ইমাম হওয়ার শর্ত কি

ইমাম হওয়ার শর্ত কি? কি কারণে ইমাম বদলানো যায়

কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইমাম হওয়ার শর্ত কি কি? ইমামতির অধিক হকদার কে ? বা নামাযের ইমামতি করার নিয়ম কি?
ইত্যাদি বিষয়ে রেফারেন্সসহ বর্ণনা তুলে ধরার চেষ্ঠা করছি।

ইমাম হওয়ার জন্য অনেক শর্ত-শারায়িত উল্লেখ রয়েছে। তবে যেসব শর্ত না হলে কারো জন্য মসজিদের ইমাম হওয়া কিংবা ইমাম নিয়োগ দেয়া উচিত নয় তা হচ্ছে-

  • কোরআন তেলাওয়াত বিশুদ্ধ হওয়া।
  • ইমাম হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মাসয়ালা-মাসায়িল জানা এবং ক্বলবী ইলম তথা ইলমে তাছাওউফ অর্জনের উদ্দেশ্যে কোশেশে নিয়োজিত থাকা,
  • সম্মানিত সুন্নত উনার পাবন্দ হওয়া,
  • ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ তরক না করা,
  • বেপর্দা না হওয়া,
  • হালাল-হারাম তমিজকারী হওয়া,
  • আক্বীদা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত উনাদের অনুযায়ী হওয়া ইত্যাদি।

ইমাম হওয়ার শর্ত সমূহ

১. মুসলমান হওয়া।

২. বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।

৩. আকল বা জ্ঞানবুদ্ধির অধিকারী হওয়া।

৪. পুরুষ হওয়া।

৫. শুদ্ধ করে কুরআন পড়তে সক্ষম হওয়া।

৬. খুব বেশি অসুস্থতা ও নামাজের ইমামতি শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিম্নোল্লিখিত শর্তগুলো বিদ্যমান থাকা আবশ্যক—

পুরুষ হওয়া, মুসলমান হওয়া, বালেগ হওয়া। নাবালকের ইমামতি শুদ্ধ নয়। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৬০৬৯)

বুদ্ধিসম্পন্ন হওয়া। পাগলের ইমামতি শুদ্ধ নয়, নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কেরাত পড়তে সক্ষম হওয়া। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য যতটুকু কেরাত পড়া প্রয়োজন, ততটুকু পড়তে সক্ষম নয়, ওই ব্যক্তির ইমামতি শুদ্ধ নয়। (তিরমিজি : ১৯১)

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার যতগুলো শর্ত আছে, তার মধ্য থেকে যদি শুধু একটি শর্তও পাওয়া না যায়, তাহলে তার ইমামতি শুদ্ধ হবে না। নামাজ সহিহ হওয়ার শর্ত যেমন—পবিত্রতা, সতর ঢাকা ইত্যাদি। আর যার নামাজই হবে না, তার ইমামতির প্রশ্নই আসে না।

ওজর তথা যাবতীয় অপারগতামুক্ত হওয়া। যেমন—নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়া, প্রস্রাব ঝরা, সর্বক্ষণ বায়ু নির্গত হওয়া ইত্যাদি। (বাদায়ে : ২/৫৪)

ইমামতির জন্য কে বেশি হকদার?

উপস্থিত লোকদের মধ্যে যদি বাদশাহ, নায়েব, মহল্লার ইমাম এবং ঘরের মালিক না থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তিই বেশি হকদার, যিনি নামাজে শুদ্ধ ও অশুদ্ধ হওয়া সম্পর্কে মাসআলাগুলোর জ্ঞান রাখেন, এরপর হাফেজ, যিনি নামাজের আহকাম সম্পর্কে জানেন, এরপর মুত্তাকি ব্যক্তি, এরপর বয়স হিসেবে যিনি বড়। যদি সবাই এই গুণাবলিতে সমান হন, তাহলে তাঁদের থেকে যাঁকে নির্বাচন করা হয়, তিনিই ইমামতির হকদার। (সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৩৭)

যাদের ইমাম হওয়া মাকরুহ

ফাসেকের ইমামতি মাকরুহ (ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে অপছন্দনীয়)। (দারে কুতনি : ১৩২৮)
বিদআতির ইমামতি মাকরুহ। (ইবনে মাজাহ ৪৯, দারে কুতনি ১৭৮৫)
অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি মাকরুহ। তবে তিনি যদি উপস্থিত সবার মধ্যে উত্তম ও বেশি যোগ্য হন, তাহলে সমস্যা নেই। (ইবনে আবি শায়বা ২/২১৫, সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৭)
আলেমের উপস্থিতিতে ধর্মীয় জ্ঞানহীন ব্যক্তির ইমামতি মাকরুহ। (মুসনাদুল ফিরদাউস ১/৩৯১)
এমন লোকের ইমামতি মাকরুহ, যার ব্যক্তিগত বিভিন্ন দুর্বলতার কারণে লোকেরা তাকে অপছন্দ করে। (তিরমিজি : ৩২৬)
সুন্নাতসম্মত পরিমাণ থেকে নামাজকে দীর্ঘ করা মাকরুহ। (নাসায়ি : ৮১৪)

ঘরে বসে অনলাইনে ইসলামিক স্টাডিজ বেসিক কোর্স করুন ও নিয়ে নিন ১০০০+ ইসলামিক বই। রেজিস্ট্রেশ করুন এখনি…

আরও পড়ুন: জুমআর দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত

আশা করি উপরে আলোচনাটি সচেতন পাঠকের জ্ঞানের খোরাক মেটাতে সামান্য হলেও কাজে লাগবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

তথ্য সূত্র:

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *