পিএইচ.ডি হল পড়াশোনার সর্বচ্চ লেভেল অতিক্রম করার ডিগ্রি। পিএইচডি ডিগ্রী (PhD degree) অর্জন করলে গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ওবিভিন্ন পেশায় দ্রুত প্রোমশন পাওয়া যায়। এ ছাড়াও নানা পেশার উচ্চ পদের কর্মকর্তাগণ পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে থাকেন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহে চাকুরীরত ব্যক্তির ক্ষেত্রেও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের সুবিধা রয়েছে। গবেষণা ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত
তিনটি টার্ম হচ্ছে, এম ফিল, পিএইচডি বা ডক্টরাল এবং পোস্ট ডক্টরাল। এ সব গুলো ডিগ্রিই গবেষণা ধর্মী।
নিচে অনলাইন ও অনক্যাম্পাস পিএইচডি ডিগ্রী সম্পর্কে পরিপূর্ণ আলোচনা করা হল।
পিএইচডি সম্পর্কে যে প্রশ্ন গুলো প্রায়ই শোনা যায়
আমি প্রতিনিয়ত পিএইচডি ডিগ্রি সম্পর্কে যে সকল প্রশ্নের সম্মুখিন হই সে বিষয় গুলো আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্রশ্নগুলো এমন হয়, পিএইচডি ও এমফিল কি? কারা এ ডিগ্রী নিতে পারে? কোথায় পিএইচডি করা যায়?
খরচ কেমন হয়? স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় কি? বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি লাভের উপায় কি?
এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইন পিএইচডি ডিগ্রী লাভের উপায় কি ও ডিগ্রির মান জানতে চায়।
পিএইচডি ডিগ্রী কি?
পিএইচডি (PhD) মুলত কোন একটি বিষয়ের উপর গবেষণা। একজন গবেষক একটি তত্ত্বের (গবেষণা শিরোনাম) আলোকে একটি নতুন গবেষণা
উপস্থাপন করেন। যে গবেষণা কর্মটি এর আগে কেউ করে নি। পিএইচডি করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ তত্ত্বাবধায়কের প্রয়োজন হয়।
যিনি গবেষণার কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। যার তত্ত্বাবধানে গবেষক গবেষণাকর্ম সম্পন্ন করেন।
গবেষককে তত্ত্বাবধায়কের দিকনির্দেশনা নিয়ে একটি পিএইচডি থিসিস লিখতে হয়। যেটি সাধারণত ১৫০ থেকে ৪০০ প্রষ্ঠার হয়।
কোথায় পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করা যায়?
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। এটি সাধারণত জুন অথবা জুলাই মাসে ভর্তি সার্কুলার প্রদান করে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব: ইত্যাদি।
এর পরই আসে বিদেশে উচ্চশিক্ষার কথা। বিদেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালেয়ে পিএইচডি গবেষণার জন্য প্রচুর ফান্ড থাকে।
বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে সুযোগ সুবিধা ও স্কলারশিপ বেশি থাকার কারণে প্রার্থীরা প্রথমে সেই সুযোগই সন্ধান করে থাকেন।
যেমন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কানাডায় অনলাইন পিএইচডি সহ নানা কোর্সে ৭০% পর্যন্ত স্কলারশিপ চলছে।
কোন কোন বিষয়ে পিএইচডি করা যায়?
বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ভর্তির করার যোগ্যতা কেমন লাগে?
একেকে দেশে একেক রকম যোগ্যতার দরকার হয়।অনেকে মনে করে দেশের টপ ইউনিভার্সিটিতে যদি ভর্তির সুযোগ না পেলে মনে হয় বিদেশে ডক্টরেট করার যোগ্যতা লাভ করা যাবে না । আসলে বাংলাদেশের অধিকাংশ ইউনিভার্সিটিকে বিদেশে কেউ চিনেই না। বরং তারা দেখতে চায় আপনার রেজাল্ট কেমন।গবেষণা প্রবন্ধ কোন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে কি না? যে ভাষায় গবেষণা করবেন, তাতে আপনার দখল কেমন।প্রমাণ স্বরুপ কোন সাটিফিকেট আছে কিনা? যেমন, আইইএলটিএস (IELTS), জিআরই (GRE), জিম্যাট (GMAT), টোফেল (TOEFL) ইত্যাদি।
পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনের নিয়মাবলী:
গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক (সুপারভাইজার) নির্বাচন। তিনিই গবেষণার বিষয় ঠিক করে দেন, গবেষণার কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকেন। দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে নিয়মও আলাদা হয়ে থাকে।
তবে নিচে একটি সাধারণ নিয়ম ক্রমানুসারে বর্ণনা করা হল:
- ভর্তির এক মাসের মধ্যে সুপারভাইজার বা গাইডের সাথে পরামর্শক্রমে গবেষণার শিরোনাম (টাইটেল) সহ গবেষণার প্রস্তাবনা (Proposal) তৈরি করে জমা দিতে হবে।
- গবেষণা প্রস্তাবনা (Proposal) জমা দেওয়ার পর দুই মাসের মধ্যে প্রস্তাবনা উপস্থাপন ( Proposal Presentation ) করতে হবে।
- দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পনের পরে দুই মাসের মধ্যে নির্ধারিত গবেষণা কর্মের একটি সেমিনার করতে হবে। এই সেমিনারে পি.এইচ.ডি. কমিটির ০৫ (পাঁচ) জন সদস্যের মধ্যে কমপক্ষে ০৩ (তিন) জন সদস্য উপস্থিত থাকবেন। বর্ণিত তিনজন সদস্য গবেষকের গবেষণা কর্মের অগ্রগতি সম্পর্কে তাদের লিখিত মতামত প্রদান করবেন।
- দ্বিতীয় বছরের শেষে মূল থিসিস উপস্থাপন করতে হবে। থিসিস উপস্থাপনার আলোকে পি.এইচ.ডির সংশ্লিষ্ঠ বিশ্ববদ্যালয়ের পুর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যগণ থিসিস মূল্যায়ন করবেন।
- থিসিস উপস্থাপন করার এক মাসের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মৌখিক পরীক্ষায় পি.এইচ.ডি কমিটির তিনজন সদস্য এবং বিষয়ভিত্তিক একজন প্রফেসরকে নিয়োগ করা হবে।
- মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেমূল থিসিসের ৩টি কপিসহ উক্ত ছাত্র/ছাত্রীকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রী প্রদানের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট বিবিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
পিএইচডি ডিগ্রী অর্জনে ফান্ডিং বা স্কলারশিপ সমূহ
বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি ডিগ্রীর জন্য স্কলারশীপ প্রদান করে থাকে। এছাড়াও প্রায় সকল ক্ষেত্রেই রিসার্চ এ্যাসিসটেন্টশীপ প্রদান করে থাকে।
এটা হচ্ছে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জনের একটি উত্তম পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন গবেষণা কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান করে থাকেন।
দ্বিতীয় সুযোগটি হচ্ছে, টিচিং এ্যাসিসটেন্টশীপ।এ ক্ষেত্রে পিএইচডি গবেষক তার গবেষণা কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রফেসরকে তাঁর টিচিং কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করেন। এবং বিনিময়ে গবেষক পারিশ্রমিক হিসাবে অর্থ উপার্জন করেন।
এই এ্যাসিসটেন্টশীপসমূহ অর্জনের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা। অর্থাৎ প্রাথমিকভাবে এসএসসি, এইচএসসি, বিএ/বিএসসি/বিকম (সম্মান) এবং এমএ/এমএসসি/এমকম পরীক্ষার রেজাল্ট। এর পরে আসে ভাষার উপরে দখল প্রসঙ্গ। ভাষার উপরে দখলের মাত্রা প্রমাণের জন্য প্রার্থীকে TOEFL/IELTS পরীক্ষা দিতে হয়। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিরূপনের জন্য ভিন্নতর কিছু পরীক্ষার স্কোর দেখতে চায়। এ পরীক্ষাগুলো হচ্ছে, Graduate Record Examination (GRE) IELTS, TOEFL, NEWSAT, GMAT ইত্যাদি।
বাংলাদেশে পিএইচডি ডিগ্রী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুস্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) তে পিএইচডি প্রগ্রামে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।বছরে সাধারণত এক বার এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে।সাধারণত জুন/জুলাই মাসে এ ভর্তি সার্কুলার প্রকাশিত হয়।
আমেরিকা ও কানাডায় পিএইচডি করার উপায়
আমেরিকায় পিএইচডি করতে মাস্টার্স করার প্রয়োজন নেই। এমনকি অনার্সের রেজাল্ট পাবলিশ হওয়ার আগেই তৃতীয় বর্ষের রেজাল্ট নিয়ে আবেদন করা যায়। এবং অনার্স সমাপ্তির সাথে সাথেই পিএইচডি শুরু করে ফেলা যায়। এতে অল্প বয়সেই পিএইচডি ডিগ্রী নিয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকে। কানাডায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপের ক্ষেত্রে বিশেষত পিএইচডিতে প্রায় একই নিয়ম।
মালয়েশিয়ায় পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন
মালয়েশিয়ায় মার্স্টাসের পর ৩ থেকে ৫ বছেরর মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করা যায়। স্কলারশীপ অথবা নিজ খরচে পড়ার সুযোগ রয়েছে।
নিজ খরচে পড়ার জন্য ৩ বছরে সর্ব মোট ৬ থেকে ৮ লাখ টাকার টিউশন ফি লাগে। মালয়েশিয়ার কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া আসার মাধ্যমে পিএইচডি অধ্যায়নের সুবিধা প্রদান করে। যেমন, আই আই ইউ এম, লিমককউইং ইউনিভার্সিটি, ইউনিতার বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।
যে ডিগ্রি গুলি বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি গ্রান্ড কমিশন (ইউজিসি) ও বিশ্বের যে কোন দেশে গ্রহণযোগ্য।
যে সার্টিফিকেটে অনলাইন মাধ্যম উল্লেখ থাকবে না। আর সে জন্যই আপনাকে মালয়েশিয়া যেয়ে ভর্তি হয়ে আসতে হবে।
মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা বিষয়ে বিস্তারিত এখানে…
অনলাইন পিএইচডি ডিগ্রী কি, কেন, কিভাবে অর্জন করবেন?
অনেকে প্রশ্ন করে অনলাই পিএইচডি কি ভালো? এ ধরনের পিএইচডি ডিগ্রী নিয়ে কি বাস্তব জীবনে কাজে আসবে? এ ব্যাপারে বলি, ভালো পিএইচডি হচ্ছে সেই পিএইচডি যা একজন মানুষকে সারাজীবনের জন্য গবেষক বানাবে। কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, কার তত্ত্বাবধানে পিএইচডি করা হলো, তা কিছুটা গুরুত্বপূর্ণ বটে, কিন্তু খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসলে এমফিল বা পিএইচডিতে গবেষণা কী করে করতে হয় তা শেখানো হয়।
পিএইচডি হলো গবেষণার হাতেখড়ি।
গবেষণা একটা পেশা। যারা এ পেশায় নিয়োজিত তাদেরকে বলে গবেষক, উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী। সুতরাং এ পেশায় আসার জন্য অনলাইন মাধ্যমকে গহণ করে গবেষণার বিষয়বস্তু ও টেকনিক আহরণ করলে আমি দোষের কিছু দেখিনা। পৃথীবির বহু দেশে অনলাইন পিএইচডির প্রচলন আছে।
এবং গড়ে উঠেছে অনেক অনলাইন ভিত্তিক বা দূরশিক্ষণ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয়।তবে এখানে Online PhD degree প্রদানের নামে ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ অন ক্যাম্পাস বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি ও অনেক ফেক অনলাইন বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যারা ছাত্রদের কাছ থেকে অনলাইন মাধ্যমে জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ধরনের অনলাইন ইউনিভার্সিটি গুলোতে পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির পূর্বে ভালো ভাবে যাচাই বাছাই করতে হবে।
অনলাইন পিএইচডি সম্পর্কে বিস্তারিত এখানে…
পিএইচডি সম্পর্কে আরও পড়ুন:
এই শিরোনাম গুলো দিয়ে গুগলে সার্চ করলে পিএইচডি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যা পাবেন,
পিএইচডি করার যোগ্যতা, ডক্টরেট করার যোগ্যতা, বিদেশে পিএইচডি করার যোগ্যতা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার যোগ্যতা, এম ফিল করার যোগ্যতা, পিএইচডি করার সুবিধা, পিএইচডি স্কলারশিপ, পিএইচডি করতে কত বছর লাগে, পিএইচডির বিষয়সমূহ, বিদেশে পিএইচডি করার যোগ্যতা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি, পিএইচডি করার যোগ্যতা কি, পি এইচ ডি ভর্তির যোগ্যতা,
m phil করার যোগ্যতা
বিদেশে পিএইচডি ভর্তি ও ভিসা বা অনলাইন পিএইচডির জন্য সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান
স্টুডেন্টের যোগ্যতা, অর্থনৈতিক সামর্থ্য, উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী কোর্স ও ইউনিভার্সিটি সিলেক্ট করে দেয় স্টুডেন্ট ভিসা হেল্পলাইন।
স্টুডেন্ট ফ্লাই করার পূর্বে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় ও জীবন যাত্রা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা ও তথ্য নিতে পারে। এতে করে বিদেশ যাওয়ার পর স্টুডেন্টকে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।
স্টুডেন্ট ভিসা হেল্পলাইন পড়াশোনা শেষ হওয়া পযর্ন্ত নানা ধরনের সেবা প্রদান করে, এতে করে ভর্তির পর স্টুডেন্টকে ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।