অনেকদিন থেকে ১টা মনের ভাব প্রকাশ করবো ভাবছি কিন্তু প্রকাশ করা হয়নি,আজ বলতে বাধ্য হলাম।প্রতি বছরের ১টা নির্দিষ্ট সময় ব্যাপী প্রতিটি পাড়া মহলায় কমবেশি ওয়াজ মাহফিল হয়,প্রতিটি মাহফিলের আয়োজক থাকে মসজিদ কমিটি থেকে শুরু করে তরুন সমাজ পর্যন্ত।ইসলামি আলোচক হিসেবে বিভিন্ন বক্তাকে আমন্ত্রণ করা হয় মাহফিলে প্রধান অতিথি/বিশেষ অতিথি রাখা হয় সেই এলাকার শিল্পপতি/বিভিন্ন সংগঠনের নেতা/জনপ্রতিনিধি/সমাজ সেবক/ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থরের ব্যক্তিবর্গ।মাহফিলের অর্থ ব্যয় ধরা হয় অতিথি ও বিভিন্ন ভাবে চাদার মাধ্যমে।
ওয়াজ মাহফিল এ কি হয়?
মাহফিলে বক্তা তাদের নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা থেকে ইসলামি হাদিস-কোরআনের আলোকে বলে থাকেন এবং বিভিন্ন বক্তা বিভিন্ন সংগঠনের অনুসারী। বেশিরভাগ বক্তাই সরাসরি অথবা এনিয়ে-বিনিয়ে সরকারের বিপক্ষে কথা বলে থাকেন।সেখানে অতিথি হিসেবে বসে থাকেন আওয়ামী লীগের নেতা অথবা জনপ্রতিনিধি।তাদের কে বসে রেখে এই যে,সরকারের বিপক্ষে কথা বলছে তাদের ভূমিকা কি থাকা উচিৎ!! আবার যেখানে ধর্মের প্রচার আয়োজন সেখানে অতিথি হিসেবে যিনি/যারা (ব্যক্তি বিশেষ) বসে আছেন তিনি ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় তো দূরের কথা বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকেন অবৈধ্য ভাবে টাকা আয় করে থাকেন যেটা ইসলামে অপরিপন্তি (বেশিরভাগ আয়োজনে এমন হয়ে থাকে)তাহলে কি দাড়ালো বলতে পারেন?? আবার কেউ কেউ আলহাজ্ব নাম টাইটেল লাগিয়ে নিয়োমিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ে অতিথি হিসেবে আলহাজ্ব ওমুক/তমুক হিসেবে নিজেকে জাহির করেন।
এবার আসা যাক আমার ব্যক্তিগত কথায় রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের ১জন কর্মী হওয়ার সৌভাগ্যে এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকার মাহফিল আয়োজক কমিটি আমাকে আমন্ত্রণ করে থাকেন কিন্তু কোন মাহফিলে অতিথির আসনে বসে থাকার চুল পরিমাণ কোন যোগ্যতাই আমি ব্যক্তিগত ভাবে রাখি না, এর কারণ আমি এখনো ইসলামের যে নিয়মকানুন আছে তা পালনে ব্যর্থ।যেখানে ইসলামি আয়োজন ধর্ম প্রচার সেখানে অতিথি হওয়া উচিত ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী যারা নিয়মকানুন মেনে চলে মিনিয়াম ৫ ওয়াক্ত নামাজি ব্যক্তি।আমাকে আয়োজক কমিটি যখন দাওয়াত দেয় তাদের স্পষ্ট ভাবে বলে দেই আমি যেতে পারবো না, যতটুকু সামর্থ্য অনুযায়ী মাহফিলের জন্য দান করে তাদের বিদায় দেই এবং তাদের এটাও বলি আমি যখন সঠিকভাবে ধর্ম পালন করতে পারবো তখন মাহফিলে অতিথি হিসেবে যাবো।
মোট কথা নিজের প্রচারের জন্য,ব্যক্তি স্বার্থের জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে ভণ্ডামো করা যায় না??অন্য ভাবে হিসেব আর ১টু করা যাক,মোটা অংকের টাকা খরচ করে বছরে ১টি দিন ধর্ম প্রচারে ধর্মের আসলে কতটুকু উপকারে আসে তা আমার বোধগম্য নয়।প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ইমামের বক্তব্য শুনে থাকি অনেক মসজিদে অভিযোগ পাওয়া যায় ইমাম/মুয়াজ্জিনের বেতন ভালোভাবে দেয়া হয় না,আবার সেই মসজিদ কমিটি লক্ষলক্ষ টাকা খরচ করে মাহফিল করে থাকেন।কি বুঝলেন?১টা কথা বলা বাহুল্য যে,ইসলাম ধর্ম প্রচারে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদান বিগত সরকারের তুলনায় আকাশ-পাতাল।
১টা সময় বিএনপি-জামায়াত প্রচার করতো আপনাদের মনে আছে কি না জানিনা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অবশ্যই মনে থাকার কথা তারা অপপ্রচার করতো যে,আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় গেলে মসজিদে আযান হবে না উলুধ্বনি শোনা যাবে,উল্টো একমাত্র এই আওয়ামী লীগ সরকারই ইসলাম ধর্মের ধারক,বাহক ও প্রচারক।জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র তৈরি করেছেন।সত্যি কথা বলতে কি আওয়ামী লীগ কাজে বিশ্বাসী প্রচারে দুর্বল।বিএনপির আমলে যদি এমন মসজিদ নির্মাণ হতো তাহলে তারা এই মসজিদ নির্মাণের কথা বলেই কয়েক বছর ক্ষমতায় থাকার সিড়ি হিসেবে বন্দবস্ত করতো,যেখানে আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক সংগঠন জন্য মসজিদের পাশাপাশি মন্দির থেকে শুরু করে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব সভায় ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে,সে অনুয়ায়ী আওয়ামী লীগ সরকার আজীবন থাকা উচিৎ কি না একবার ভেবে দেখবেন? ইসলাম শান্তির ধর্ম।
বিগত দিনে এই ধর্মকে ব্যবহার করে বিএনপি-জামায়াত বিভিন্ন বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করেছে কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ,বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে সফল হতে পারেনি তারা।আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি আগামী বছরের মধ্যে সরকারকে ওয়াজ মাহফিল নিয়ে ১টা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা দরকার।যেখানে ইসলাম ধর্মের সঠিক প্রচার হবে।।আর যেন কেউ ধর্মকে ব্যবহার করে দেশের মধ্যে অশান্তি তৈরি করতে না পারে।বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এরশাদুল হক রঞ্জু, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,রংপুর জেলা শাখা।