ইংল্যান্ডে (ইউকে) উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর শিক্ষার্থী ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য যায়।
কিন্তু সঠিক দিক নির্দেশনা ও তথ্য জানা না থাকায় অনেককে নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যাগুলোকে সহজ করে দেওয়ার উদ্দেশেই আজকের এই ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা বিষয়ক লেখাটি । এখানে আপনি জানতে পারবেন, ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যেতে হলে কী কী যোগ্যতা লাগবে? কীভাবে আবেদন করবেন? ইংল্যান্ডে পড়াশোনার খরচ কত হবে? প্রয়োজনীয় কী কী কাগজপত্র লাগবে? এরকম আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যেগুলো সম্পর্কে আপনাকে স্পষ্ট ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আশা করি, এতে উপকৃত হবেন এবং ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনার যাবার পথ সহজ হবে।

ইংল্যান্ডে কেন পড়তে যাবেন?

জ্ঞান বিজ্ঞানের তীর্থভূমি হলো ইংল্যান্ড। ওয়ার্ড র‍্যাংকিং এর অনেক ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ইংল্যান্ডে অবস্থিত। উদাহরণ দিতে গেলে শুরুতেই বলতে হয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। এর পর আছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রতি বছর অক্সফোর্ডের ৬৩% স্নাতকেত্তর শিক্ষার্থী এবং ক্যামব্রিজের প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে এখানে ভর্তী হয়। এছাড়াও ইংল্যান্ডে যতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেগুলোতে উচ্চশিক্ষার জন্য বছরে প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী পড়তে যায়।

ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৫০,০০০ এর বেশি অফার করা কোর্স আছে। এবং সাবজেক্ট এরিয়া আছে ২৫ এর বেশি। নিঃসন্দেহে এখানে পড়ালেখার মান অনেক উন্নত।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে আসা মানুষের চাহিদা কতটা বিশাল!

বিভিন্ন নামিদামী কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে যারা চাকুরীদাতা তাদের কাছে ইংল্যান্ডের ডিগ্রির কদর কম না। আপনি যদি ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে বের হতে পারেন, তাহলে চাকরি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। চাকরি পাবার প্রতিযোগিতায় বাকী সবার থেকে আপনি অনেক এগিয়ে থাকবেন। আপনাকে চাকরি খুঁজতে হবে না, বরং চাকরিই আপনাকে খুঁজে নেবে। দেখবেন বিভিন্ন জায়গা থেকে আপনার জন্য জব অফার আসতে থাকবে।

ইংল্যান্ডে পড়তে যাবার শিক্ষাগত যোগ্যতা

৩-৪ বছরের ব্যাচেলার কোর্স করার জন্য প্রয়োজনঃ

  •  ১২ বছরের শিক্ষা জীবন।
  •  ILTS স্কোর কমপক্ষে ৬.০-৬.৫।

মাস্টার প্রোগ্রাম করার জন্য প্রয়োজনঃ

  •  ১৬ বছরের শিক্ষা জীবন।
  •  ILTS স্কোর ৬.৫– ৭.০।

উল্লেখ্য, ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করার জন্য ৫০-৫৫% এর বেশি নাম্বার একাডেমিক কোর্সে আপনাকে অর্জন করে আসতে হবে।

আইন ও চিকিতৎসাবিদ্যার জন্য ৫ বছর, স্থাপত্যবিদ্যার জন্য ৭ বছর এবং পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য ৩ থেকে ৪ বছর পূর্ণকালীন অধ্যায়নের প্রয়োজন পড়বে।

কোর্স সার্চ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন

প্রথমে ভাবতে হবে কোন বিষয় নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চান। কোন বিষয়ের প্রতি আপনার ভালোলাগা এবং আগ্রহ আছে। ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়তে যেতে চাইলে আপনাকে নানা ধরনের কোর্স অফার করা হবে।

কারিগরী কোর্স, ব্যাচেলর, ডিপ্লোমা, পোস্ট গ্রাডুয়েট ডিপ্লোমা, মাস্টার্স, পিএইচডি- সবগুলো কোর্সের জন্যই ইংল্যান্ডে আসতে পারেন। ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বেছে নিতে হবে আপনি কোন কোর্সটি করতে চাচ্ছেন।

ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোতে পড়ার জন্য জনপ্রিয় কিছু ফ্যাকাল্টি- 

  • Business School, 
  • Hospitality, Tourism and Hotel Management, 
  • Pure Science and Engineering, 
  • Education Science, 
  • Law 
  • Health & Medicine.

এছাড়াও ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য নিচের বিষয়গুলোতে বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীরা আগহী হয়ে থাকে-

  • Archaeology and Anthropology
  • Biochemistry (Molecular and Cellular)
  • Biology
  • Biomedical Sciences
  • Chemistry
  • Classical Archaeology and Ancient History
  • Classics
  • Classics and English
  • Classics and Modern Languages
  • Classics and Oriental Studies
  • Computer Science
  • Computer Science and Philosophy
  • Earth Sciences (Geology)
  • Economics and Management
  • Engineering Science
  • English Language and Literature
  • English and Modern Languages
  • European and Middle Eastern Languages
  • Fine Art
  • Geography
  • History
  • History (Ancient and Modern)
  • History and Economics
  • History and English
  • History and Modern Languages
  • History and Politics
  • History of Art
  • Human Sciences
  • Law (Jurisprudence)
  • Materials Science
  • Mathematics
  • Mathematics and Computer Science
  • Mathematics and Philosophy
  • Mathematics and Statistics
  • Medicine
  • Medicine (graduate entry)
  • Modern Languages
  • Modern Languages and Linguistics
  • Music
  • Oriental Studies
  • Philosophy and Modern Languages
  • Philosophy, Politics and Economics (PPE)
  • Philosophy and Theology
  • Physics
  • Physics and Philosophy
  • Psychology (Experimental)
  • Psychology, Philosophy and Linguistics
  • Religion and Oriental Studies
  • Theology and Religion

উপরের বিষয়গুলোসহ আরও নানা ধরনের বিষয় বা সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোন করা যায়।
এই সকল সাবজেক্ট পড়াশোনা করলে প্রচুর জব পাওয়া যায়। এখন সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় বসে ভাবুন ক্যারিয়ারের জন্য আপনি কোন কোর্সটি করবেন।

যদি ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষায় যেতে আগ্রহী হন তাহলে আপনাকে বৃটিশ কাউন্সিলে  (www.britishcouncil.org.bd) যোগাযোগ করতে হবে। এরা যাবতীয় তথ্য সহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে।

আপনার সুবিধার জন্য World Rangking এ থাকা ইংল্যান্ডের দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হলোঃ

  • University of Oxford
  •  University of Cambridge
  • Imperial College London
  • UCL
  • London School of Economics and Political Science
  • University of Edinburgh
  • King’s College London
  • University of Manchester
  • University of Warwick
  • University of Bristol

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময়সীমা

ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তীর দুইটি সেশন আছে। 

  • অটাম সেশন (সেপ্টেম্বর – জানুয়ারি)
  • স্প্রিং সেশন (জানুয়ারি-জুন)

যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তী হতে চান, সেখানকার সকল প্রয়োজনীয় তথ্য সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে ভর্তীর আবেদন পত্র ডাউনলোড করে নিয়ে, আবেদন করতে হবে। সার্বিক সহায়তার জন্য এডমিশন অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

[বিদ্র: ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তীর আবেদন একটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সবকিছু প্রসেস করতে প্রায় ৭-৮ মাস সময় লেগে যায়। তাই হাতে ১ বছর সময় নিয়ে আবেদনের কাজ শুরু করুন।]

ইংল্যান্ডের সেরা কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট

ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য পড়াশোনার খরচ

ইংল্যান্ডে পড়াশোনার খরচ ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে অনেকটা বেশি। নিচে একটি নমুনা খরচের হিসেব বাংলাদেশী মুদ্রা টাকায় দেওয়া হল। যেহেতু বিশ্ববাজারে টাকার মান পরিবর্তনশীল, ফলে কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।

ইংল্যান্ডে পড়াশুনার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সভেদে একেক জায়গায় একেক রকম হয়ে থাকে।

  • ফাউন্ডেশন কোর্স বা প্রিলিমিনারি কোর্সে পড়তে প্রতি বছর আপনার খরচ হবে ৪,৬৫,০০০ – ১,৩৯২,০০ টাকা।
  • কলা বিষয়ে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে প্রায় ৮১২,০০০-১,০৪৪,০০০ টাকা।
  • বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে ৮৭০,০০০- ১,৩৯২,০০০ টাকা।
  • ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোতে পড়তে প্রতি বছর খরচ হবে ১,১৬০,০০০-২,৪৩৬,০০০ টাকা।
  • এম.বি.এ করতে প্রতি বছর খরচ হবে প্রায় ৪৬৪,০০০-৩,৪৮০,০০০ টাকা।
  • ইংল্যান্ডের বিজনেস স্কুলগুলোতে পড়তে গেলে প্রতি বছর আপনার খরচ হবে ৪৬৪,০০০-৩,৪৮০,০০০ টাকা।

আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ

ইংল্যান্ডে পড়তে যেতে হলে টিউশন ফি ও লিভিং কস্ট বাদে কমপক্ষে এক মাসের জন্য আপনার ব্যাংক একাউন্টে ১,১৬০,০০০ – ১,৭৪০,০০০ টাকা আছে তা দেখাতে হবে। ভিসা পাওয়ার পর চাইলে এই টাকা তুলেও ফেলতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ব্লক একাউন্টস এ টাকা রাখার ঝামেলা পোহাতে হবে না।

ইংল্যান্ডে ভিসার জন্য আবেদন

ভিসার কাজ শেষ করার জন্য হাতে কিছুটা সময় নিয়ে আবেদন করতে হবে। কারন ইংল্যান্ডের ভিসা পেতে ৩ থকে ৩.৫ মাস লাগে।

এখানে একটা কথা হয়তো অনেকেই জানেন না, ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা নামের কোন ভিসা দেওয়া হয় না। যা দেওয়া হয় তার নাম স্ট্যাডি পারমিট। এই পারমিট দিয়ে আপনি ইংল্যান্ডে বসবাস করতে পারবেন না। ইংল্যান্ডে ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য।

ইংল্যান্ডে ভিসা আবেদনের জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন

  • পাসপোর্ট ও  ফটোগ্রাফ
  • CV, মোটিভেশন ও রেফারেন্স
  • সকল মার্কশিট ও সনদ
  • No Objection  Certificate [শেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে]
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার ও টিউশন ফি প্রদানের রশিদ
  • ব্যাংক সলভেন্সি পেপার
  • পুলিশ ক্লিয়ারান্স ও হেলথ ইন্স্যুরেন্স ডকুমেন্টস
  • IELTS (আেইইএলটিএস) এর সার্টিফিকেট।
  • মেডিকেল চেক আপ রিপোর্ট

ইংল্যান্ডে স্কলারশিপ 

ইংল্যান্ডে পড়াশুনার খরচ বেশি হলেও এখানে অনেক ধরণের স্কলারশিপেরও সুযোগ আছে। সরকারি স্কলারশিপের পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রাম। বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েব সাইটেই পেয়ে যাবেন বিভিন্ন স্কলারশিপের খবর।

ইংল্যান্ডে পার্ট টাইম জব

আপনি চাইলে ইংল্যান্ডে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম কাজ করতে পারেন। সপ্তাহে ২০ ঘন্টা কাজ করার সুযোগ পাবেন। ছুঁটিতে থাকলে ফুল টাইমও করতে পারবেন। ইউকে গভার্মেন্ট বর্তমানে স্টুডেন্টদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে। যা তারা আগে দিতো না।

ইংল্যান্ডে প্রতিদিনের খরচ

ইংল্যান্ডে প্রতিদিনের খরচ কত হবে তা নির্ভর করছে কোন এলাকায় বসবাস করছেন তার উপর। একেক এলাকায় আবাসিক ব্যবস্থা থাকা খাওয়ার খরচ একেক রকম। আপনি চাইলে সমস্ত প্রয়োজন ৪০০–৫০০ পাউন্ডের ভেতর মেটাতে পারবেন। যদি উচ্চাকাঙ্খি আর বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে যান, তাহলে আপনার খরচ বেশি পড়বে।

ইংল্যান্ডে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

আপনি চাইলে ইংল্যান্ডে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার সুযোগ পাবেন। এর জন্য আপনাকে আগে বৈধভাবে ৮-১০ বছর ইংল্যান্ডে থাকতে হবে। তারপর PR এর জন্য আবেদন করতে হবে। ২০২১ সাল থেকে PR সংক্রান্ত নীতিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে।

আপনি যদি ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন, তাহলে ২ বছর মেয়াদী Post Study Work (PSW) ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

যদি ইংল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি কমপ্লিট করতে পারেন, তাহলে ৩ বছর মেয়াদী PSW ভিসা পাবেন। এ সময়ের মধ্যে যদি কোন কারণে জব ম্যানেজ করতে না পারেন তাহলে ইচ্ছে করলে আপনি নতুন কোন কোর্সে পড়ে ডবল ডিগ্রি অর্জন করতে পারবেন। পরবর্তীতে আবার আপনাকে PSW ভিসায় আবেদন করতে হবে।

আপনি যদি চান, তাহলে বেটার-হাফ (স্বামী অথবা স্ত্রী)-কে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসতে পারবেন। স্বাউস এলে যেকোন জায়গায় ফুল টাইম কাজ করার সুযোগ পাবেন।

সতর্কতা

ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তী ও ভিসার আবেদনের প্রক্রিয়া সময়ের সাথে সাথে কিছু নিয়মের পরিবর্তন হয়। উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে যেতে চাইলে সর্বশেষ সংযোজিত তথ্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও এম্বেসির অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে যোগাযোগ করুন। প্রতারকচক্র থেকে সাবধান থাকুন।

শেষ কথা

আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা উত্তর দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। এছাড়াও যে কোন প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *