পনেরই আগস্ট
মোঃ আব্দুল বাকী চৌধুরী নবাব
(পনেরই আগস্ট শীর্ষক এই কবিতাটি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের জন্য প্রণীত)
অ)
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, হিজল-তমাল ও ধান-পাটের বাংলায়;
সাতচল্লিশ বছর ধরে পনেরই আগস্ট আসে আর চলে যায়।
কেন যেন সবাই কেঁদে উঠে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ায়;
শোকে দুঃখে বিহব্বল হয়ে কি যেন অবলা কথা বলতে চায়।
কিন্তু কিছু বলতে পারে না, কেবল স্থির নয়নে চেয়ে থাকে;
বঙ্গ জননী শুধু বলে কোথায় গেলিরে খোকা আমাকে ফেলে।
আয় না আমার কোলে বাবা, আর কত ব্যাথা দিবে মোরে;
দেখ না চেয়ে তোর বড় আদুরের হাসু এখন বাংলার মসনদে।
আ)
আর কত ঘুমাবি মুজিব বাবা দীর্ঘ প্রায় অর্ধশতাব্দি ধরে;
অসূররা ইতিমধ্যে খতম হয়েছে তোরই হাসুর বুদ্ধির বলে।
এখন পিক-পাপিয়া-গাংচিল তোর জন্যে সদা মাতম করে;
তটিনি মধুমতি ছোট ছোট তরঙ্গ তুলে দিবানিশি শুধু কাঁদে।
তমালের ডালে কানি বক ও সঙ্খ চিল চুপচাপ বসে থাকে;
মাঝে-মধ্যে ডেকে উঠে শোক-গাথা ভাটিয়ালি গান ধরে।
ই)
তুমি অঘোরে ঘুমাচ্ছো টুঙ্গিপাড়ায় দুঃখ এবং ব্যাথা নিয়ে;
এবং বনানীতে রেনু, কামাল, জামাল ও রাসেলসহ অনেকে।
ওঠ না বাবা, চেয়ে দেখ বাংলার জনপদের আনাচে কানাচে;
উন্নতির ছোঁয়া এবং জোয়ার বিভিন্ন আঙ্গিকে বইছে চারিদিকে।
অর্থনীতির ভিত এখন অনেক শক্ত, কেউ না খেয়ে থাকে না;
যোগাযোগের অবকাঠামোর উন্নয়নের উদহারণ সেতু যে পদ্মা।
উন্নতির সারথী ধরে তোর বাংলা এখন মধ্যম আয়ের দেশ;
তলাবিহীন ঝুড়ি কথাটির সত্যতা অনেক আগেই তো শেষ।
ঈ)
আর কত ঘুমাবি, চেয়ে দেখো সামনে দাঁড়িয়ে কিষান-কিষানী;
ফলন বৃদ্ধির সুবাদে দুঃখ থাকলেও এখন তাদের যে মুখে হাসি।
প্রচুর অর্থ আসছে গার্মেন্টস ও প্রবাসী স্বর্ণ সন্তানদের হাত ধরে;
এদিকে বাংলার সব মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে অনেক গুনে।
তোরই আদরের তনয়া হাসুর হাতে এখন দেশের সকল চাবি;
বর্তমানে রাতে হাসে তারকা-শশী এবং সারাদিন ধরে যে রবি।
উ)
উঠ না বাবা, আর কত ঘুমাবি, জানি তোর বুকে অনেক ব্যাথা;
এখন আর সেই অভাব না থাকলেও তব বিহনে আমি যে একা।
পনেরই আগস্ট আসে আর চলে যায় কালের অমোঘ পরিক্রমায়;
কিন্তু প্রতিটি এই অবাঞ্চিত দিন আমাকে যে নতুন করে কাঁদায়।