আউটসোর্সিং কিভাবে শিখব এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় প্রায় মানুষের। কারন বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে
আপনাকে জানতে হবে তার আধুনিক উপায় এবং তার ব্যবহার। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাব
কিভাবে আউটসোসিং শিখবেন তার উপায়গুলো সম্পর্কে। তবে তার আগে আপনি কি জানেন আউটসোসিং কি?
আউটসোসিং বলতে কি বুঝ এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই আউটসোসিং আর ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে গন্ডোগোল করে ফেলি
। আউটসোসিং হল একটি কোম্পানি যখন তার কাজ রেগুলার কর্মকর্তা দিয়ে না করে বাহিরের কাউকে দিয়ে করায় তবে
তাকে আউটসোসিং বলে। আর যে ব্যক্তি সেই কাজ করে তাকে ফ্রিল্যান্সার বলে। আর ফ্রিল্যান্সারের এই পেশাকে
ফ্রিল্যান্সিং রুপে জানা যায়। চলুন জেনে নেই আউটসোর্সিং কিভাবে শিখব তার আদ্যপান্ত সম্পর্কে।
আউটসোসিং কোর্স কি কি?
এবার চলুন জেনে নেই আউটসোসিং কোর্স গুলো সম্পর্কে জেনে নেই। বর্তমানে অসংখ্য কোর্স আছে আউটসোসিং এর
জন্য। তার মধ্যে জনপ্রিয় আর উল্ল্যেখযোগ্য আউটসোসিং কোর্সগুলো হলঃ
- এসইও
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- এফিলিয়েট মার্কেটিং
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ওয়েবসাইট ডিজাইন
- ওয়েবসাইট ডেভোলাপার
- এপ্স তৈরি
- ভিডিও মেকিং
- ভিডিও এডিটিং
- ইমেইল মার্কেটিং
- ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং
- কন্টেন্ট রাইটিং
- এনিমেশন তৈরি
- ডাটা এন্ট্রি
আউটসোসিং শিখার সাইটগুলো কি?
আমরা অনেকেই মুখে মুখে আউটসোসিং সম্পর্কে জানলেও আউটসোসিং সাইট সমন্ধে তেমন জানি না। কোন কিছু শুরু
করতে যেমন সেই বিষয় নিয়ে দক্ষতা লাগে তেমনি জানা লাগা তার প্রয়োগ সম্পর্কেও। আউটসোসিং এর জন্য বিশাল বড়
বাজার তৈরি হয়েছে। কারন বর্তমান বিশ্ব একটি বড় গ্রামে রুপান্তরিত হয়েছে। যেখানে মানুষ সবাই এক কেন্দ্রে আবদ্ধ।
কাজের পরিধি তাই বিশাল।
মার্কেটপ্লেস থেকে সাধারনত অধিকাংশ আউটসোসিং এর কাজ পাওয়া যায়। আর এইসব মার্কেটপ্লেসগুলো সব আন্তর্জাতিক
মানের আর আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচালিত হয়। যার ফলে স্বচ্ছতা থাকে লেনদেন সহ সকল বিষয় নিয়ে। ফাইভার, আপওইয়ার্ক
পিপল পার আওয়ার, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি হল নামকরা মার্কেটপ্লেস যেখান থেকে আপনি সহজেই নির্ভেজালে পেয়ে যাবেন
আপনার পছন্দনীয় কাজ। প্রতিদিন এই সাইটগুলোতে হাজার হাজার কাজর সুযোগ করে দেয়া হয়। আপনি শুধু খোঁজ
করে সব তথ্য যাচাই বাছাই করে নিয়ে নিন আপনার কাজ অনলাইনের মাধ্যমে।
কিভাবে আউটসোসিং শিখা যায়?
আপনার যদি একটি আধুনিক ফোন বা ল্যাপটপ থাকে তবে আপনি অনায়াসে শিখতে পারবেন আউটসোসিং। এর সাথে
আপনার প্রয়োজন পড়বে ইন্টারনেট সংযোগের। যার সাহায্য নিয়ে আপনি নিজে অনলাইনে সার্চ দিয়ে বা প্রশিক্ষকের
সাহায্য নিয়ে গড়ে তুলতে পারেন আপনার আউটসোসিং ক্যারিয়ার। তবে আপনাকে একই সাথে ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্ট
এর সাথে যোগাযোগের জন্য ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। না হইয় যোগ্যতা থাকা স্বত্তেও আপনি এই কাজে সফল হতে
পারবেন না।
আউটসোসিং নিয়োগ প্রক্রিয়া কিভাবে হয়?
যখনই আপনি আউটসোসিং এর কাজ খুঁজতে যাবেন প্রায় আপনি দিশেহারা হয়ে উঠবেন কিভাবে আউটসোসিং নিয়োগ
প্রক্রিয়া হয় তা নিয়ে। আসুন এইবার জেনে নেই কিভাবে এর নিয়োগ হয়। যখনই আপনার কোন প্রতিষ্ঠানের কিছু কাজের
প্রয়োজন হয় তারা নির্দিষ্ট মার্কেটপ্লেসে সকল তথ্যসহ বিজ্ঞাপণ দেয়। তাই আপনার যদি এই কাজে আগ্রহ থাকে তবে
আজই সুন্দর করে তৈরি করুন আপনার পোর্টফলিও। যেখানে আপনাকে তুলে ধরতে হবে আপনার কাজের মুল তথ্য
আর তা দেখেই ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিবে।
নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলো হয় আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী। তাই গ্রাহক আর গ্রহীতা দুই পক্ষই সমান সুবিধা পায়। এর জন্য
আপনাকে অবশ্যই যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে। ইংরেজি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান আপনাকে এই কাজে আরও উপযোগী
করে তুলবে।
আউটসোসিং এর গুরুত্ব
আজকের এই আধুনিক বিশ্বে সবচেয়ে যদি আপনি জানতে চান সবচেয়ে জনপ্রিয় আয়ের উৎস কি? তবে একটি উত্তর পাবেন
, তা হল আউটসোসিং। আর এই আউটসোসিং এর সাথে জড়িয়ে আছে ফ্রিল্যান্সিং। মুক্তপেশায় মানুষ আজকাল কাজে বেশ
আগ্রহী। এতে যেমন কাজের স্বকীয়তা প্রকাশ পায়, তেমনই ভাবে কাজের মান ও গুণ বৃদ্ধি পায়। ফলে গ্রাহক এই কাজের জন্য
উন্মুক্ত বাজরে আবেদন জানায়। আর ফ্রিল্যান্সাররা তাতে আবেদন করেন। আর বেকারত্ব দূরি করনে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
এই আউটসোসিং দুনিয়ায় বাংলাদেশের স্থান ১ থেকে ৫ এর ভিতর। আর এতেই বুঝা যায় এই কাজের কত প্রসার আর প্রচার
এই পৃথিবীতে। প্রতি বছর হাজার হাজার ডলারের লেনদেন হয় এই মাধ্যমে। যা বিশ্ব বাজারকে করে তুলে আর বর্ণীল। আর কাজের
ক্ষেত্রকে করে তুলছে প্রানবন্ত। আর তাই আউটসোসিং এখন কাজের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
আউটসোসিং থেকে টাকা আয় করে তা কিভাবে তুলবেন?
টাকা উপায়ের জন্য আউটসোসিং সবচেয়ে বিশ্বস্ত মাধ্যম। কারন এখানে ক্রেতা আর বিক্রেতার মধ্যে আর্থিক লেন্দেন অধিকাংশ
সময়ে ডিজিটাল মাধ্যমে হইয়ে থাকে। আর কাজের পূর্বেই আপনি কাজের মান অনুযায়ী পারিশ্রমিক নির্ধারন করতে পারবেন।
আপনি যদি বাহিরের দেশের ক্লায়েন্ট এর কাজ করেন তবে নূন্যতম মজুরি পাবেন ৫ ডলার থেকে। কাজের মানের উপর আপনি
দাম বৃদ্ধি করতে পারবেন। আর এর জন্য আপনাকে থাকতে হবে আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ড। যার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে
বিশ্বের যেকোন জায়গার কাজ করে ঘরে বসেই টাকা আয় করতে পারবেন। আর তুলতে পারবেন অতি সহজেই। লোকাল
ক্লায়েন্ট আপনাকে টাকা দিবে ব্যাংক বা ডিজিটাল মাধ্যম নগদ, বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে। তাই নিশ্চিন্তে আপনি যোগ
দিন আউটসোসিং থেকে।
আউটসোসিং বাংলাদেশ এর আয়ের নতুন উৎস
আজকের এই ২০২২ সালে এসে আপনি যদি তাকান বাংলাদেশের অর্থনীতির দিকে তবে জানবেন কি অমূল পরিবর্তন এসেছে।
আগে বেকারত্ব দূর করণে সরকার অন্যান্য মাধ্যমকে তুলে ধরত। কিন্তু এখন এই আউটসোসিং থেকে আয় আর পরিধির কারনে
সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বিপুল জনগোষ্ঠিকে আউটসোসিং সম্পর্কে কর্মক্ষম করে তুলতে। আর এরই ফলে গড়ে তুলেছে
আইটি হাব। যার মাধ্যমে হাজার হাজার যুবকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আর আধুনিক বাংলাদেশ গড়ায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে।
একটি পরিসংখানে দেখা যায় প্রায় ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার প্রতি বছর ১০ কোটি ডলার আয় করে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায়প্রায় ৮৫০
টাকা(দৈনিক যুগান্তর) । এই পরিসংখ্যান থেকে আপনি বুঝতে পারছেন কিভাবে আউটসোসিং আমাদের অর্থনীতিতে ভূমিকা
রাখছে। আরও যদি সরকারি এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চান তবে দেখুনলার্নিং এন্ড আর্নিং সাইটটি। যেখানে আপনি ফ্রিতে
আউটসোসিং শিখতে ও জানতে পারবেন।
আউটসোসিং নীতিমালা
বাংলাদেশ সরকার আউটসোসিং নিয়ে একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে। যার নাম আউটসোর্সিং (Outsourcing) প্রক্রিয়ায়
সেবাগ্রহণ নীতিমালা-২০১৮। উক্ত নীতিমালা একটি গাইড লাইন স্বরূপ। যা দ্বারা আপনি জানতে পারবেন আউটসোসিং এর
জন্য যাবতীয়তথ্যাবলী। এই নীতিমালার আলোকে আপনি গড়ে নিতে পারেন আউটসোসিং এ আপনার অনাবিল সুন্দর ভবিষৎ।
সঠিক এই গাইড লাইনটি পড়ুন আর আজই গড়ে তুলুন আপনার আউটসোসিং এ আপনার ক্যারিয়ার।
তাই আর দেরি না করে আজই শিখুন আউটসোসিং সরকারি বা বেসরকারিভাবে। নিজের ভয় দূর করুন আউটসোর্সিং কিভাবে শিখব
তা থেকে। আর নিজের উজ্জ্বল ভবিষৎ গড়ে দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করুন। এছাড়া আউটসোসিং এর আরও
কাজের সম্পর্কে জানতে দেখুন আমাদের এই সংক্রান্ত্র আর্টিকেল।
১। অনলাইন টাইপিং জব করে মাসে লাখ টাকা আয় করার সহজ উপায়
২। প্রতিদিন ৫০০ টাকা অনলাইনে ইনকাম করুন!
আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানান আমাদের কমেন্ট সেকশনে। আর নতুন কি বিষয় নিয়ে জানতে চান তাও জানাতে পারেন।
আল্লাহ হাফেজ, আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
আরও কোন জানার থাকলে দয়া করে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারলে খুশি হব। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
যোগাযোগঃ সেবারু,২/৪ ব্লক-জি,লালমাটিয়া,ঢাকা-১২০৭,বাংলাদেশ।০১৭১১-৯৮১০৫১,০১৮৯৭৯৮৪৪২০,০১৮৯৭৯৮৪৪২১।