বর্তমান বিশ্বকে এক কথায় বলা হয় ডিজিটল যুগের পৃথিবী। যেখানে মানুষ পরোপুরি ইন্টারনেট এর উপর নির্ভরশীল। আর তাই
আমাদের কাজের ক্ষেত্রের প্রায় সব কিছুই এর উপর নির্ভর। আর ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশ তারই একটি চমৎকার উদাহরন।
ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশ এর আয়ের অন্যতম উৎস হতে চলেছে দিন দিন। আর তাই আমরা আজকে জানব ২০২৩ এ ফ্রিল্যান্সিং
এ বাংলাদেশের চিত্র সম্পর্কে কিছু তথ্য সম্পর্কে।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের যাত্রা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি দীর্ঘ নয়। তবে বাংলাদেশের সাফল্য এই ক্ষেত্রে অন্যন্য। আন্তর্জাতিক
সংস্থা অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিউটের এর মতে ২০২৯ সালে ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান ২য়। আর ভারত ১ম ফ্রিল্যান্সিং
এর জন্য। আর এই তথ্য থেকেই আপনি বুঝতে পারছেন বাংলাদেশের অবস্থান কেমন আজকের মুক্তপেশার দুনিয়ায়। আর তাই
সরকারি ও বেসরকারি নানা উদ্যোগ এই সেক্টরকে আরও বৃদ্ধি করছে সবার কাজের জন্য।
আর সরকার প্রতিনিয়ত ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। আর তারই বহিঃপ্রকাশ হল তাদের নিজস্ব আইডি ও
প্রনোদনার সুবিধা। এছাড়াও পাইওনিয়ারের মাধ্যমে বিকাশে টাকা আনা সরকারের বিশেষ উদ্যোগ।
ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট কি?
যখনই আপনি কোন কাজ শিখতে যাবেন তার আগে আপনার একটি আইডেন্টিটি লাগে। আর মুক্তপেশার এই ক্ষেত্রে সব অনলাইন
ভিত্তিক হওয়ায় আপনাকে একাউন্টও অনলাইনে করতে হবে। যেখানে আপনার যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে। আর তারই সাথে
থাকে আপনার কাজের দক্ষতার প্রমাণও। তাই যেকেউ ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যুক্ত হতে চাইলে, অবশ্যই তাকে একটি একাউন্ট খুলা
লাগবে কাজ করার জন্য।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলব?
আমাদের প্রায় সবাই কোন না কোন কাজ জানে। তবে তারা অনেকেই জানে না কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলতে হয়। আর
তাই দক্ষতা থাকা স্বত্বেও তারা আয় করতে অক্ষম থাকে। খুব সহজেই যে কেউ এই একাউন্ট খুলতে পারবেন। আপনার ঘরে যদি
ইন্টারনেট থাকে তবে যেকোন মার্কেটপ্লেসে গিয়ে তাদের দেয়া তথ্য পড়ে আপনি এখনই খুলতে পারেন আপনার ফ্রিল্যান্সিং
একাউন্ট।
কোথায় একাউন্ট খুলব ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য?
সারা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অনেকগুলো মার্কেটপ্লেস আছে। আর তাদের অনেকগুলো আন্তর্জাতিক। আবার লোকালও আছে
কয়েকটি।
আপনি চাইলে সব খানে প্রয়োজন অনুযায়ী একাউন্ট খুলতে পারবেন। তার জন্য অবশ্যই আপনাকে সব সঠিক তথ্য দিতে হবে।
না হয় যেকোন সময় আপনার মূল্যবান একাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। জনপ্রিয় করেকটি মার্কেটপ্লেসের নাম হলঃ
- ফাইভার (Fiverr)
- আপওয়ার্ক(Upwork)
- ফ্রিল্যান্সার ডট কম(Freelancer.com)
- পিপল পার আওয়ার(People per hour)
- গুরু ডট কম(Guru.com)
- বিল্যান্সার ডট কম(Blancer.com)
১. ফাইভার
আমদের দেশে লোকপ্রিয় মার্কেটপ্লেসের নাম হল ফাইভার। এখানে কাজ করে প্রায় মোটামুটি সব বাংলাদেশি। একাউন্ট খুলা খুব
সহজ বিধায় এখানে সবাই একাউন্ট খুলে। প্রথমে আপনি ফাইভারের সাইটে যাবেন। তারপর আপনি কোন কাজে দক্ষ তার সিলেক্ট
করে কিছু আগের একাউন্ট চেক করবেন। এতে করে প্রাথমিক কিছু ধারণা পাওয়া যাবে কিভাবে আপনার সাইট তৈরি করবেন তা
সম্পর্কে। এরপর ফাইভারের নিয়ম অনুযায়ী নিজের সব সঠিক তথ্য দিয়ে খুলে ফেলুন আপনার কাজের আইডি। তবে মনে
রাখবেন কাজ পেতে হলে অবশ্যই গিগ দিয়ে তার মার্কেটিং করতে হবে। না হয় কাজ পাবেন না।
২. আপওয়ার্ক
ওডেক্স আর ইল্যান্স যুক্ত হয়ে আপওয়ার্ক গঠিত হয়। বর্তমান দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি কাজের ক্ষেত্র এই মার্কেটপ্লেসটি। তবে নিয়ম
নীতিতে কিছুটা কড়াকড়ি থাকার ফলে বাংলাদেশি অনেক ফ্রিল্যান্সাররা অনীহা প্রকাশ করে এই সাইটে কাজ করার। তবে বড়
বাজেটের কাজ এখানে বেশি। আর অতি দক্ষ না হলে কাজে, এখানে একাউন্ট করেও কাজ পাওয়া যাবে না। ফাইভারের মত
এখানেও গিগ তৈরি করতে হইয়। নিজের সকল তথ্য আর একাউন্ট নাম্বার যোগ করতে হইয়। এছাড়া কিছু স্কিল টেস্ট পরীক্ষাও
দিতে হইয় দক্ষতা প্রমাণের জন্য।
৩. ফ্রিল্যান্সার ডট কম
এই মার্কেটপ্লেসে কাজের ধরন কিছুটা ভিন্ন। যেমনঃ এখানে কাজ পাওয়া যায় ঘন্টা ভিত্তিক, মূল্য ভিত্তিক, এবং প্রতিযোগিতা ভিত্তিক।
এই সাইট বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের কাছে বেশ জনপ্রিয় ফ্রিiল্যান্সিং কাজের জন্য। কারন সুবিধাজনক কাজ খুঁজে তা করা যায়।
আর কাজের ভিন্নতা আর পাওয়ার ধরন আলাদা তাই কাজে উৎসাহ পাওয়া যায়। এখানে একাউন্ট খুলতে প্রথমে তাদের সাইটে
গিয়ে তাদের নিয়মগুলো আগে ভালোভাবে পড়ে নিন। তারপর আপনার তথ্যগুলো দিয়ে ফর্ম পূরণ করুন। আর বুঝতে অসুবিধা
হলে অবশ্যই অন্য কারো আইডি চেক করে নিবেন।
৪. পিপল পার আওয়ার
যাত্রা শুরু থেকেই পিপল পার আওয়ার বেশ সমাদৃত বায়ার আর ফ্রিল্যান্সারদের কাছে। এখানে আপনি ঘন্টা ভিত্তিক বা প্রজেক্ট ভিত্তিক
কাজ করতে পারেন। আর সেই অনুসারেই আপনি পেমেন্ট পাবেন। অনেকের কাছে খুবই লোকপ্রিয় ঘন্টা ভিত্তিক কাজ। এতে
ভালো পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। আর এখানেও আপনার সব দক্ষতার প্রমাণ , নাম, ছবি আর আইডি ভ্যারিফিকেশন করে একাউন্ট
খুলা লাগবে।
৫. গুরু ডট কম
১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে প্রচীন মার্কেটপ্লেস এই গুরু ডট কম সাইটি। এখানে অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া গেলেও, সার্চ
ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও এর কাজ বেশি পাওয়া যায়। আর বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট দেখলে বা রিসার্চ করলে আপনি
জানতে পারবেন এই কাজের কি পরিমার চাহিদা আছে। তাই যারা এই রিলেটেড কাজ করে তাদের জন্য এই সাইট স্বর্গ রাজ্য।
এখানে আর ও একটি বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। আর তা হল একক বা দল ভিত্তিক কাজের সুবিধা। অন্যান্য সাইটের মত
নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে খুলতে পারেন একাউন্ট।
৬. বিল্যান্সার ডট কম
বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য খোলা এই সাইটি সম্পূর্ণ ভাবে অভ্যন্তরিন কাজের জন্য ব্যবহৃত। এখানে বায়ার আর ফ্রিল্যান্সার
সবাই বাংলাদেশি। দেশি কাজের ক্ষেত্র দিন দিন বড় হওয়ায় এই সাইটের সূচনা হয়েছে। আর তাই এখন নতুন যারা তাদের জন্য
এই সাইটে কাজ পাওয়া খুবই সোজা। একাউন্ট খুলে কাজ বুঝে নিন আজই আপনার দক্ষতা অনুসারে।
কিভাবে টাকা তুলবেন ফ্রিল্যান্সিং এর?
ইনকামের পথ সহজ হবার কারনে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে জ্যামিতিক হারে। আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে কাজ করার জন্য
তাই কিছু নিয়ম মানতে হয়। পেপেল, মাস্টারকার্ড , পাইওনিয়ার সহ অন্যান্য কার্ডের সাহায্যে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। আর
এসব কার্ড থাকা খুবই জরুরি ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে চাইলে। এর মধ্যে পাইওনিয়ার কার্ড বানানো সবচেয়ে ভালো। কারন তা
থেকে আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। বাংলাদেশে পেপেল এখনো চালু হয়নি বিধায় তা ব্যবহার করা কঠিন।
কিছুদিন আগে সরকার উদ্যোগী ভূমিকা নিয়ে চুক্তি করে। যার ফলে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার সম্ভব পাইওনিয়ার কার্ডধারী হলে।
তাই অনলাইনে তৈরি করুন পাইওনিয়ার কার্ড। আর ১ সপ্তাহের ভিতরে তারা বাসায় এসে দিয়ে যাবে আপনার কার্ড। আর
চাইলে মাস্টারকার্ড ও ব্যবহার করতে পারেন।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা বছরে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন আয় করে (তথ্য শুত্র প্রথম আলো)।এছারা আমাদের অর্থনৈতিক
মূল ভিত্তি হতে চলেছে এই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর । আর এর জন্য ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশ এর সম্ভাবনা বিশাল। যা সবাইকে আগ্রহী করে
তুলছে এই কাজের প্রতি। তাই দেরি না করে আজই দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিতে যোগ দিন।
ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রি কোর্স !
২০২৩ সালের নতুন বছর উপলক্ষ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রি কোর্স করে ”গ্রুপ ওয়ার্কের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম” করার দারুন সযোগ দিচ্ছে সেবারু ডট কম।
নিচের লিংক এ দেওয়া গুগল ফরমটি ক্লিক করুন এবং পুরণ করুন। আমাদের টিমমেম্বাররা আপনার সাথে যোগাযোগ করে ফ্রি ক্লাশের লিংক দিয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ।
এছাড়া আরও পড়ুন ঘরে বসে আয় করার মাধ্যম এবং ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় নিয়ে বিস্তারিত। আপনার মূল্যবান মতামত জানান আমাদের কমেন্ট বক্সে।
আর সবার আগে সব তথ্য পেতে চোখ রাখুন সেবারু সাইটে।
আরও কোন জানার থাকলে দয়া করে কমেন্ট করুন। আমরা আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারলে খুশি হব। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
যোগাযোগঃ সেবারু,২/৪ ব্লক-জি,লালমাটিয়া,ঢাকা-১২০৭,বাংলাদেশ।০১৭১১-৯৮১০৫১,০১৮৯৭৯৮৪৪২০,০১৮৯৭৯৮৪৪২১।