Shebaru

 

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ লাভের সুযোগ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। যদিও বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের কানাডা-আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার প্রতি বেশি ঝোঁক।

কিন্ত প্রচুর পড়াশোনার খরচের কারণে অনেকে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। কারণ এখানে পড়াশোনর খরচ তুলনামূলক কম। আবার শিক্ষা লাভের পর মালয়েশিয়াসহ ইউরোপ-আমেরিকা ও কানাডায় চাকুরী পাওয়া তুলনামূলক সহজ হয়। এই প্রবন্ধে মালয়েশিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা, মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা চেক করার নিয়ম, মালয়েশিয়া স্কলারশিপ, পড়াশোনার খরচ পার্টটাইম জব ফ্যাসিলিটি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

এক নজরে মালয়েশিয়া ও এখানে পড়াশেনা

বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ৩৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত একটি উন্নত দেশের নাম মালয়েশিয়া। এর রাজধানীর নাম কুয়ালালামপুর। বিমানে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর যেতে প্রায় ৩.৫ ঘন্টা সময় লাগে। মালয়েশিয়ার মুদ্রার নাম রিঙ্গিত। এক রিঙ্গিতে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২৯ টাকা (২০২৫) হয়। এর আয়তন ৩,২৯,৭৫৮ বর্গ কিমি যা বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় তিনগুন প্রশস্ত। আর লোক সংখ্যা মাত্র তিন কোটির মত।

মালয়েশিয়া পর্যটন কেন্দ্রিক দেশ। এটি এশিয়ার ইউরোপ’ খ্যাতি অর্জন করেছে। এখানে রয়েছে প্রচুর পার্ট টাইম ও ফুল টাম জবের সুযোগ। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে উচ্চশিক্ষা অর্জন করছে ১৩২ দেশের প্রায় ১,৫০,০০০ বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী। বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি এশিয়ার মধ্যে প্রথম পছন্দের স্থান। কারণ বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৩.৫ ঘন্টার প্লেন ভ্রমনে চলে যাওয়া যায় মালয়েশিয়া। 

কোন কোন ক্লাশে ভর্তি হওয়া যায়?

 

মালয়েশিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা ৪টি পর্যায়ে ভাগ করা হয় নিচে ক্রম অনুসারে দেওয়া হল,

  • স্কুল ভর্তি: প্লে থেকে  যে কোন ক্লাশে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • ফাউন্ডেশন প্রোগাম: ১ বছর সময় লাগে। 
  • ডিপ্লোমা কোর্স: এটি ২ থেকে ৩ বৎসর সময় লাগে।
  • আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্স: এটি ৩ থেকে ৫ বৎসর মেয়াদী।
  • পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী: ১.৫ থেকে ২ বৎসর মেয়াদী।
  • ডক্টরাল (PhD) ডিগ্রি: ৩-৫ বৎসর মেয়াদী।

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা কখন সেমিস্টার শুরু হয়?

মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা সেমিস্টার ভিত্তিক । প্রতি শিক্ষাবর্ষ সাধারণত ৩ টি সেমিস্টারে বিভক্ত। সেগুলো হচ্ছে,

১ম সেমিস্টার : জানুয়ারি-এপ্রিল।

২য় সেমিস্টার : মে-আগষ্ট।

৩য় সেমিস্টার : সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর।

তবে কোন বিশ্ববিদ্যালয় জানুয়ারিত সেমিস্টার শুরু হয়। আবার কোনটি মার্চে সেমিস্টার শুরু হয়। মোট কথা একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্প্রিং সেমিস্টার একেকে সময়ে আরম্ভ হয়।

কেন মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা করবেন?

যেহেতু মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা যেহেতু ইচ্ছা হলেই বাংলাদেশে খুব সহজেই চলে আসা যায়। এছাড়াও মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার মান খুবই উন্নত। মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা

মালয়েশিয়া থেকে লেখাপড়া করে পৃথিবীর যেকোন দেশে চাকুরী অথবা পরবর্তী পর্যায়ের পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও নিন্মক্ত শুবিধাগুলো তো আছেনই,

  • UNESCO এর জরিপে মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা বিশ্বের ৯ম তম ‘Preferable Destination For Higher Studies’.
  • এখানে পড়াশোনা, থাকা খাওয়ার খরচ খুব কম।
  •  মুসলিম দেশ হওয়ায় হালাল খাবার ও ধর্ম পালন সহজ হয়।
  • মালয়েশিয়ায় জীবন যাত্রার মান খুবই উন্নত।
  •  প্রায় সারা বছরই একই রকম আবহাওয়া থাকে। তবে বৃস্টি কাল শুরু হয় সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ।
  • মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসার নিশ্চয়তা ৯৯%। যদি ডকুমেন্ট সঠিক থাকে।

 

মালয়েশিয়ার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ

 

মালয়েশিয়ায় রয়েছে অনেক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ। এ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পৃথিবীর উন্নত বিশ্বের নামি দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত। আর এ জন্যই মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশিদের জন্য ১ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। তবে বাংলাদেশী শিক্ষার্থিদের জন্য মালয়েশিয়ার সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার খরচ প্রায় একই। মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কম খরচে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। যেটি বাংলাদেশী কিংবা অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নেই। সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি তালিকা নিচে প্রদান করা হল, যে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সাধারণত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়,

1.University of Malaya (UM)

2. University of Technology, Malaysia, (UTM)

3.ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া (IIUM)

4. University Putra Malaysia (UPM)

5. University Kebangsaan Malaysia (UTM)

মালয়েশিয়ার বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ

 

বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সাথে মালয়েশিয়ার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর তুলনা করা যায়। কারণ এখানকার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলো কিউ এস ওয়ার্ল্ড রেককিং এ খুব ভালো অবস্থানে আছে। এক থেকে ৫০০ এর মধ্যে প্রায় ৩০ টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যা পৃথিবীর খুব কম দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ই অর্জন করতে পেরেছে। তাই বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ থেকে মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা নেওয়ার জন্য পারি জমাচ্ছে। এমনকি চায়নার মত উন্নত দেশ থেকেও শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা করতে আসছে। কারণ মালয়েশিয়ার ভালো পড়াশোনা ও পড়ার মাধ্যম ইংরেজী। নিচে মালয়েশিয়ার সবচেয়ে ভালো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলির একটি তালিকা ও লিংক প্রদান করা হল। (লিংকে ক্লিক করলে সংশ্লিষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পাবেন।)

1. Limkokwing University (লিমককউইং ইউনিভার্সিটি)

2. UCSI (ইউসিএসআই)

3. INTI (ইনটি)

4. Taylor’s University (টেইলর ইউনিভার্সিটি)

5. MAHSA University (মাশা বিশ্ববিদ্যালয়)

6. SEGI (সেগি ইউনিভার্সিটি),

7. MULTIMEDIA University (মাল্টিমিডিয়া)

8. Asia Pacific University of Technology (APU)

9. NILAI University (নীলা),

10. KAGC College

11. Curtin University

12. Infrastructure University (ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইউনিভার্সিটি)

13. City University (সিটি ইউনিভার্সিটি)

14. INTI International University

15. Asia Metropolitan University (AMU)

16. IHM College Malaysia

17. KDU (কেডি ইউ)

18. Manipal International University (মানিপাল)।   

এছাড়াও আরো মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় আছে যে গুলোতে বেশি বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী যায় না। তাই সে গুলো নাম উল্লেখ করা করা হয় নি।

 

যে সকল সাবজেক্টে ভর্তি হওয়া যাবে

 

সাবজেক্ট পছন্দ করা সত্যিই একটি কঠিন কাজ। কারণ এর উপরই নির্ভর করে শিক্ষার্থীর কর্ম জীবন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সকল সাবজেক্ট সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করা হল। এখান থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের সাবজেক্ট। এখানে ভর্তির বেশকিছু নিয়ম আছে তবে, মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা এখানে ভর্তির জন্য বাংলাদের মত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষা দেওয়া লাগে না। তবে রেজাল্টের ভিত্তিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকে চান্স পায়। আবার অনেকে চান্স পায় না। কোন কোন সাবজেক্টে ভর্তির জন্য এইচ এস সি তে বা এ লেভেলের নির্দিষ্ট বিষয়ের রেজাল্ট চাওয়া হয়। চাহিদার চেয়ে কম হলে ভর্তির সুযোগ থাকে না। নিচে মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য সাবজেক্ট সমূহের লিস্ট দেওয়া হল।

বিজনেস ম্যানেজমেন্ট

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং,

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং

ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং

হেলথ টেকনোলজি

বিবিএ

ডেন্টাল

হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট

সমাজ বিজ্ঞান

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা

আইন

ইংরেজি

মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং

মেডিসিন বা এম বি বি এস

বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন

এছাড়াও আরও ৪৫+ সাবজেক্টে মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। 

 

মালয়েশিয়ায় স্কলারশিপ লাভের সুযোগ পাবেন কিভাবে?

 

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য নানা ধরনের স্কলারশিপের ব্যবস্থা আছে। তবে স্কলারশিপ লাভের জন্য খুব ভালো একাডেমিক রেজাল্ট থাকতে হয়। এবং ইংরেজিতে ভালো দক্ষতার প্রমাণ দিতে হয়। খারাপ রেজাল্ট নিয়ে স্কলারশিপের জন্য শুধু শুধু প্রচেষ্টা করে লাভ নেই। তবে ফুল স্কলারশিপ না পেলেও আংশিক স্কলারশিপের সুযোগ আছে। নিচে মালয়েশিয়ায় পড়ালেখার জন্য যে সকল প্রতিষ্ঠান বৃত্তি দিয়ে থাকে তার একটি তালিকা দেওয়া হল-

  • মালয়েশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপ: (Malaysian International Scholarship (MIS)
  • কমোনওয়েল্থ স্কলারশিপ: (COMMONWEALTH Scholarship and Fellowship plan (CSFP)।
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ট: Example: Nilai University Offering 50% scholarship
  • UCSI University offering 45% scholarship, Xiamen University70%, Manipal university, Mahsa University, KDU offering 30% এছাড়াও গবেষণা সহযোগী (Research Assistance ship) লাভ করা যায়।

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা কি?

 

  • স্কুলিং: প্লে থেকে টুয়েল্ভ ক্লাশ পর্যন্ত বয়স অনুযায়ী ভাইভার মাধ্যমে ভর্তি হওয়া যায়।
  • ফাউন্ডেশন কোর্স: এস. এস. সি (মাধ্যমিক), পাশ হতে হয়। রেজাল্ট তেমন ভেরি করে না। পাশ করলেই ভর্তি হওয়া যায়। 
  • ডিপ্লোমা কোর্স: ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য নূনতম মাধ্যমিক (এস.এস.সি) সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়।
  • আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্স: আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কোর্সের জন্য ন্যূনতম ১২ বৎসরের পুরাতন শিক্ষা অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের শিক্ষা। রেজাল্ট ২.৫ এর উপরে থাকলেই হয়। 
  • পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি: পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে জন্য (অনার্স বা সমমান) ব্যাচেলর ডিগ্রী থাকতে হয়।
  • ডক্টরাল (PhD) ডিগ্রী: ডক্টরাল (PhD) কোর্সের জন্য পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী ।

ভাষা যোগ্যতা কেমন লাগে?

মালয়েশিয়ায় আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পড়াশুনার জন্য বিদেশী শিক্ষার্থীদের ইংরেজী ভাষার নিম্নোক্ত যে কোন একটি যোগ্যতা থাকতে হবে। তবে আই.ই.এল টিএস বা অন্য কোন ভাষার সার্টিফিকেট ছাড়ও ভিসা হয়। 

 

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জন্য কি কি ডকুমেন্টস লাগবে?

 

যে কোন কোর্সে ভর্তির জন্য সকল সার্টিফিকেট ও মার্কসিট লাগে। সেই সাথে পাসপোর্ট ও ছবি প্রয়োজন হয়। নিচে একটি ডকুমেন্টস এর তালিকা দেওয়া হল। তবে সময় সময় এগুলো ভেরি করে বা আপডেট হয়।

  • পাসপোর্ট ইনফরমেশন পেজের ছবি/ কপি ও পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • ছবি। 
  • সকল একাডেমিক সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্ট।
  • এম.এস. ও পিএইচডি এর জন্য সিভি, মোটিভেশনাল লেটার ও রিকমেন্ডেশন লেটার।
  • IELTS সার্টিফিকেটের কপি/ এম.ও.আই/ডুয়েলিঙ্গ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে।

মালয়েশিয়া ইউনিভার্সিটি ও কলেজ ভর্তির ধাপ সমূহ

 

মালয়েশিয়ার এ্যডমিশন এবং ভিসা সিস্টেম অন্যান্য দেশের ভর্তি এবং ভিসা সিস্টেম থেকে একটু আলাদা। তবে অনেক বেশী সহজ। ইউনিভার্সিটি বা কলেজ থেকে অফার লেটার নিয়ে পরবর্তীতে ভিসার জন্য ইএমজিএস ফি দিতে হয়। EMGS (Education Malaysia Global Services) এর নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে অনেক দ্রুত ভিসা প্রসেস করা স্বম্ভব। মালয়েশিয়ার ভিসা প্রসেসিং এ আরো একটি সুবিধা হচ্ছে Student Visa Approved হওয়ার পরে টিউশন ফি কেলজ / ইউনিভার্সিটিকে দিতে হয়। এর কারনে মালয়েশিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেস করা খুবই নিরাপদ।

ঘরে বসে ভিসা চেক করার নিয়ম

মালয়েশিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা চেক করার জন্য ই.এম.জিএস. EMGS (Education Malaysia Global Services) এর ওয়েব সাইটে ভিজিট করুন। আর হাঁ, এর জন্য কিন্তু আপনাকে মালয়েশিয়ান এ্যাম্বাসীতে যেতে হবে না। ঘরে বসেই ভিসা চেক করতে পারবেন। শুধু প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট কানেকশন। ল্যাপটপ কিংবা ডেক্সটপেরও প্রয়োজন নেই। মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ভিসা চেক করতে পারবেন। তবে এটি করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পাওয়ার পর। এবং ই.এম.জিএস. ফি দেওয়ার ৩ থেকে ১ সম্পাহ পর। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ফি জমা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় সে ফি টি ই.এম.জিএস. কর্তৃপক্ষের কাছে পেীঁছাতে একটু সময় নেয়। যাই হোক ঘরে বসে স্টুডেন্ট ভিসা চেক করার লিংক পেতে এখানে ক্লিক করুন।

মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার খরচ কত?

মালয়েশিয়ায় লেখাপড়া করার সবথেকে সুবিধা হচ্ছে, মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার খরচ উন্নত দেশের ইউনিভার্সিটি বা কলেজ থেকে অনেক কম। ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা তে এক বা দুই বছরে টিউশন ফি দিয়ে মালয়েশিয়া সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করা যাবে। কিন্তু সার্টিফিকেট এবং লেখাপড়ার মান কোন অংশেই ঐসব ইউনিভার্সিটি থেকে কম নয়। মালয়েশিয়া সরকারী বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে টিউশন ফি ৮৮২১ মার্কিন ডলার থেকে ১৭৬৪২ ডলার (সর্বমোট)।মাস্টার্স পর্যায়ে খরচ পড়বে ৫৫৮৬ মার্কিন ডলার থেকে ১০২৯১ মার্কিন ডলার (সর্বমোট)। ডক্টরেট ডিগ্রী গবেষনার জন্য খরচ পড়বে ৮৮২১ মার্কিন ডলার থেকে ১০২৯১ মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ায় একজন বিদেশী ছাত্র/ছাত্রীর জীবন যাত্রার বাৎসরিক ব্যয় ২৭০০ থেকে ৩০০০ মার্কিন ডলার।

মালয়েশিয়ায় পার্টটাইম জব করা যায় কি?

এখানে পড়াশোনা করা অবস্থায় একজন বিদেশী শিক্ষার্থী তার পূর্ণকালীন (Full Time) শিক্ষা শুরু করার পর কাজের জন্য সাধারনত অনুমতি পায় না। তবে প্রায় শিক্ষর্থীরা বিশেষত যারা বাংলাদেশ থেকে পড়াতে যায় তারা পার্ট টাইম জব করে। কারণ অন্য আইনের মত এই বিষয় ততটা কড়াকড়ি করে না  মালয়েশিয়ার কতৃপক্ষ।এ ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম হতে পারে সবচেয়ে উপযুক্ত।

যে বিষয় গুলো মাথায় রাখবেন

মালয়েশিয়া কিংবা যে কোন দেশে পড়তে যান না কেন আপনার লেখা পড়ার যোগ্যতা, অর্থনৈতিক সামর্থ্য, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী কোর্স ও ইউনিভার্সিটি সিলেক্ট নির্বাচন করুন। ফ্লাই করার পূর্বে মালয়েশিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা ও তথ্য নিন। প্রয়োজনে একটি ডাইরী কিনে তাতে মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য যাবতীয় তথ্য যখন যেখানে পাবেন তা লিখে রাখুন। এতে করে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর স্টুডেন্টকে কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। অন্যের কাছে তথ্য জানার আগে গবেষণা করে আপনার জন্য পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্ধারণ করুন। তাহলে মঙ্গল আপনা্রই হবে।

কোথায় সহোযোগিতা পাবেন: 

বর্তমানে বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে সহযোগিতা করছে। তবে অনেকেই স্টুডেন্টদের সাথে নানা ধরনের প্রতারণা করে থাকে। আবার ভালো প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তা না হলে তো এত বাংলাদেশী শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে যাওয়ার সুযোগ হয়তো পেতো না। পেলেও সংখ্যায় কম হত। তাই দেশে শুনে সিদ্ধান্ত নিন। সেবারুর মাধ্যমে সরাসরি বিশ্ববিদ্যায় প্রতিনিধির সাথে কথা বলেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। 

শেষ কথা

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পড়াশোনার মান উন্নত হওয়ায় ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডা মালয়েশিয়ান ডিগ্রি গুলো গ্রহন করে থাকে। শুধু তাই নয়, মালয়েশিয়ায় পড়াশুনার খরচ ও থাকা খাওয়ার খরচ তুলনামূলক অনেক কম। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মত। দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়াশোনার যেমন খরচ হয় মালয়েশিয়ায় প্রায় একই রকম খরচ হয়। সর্বপরি বলা যায় বাংলাদেশের সাথে মালয়েশিয়ার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মিল থাকায় প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া পাড়ি জমাচ্ছে।

ট্যাগসমূহ: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা, মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৫,  malaysia student visa cost, মালয়েশিয়ায় ডিপ্লোমা কোর্স, ছাত্রদের জন্য মালয়েশিয়ায় পার্টটাইম জব, মালয়েশিয়া স্কলারশিপ, মালয়েশিয়ায় ডিপ্লোমা কোর্স, Study in Malaysia from Bangladesh।

Scroll to Top