে। তবে যারা শুরু থেকেই বৃত্তি নিয়ে যেতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে টোয়েফল, আইইএলটিএস, জিআরই, জিম্যাট প্রভৃতি স্কোর ভালো থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কানাডা সরকার আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ প্রোগ্রাম নামে একটি বৃত্তি দেয়। এ ছাড়া কানাডা মিলেনিয়াম স্কলারশিপ ফাউন্ডেশন, ওন্টারিও গ্র্যাজুয়েট বৃত্তি প্রোগ্রামসহ নানা ধরনের বৃত্তির প্রোগ্রাম চালু আছে।
কানাডায় উচ্চশিক্ষা বিদেশে পড়াশোনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে আরো পড়ুন:
এস এস সির পর কানাডায় উচ্চশিক্ষা…
বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি তথ্য…
মালয়েশিয়ায় কম খরচে উচ্চশিক্ষা
কানাডায় স্কলারশিপবিষয়ক ওয়েব লিংক :
কানাডায় উচ্চশিক্ষা বিশ্ববিদ্যায়লসমূহ তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ভর্তি ও স্কলারশিপের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করে থাকে। সুতরাং আপনার লক্ষ্য যদি হয় কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া, তা হলে অবশ্যই ওয়েবসাইট গুলো নিয়মিত ভিজিট করুন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটগুলিতে ভর্তির সময় ও স্কলারশিপ সংক্রান্ত সকল তথ্য আপডেট থাকে। অবশ্য আমরাও চেষ্টা করি নিয়মিত ভর্তি ও বৃত্তির তথ্য গুলো আপডেট রাখার। এছাড়াও গুগলে সার্চ দিতে পারেন এই লিখে যে, কানাডায় স্কলারশিপ, কানাডায় পড়াশোনা, Study in Canada, Scholarships in Canada, Canada student visa ইত্যাদি। নিচে কিছু স্কলারশিপ ও কানাডায় পড়াশোনা বিষয়ক ওযেব লিংক দেওয়া হল,
বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও স্টুডেন্ট ভিসা সহায়তা প্রদানকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে রয়েছে।
এর মধ্যে trust global Study অন্যতম। এখান থেকে স্টুডেন্টের যোগ্যতা, অর্থনৈতিক সামর্থ্য, উদ্দেশ্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী কোর্স ও ইউনিভার্সিটি সিলেক্ট করে দেওয়া হয়।
স্টুডেন্ট ফ্লাই করার পূর্বে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় ও জীবন যাত্রা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
যাতে করে বিদেশ যাওয়ার পর স্টুডেন্টকে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।
যোগাযোগঃ সেবারু,২/৪ ব্লক-জি,লালমাটিয়া,ঢাকা-১২০৭,বাংলাদেশ।০১৭১১-৯৮১০৫১,০১৮৯৭৯৮৪৪২০,০১৮৯৭৯৮৪৪২১।
কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য এই ভিডিওগুলো দেখতে পারেন:
- অবিশ্বাস্য! কানাডা Student Visa সবার হচ্ছে| ৯৫% ভিসা রেট
- Canada Student Visa from Bangladesh
- SDS For Bangladeshi Student
- Canada Student Visa from Bangladesh
- V86 Canada Student Visa Bangladesh
- Study in Canada from Bangladesh without IELTS
- 100% GUARANTEED CANADA STUDENT VISA
- কোন Program এ Admission পেলে সহজে কানাডার Study Visa পাবেন!
Keyword: কানাডায় উচ্চশিক্ষা ২০২৪, কানাডায় কম খরচে পড়াশোনা, কানাডায় ডিপ্লোমা কোর্স, কানাডায় মাসিক আয়,
কানাডায় স্কলারশিপ পাওয়ার উপায়, কানাডায় মাস্টার্স স্কলারশিপ, study in canada
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা বিষয়ে এই ইউটিউব স্বাক্ষাৎকারটি দেখুন-
শেষ কথা হল, কানাডা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য সবচে পছন্দের দেশ। ইন্টারন্যাশনালী রিকোগনাইজ বিশ্ববিদ্যালয়, স্কলারশিপ অপাচুনিটি, পার্টটাইম ওয়ার্ক সুবিধা এবং পিআর
ওপারচুনিটি আ্যাভেলেবল। সতুরাং এটাই কানাডায় ভর্তি হওয়ার শেষ্ঠ সময়।
আশা করি উপরের লেখাটি আপনার কাজে আসবে। ভালো লাগলে নিচে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ ও ইউটিব চ্যানেলে জয়েন করে আপনার প্রশ্ন করতে পারেন।