ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট

ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট

আজকের ডিজিটাল বিশ্বে ওয়েবসাইট খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যা দিয়ে আপনার ব্যবসা, বানিজ্য, তথ্য, পড়াশোনা সহ যাবতীয়
সব জিনিস শেখা ও পড়া যায়। আর তাই ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট জানা সবার জন্যই খুব জরুরি। আমাদের দৈনন্দিন
সকল কাজ ওয়েব নির্ভর।আর সেজন্য প্রায় সবাই জানতে চায় ওয়েব ডিজাইন কি? ওয়েব ডেভেলপমেন্ট আর ডিজাইন কি এক?
সব নানা খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে। তাই আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানব ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর সকল
বিষয় নিয়ে। যাতে আমাদের ধারনা কিছুটা পরিষ্কার হইয়। আর আমরা এটি শিখতে আরো আগ্রহী হই।

ওয়েব ডিজাইন কি?

যখনই কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সবার আগে দেখে তার লোগো কোথায়, মেন্যু বার এ কি আছে, অথবা ওয়েবসাইটটি কি সুন্দর
বা আকর্ষনীয় কিনা এই সকল বিষয়। আর এই সব গুলোই হল ওয়েব ডিজাইনের অংশ। একজন ওয়েব ডিজাইনার নির্ধারন করে
ওয়েবের ফন্ট কিরুপ হবে তা। আকর্ষনীয় আর গোছানে ওয়েবসাইট সবার কাছে বেশ গ্রহণ যোগ্য। এতে পাঠক আপনার
ওয়েবসাইটে বার বার আসবে। আর তাই একজন ওয়েব ডিজানারের কাজের গুরুত্ব কতটুকু আশাকরি আপনি বুঝতে পেরেছেন।

ওয়েব ডিজাইন শিখতে কি জানা লাগে?

যেকোন সৃষ্টিশীল কাজের জন্য একটি মননশীল চিন্তা ও চেতনা লাগে। কারন সৃজনশীল কাজ সবার দ্বারা হয় না। আপনি যদি
ওয়েব ডিজাইন এর কাজ শিখতে চান তবে অবশ্যই আপনার ডিজাইন সম্পর্কে বাস্তব ধারনা থাকতে হবে। তাছাড়া ফটোশপ
এর কাজও জানতে হবে। পিএইচডি টু এইচটিএমএল কাজ জানা আবশ্যক। এতে ডিজাইনার হিসেবে কাজের কদর বেড়ে যায়।
যা আপনাকে আরো আগ্রহী করবে কাজ করার প্রতি। কোথায় কি বসলে ওয়েব সাইট আরো সুন্দর ও আকর্ষনীয় হবে তার প্রতি
সূক্ষ্ম খেয়াল রাখতে হবে।

ওয়েবসাইট কত প্রকার?

সাধারনত ওয়েবসাইট ২ ধরনের হয়। আর তা হলঃ

১। স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটঃ এই ধরনের ওয়েবসাইটে কোন এডমিন প্যানেল থাকে না। অর্থাৎ এইচটিএমএল এর মাধ্যমে আপনি
লিখতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে কোন কোডিং বা ভাষা শিখতে হবে না। যেমনঃ আমি এই যে ওয়েবসাইটে লিখছি তার জন্য
কোন কোডিং এর দরকার নেই। আমি শুধুমাত্র লিখছি তাদের নির্দিষ্ট এইচটিএমএল ফরমেট এ। আর তা খুবই সহজ। আর তাই
এটি ব্যপক জনপ্রিয়। শুধুমাত্র বেসিক কিছু জ্ঞাণ থাকলেই আপনি একটি ওয়েবসাইট এ নিজের লিংক তৈরি করতে পারবেন।
উদাহরনঃblogger.com সাইট। যেখানে আপনি একাউন্ট খুলেই লিখতে পারবেন।

২। ডায়নামিক ওয়েবসাইটঃ এই ওয়েবসাইটে একটি এডমিন প্যানেল থাকে। আর ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমেই তা তৈরি
করা হয়। আপনার এই ওয়েবসাইটে কাজের জন্য কোডিং জানতে হবে। আর তা না হলে আপনি তাতে কাজ করতে পারবেন না।
তবে এটির বেশ চাহিদা বর্তমানে। কারন এটি ইউনিক ও অনেক আকর্ষনীয় হয়।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কি?

আমরা অনেকেই জানি না, ওয়েভ ডেভেলপমেন্ট বলতে কি বুঝায়। আসলে ওয়েব সাইটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই
ডেভেলপমেন্ট। ওয়েব সাইটে পেছনের সব কাজ ওয়েব ডেভেলপাররা করে থাকেন। কোডিং এর মাধ্যমে তা করা হয়। যেমনঃ
ওয়ার্ড প্রেসে আপনি যে লিখবেন তার সব নিয়ম আর নীতি ওয়েব ডেভেলপাররা আগে থেকে কোডিং দ্বারা লিখে রাখে বা
সাজিয়ে রাখে। আপনার সাইটের সব কিছু তাদের ব্যাকএন্ড কাজের ফসল। যা ওয়েব সাইটকে আরো সুন্দর করে। ওয়েব
ডেভেলপমেন্ট এর রকম অনুসারে ওয়েভ ডেভলপার ৩ প্রকারের হয়। যথাঃ

১। ফ্রন্ট ইন্ড ওয়েব ডেভেলপারঃ এই ডেভেলপাররা সাধারনত ওয়েব ডিজাইন করে থাকে। কিভাবে ওয়েব সাইট আরো সুন্দর
ও সাজানো গুছানো হবে তা দেখাই তাদের কাজ। তাদের তৈরি ডিজাইনকে স্ট্যাটিক ডিজাইন বলা হয়। কারন তাদের করা
এই ডিজাইনগুলো পরিবর্তন করা যায় না। তবে তাদের কাজের উপর নির্ভর করেই পাঠক বা ক্রেতাকে আকর্ষিত করা সম্ভব।

২। ব্যাক এন্ড ওয়েব ডেভেলপারঃ এরা একটি ওয়েব সাইটের মূল প্রাণ কেন্দ্র। কারন সম্পূর্ণ ওয়েব সাইটের খুঁটিনাটি তারা তৈরি
করে থাকে। এদের কাজ সাধারনত আমরা দেখতে পাই না। তবে তাদের কাজের সুফলতা আমরা পাই ওয়েব সাইট ব্যবহার করে।
তারা কোডিং দিয়ে এডমিন প্যানেলে কাজ করে। উদাহরন স্বরূপঃ যখন আপনি কোন কাজ করেন ফেইসবুক বা অন্য কোন
সোশ্যাল মিডিয়ায় তবে আপনার সেই কাজ সরাসরি কিন্তু পোস্ট হয় না। তা কন্ট্রোল প্যানেলে গিয়ে চেক হয়ে তারপর পাব্লিশ
হইয়। আর এই কাজ গুলোর ত্বত্তাবধান করেন ব্যাক এন্ড ডেভেলপার।

৩। ফুল স্টাক ওয়েব ডেভেলপারঃ যারা ফ্রন্ট এন্ড ব্যাক উভয় কাজ করে তাদের ফুল স্টাক ওয়েব ডেভেলপার বলে। তবে এই
কাজ বেশ কষ্ট সাধ্য। যারা এই কাজ জানে তাদের কর্মক্ষেত্রে ডিমান্ড অনেক বেশি। আর তাদের কাজের পরিধিও অনেক।
গুরুত্ব বিবেচনায় তাদের মূল্যও অনেক।

ওয়েব ডিজাইন আর ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য কি?

মানুষ ওয়েব ডিজাইনকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ভাবে। কিন্তু এই দুটো জিনিস পরিপূর্ণ ভাবে আলাদা। ডিজাইন হলে বাহ্যিক
সৌন্দর্য ওয়েব সাইটের। আর ডেভেলপমেন্ট হল সাইটে কিভাবে কি লিখবেন বা কি হবে তার নির্ধারিত কোড সমূহ। আর তাই
এই ২ টি জিনিস আলাদা। তবে এই দুইয়ের সমন্নয়ে একটি পরিপূর্ণ সাইট তৈরি হয়। তাই বলা যায় তারা একে অন্যের পরিপূরক।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কি জানা লাগে?

আপনি যদি কোডিং এবং কম্পিউটারের ল্যাংগুয়েজ গুলো জানেন তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখা আপনার জন্য সহজতর
হবে। আর এর জন্য জানা লাগবে অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। যেমনঃ

  • এইচটিএমএল
  • সিএসএস
  • রেসপন্সিভ
  • জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকিওরি
  • বুটস্ট্রেপ
  • পিএইপি
  • ওয়ার্ডপ্রেস
এইচটিএমএল

ওয়েব সাইটে কোথায় হেডার, ফুটার বা প্যারা প্রভৃতি হবে তা এইচটিএমএল দিয়ে নির্ধারিত করা হয়। আর তাই একে মার্ক আপ
ল্যাংগুয়েজ বলা হয়। আপনার ওয়েব সাইটে কতটি ভাগ থাকবে আর কিভাবে হবে তা এইটিএমএল দিয়ে করা হয়। যেমনঃ

<!DOCTYPE html>
<html>
<body>

<h1>My First Heading</h1>
<p>My first paragraph.</p>

</body>
</html>

সিএসএস

কোন ওয়েব সাইটের কি কালার হবে , অথবা ফন্ট সাইজ কি হবে এই কাজ গুলো সিএসএস দিয়ে করা হয়। এছাড়াও ওয়েব
সাইটের পরিমাপ নির্ধারণেও সিএসএস ব্যবহার করা হয়। উদাহরণঃ

body {
  background-color: lightblue;
}

h1 {
  color: white;
  text-align: center;
}

p {
  font-family: verdana;
  font-size: 20px;
}

রেসপন্সিভ

সিএসএস এর অপর একটি পার্ট হল রেসপন্সিভ। ওয়েবসাইট তৈরির পরে তা ল্যাপটপে, ফোনে বা ট্যাবে দেখতে কেমন হবে তা
নির্দিষ্ট করা হয় রেসপন্সিভ ডিজাইনের মাধ্যমে। কোন মাধ্যমে সাইটের কাজ কেমন দেখা যাবে তা যদি ঠিক করা না হয় তবে,
আপনার সাইটি ভালো ভাবে উপস্থাপিত হবে না।

জাভাস্ক্রিপ্ট ও জেকিওরি

জাভাস্ক্রিপ্ট হল সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। একে ওয়েব ল্যাংগুয়েজও বলা হয়। জাভাস্ক্রিপ্ট ও জেকিওরি দিয়ে
ওয়েব সাইটের ইনটর একটিভিটি চালু রাখা হইয়। যেমনঃ কেউ আপনাকে ম্যাসেজ, লাইক, কমেন্ট, ও শেয়ার করলে সাইটে
নোটিফিকেশন আসে। আর এই গুলো জাভাস্ক্রিপ্ট ও জেকিওরি দিয়ে করা হয়। এছাড়া ফরম সহ যাবতীয় ফাংশানাল কাজ
এই দুটো ব্যবহার করে সমাধান করা হয়।

বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখু!!!

যারা ফ্রিতে ডিজিটাল মার্কেটিং/ফ্রি ল্যান্সিং করে প্রতি মাসে নিশ্চিত আয় করতে চান তাদের জন্যই মূলত এ কোর্সটি।
রেজিস্ট্রেশন করতে এখানে ক্লিক করুন Cell: 01711981051

ফেসবুক গ্রুপ:
বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে বা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে নানা প্রশ্নের সামাধান পেতে মেম্বার হতে পারেন “ডিজিটাল মার্কেটিং হেল্পলাইন” ফেসবুক গ্রুপটিতে।
গ্রুপ লিংক https://www.facebook.com/groups/digitalhelp

বুটস্ট্রেপ

রেসপন্সিভের আরেক রুপ বা আধুনিক রুপ বলা যায় বুটস্ট্রেপকে। এটি বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত ফন্ট ইন ফ্রেমওয়ার্ক।
এটি শেখা খুব সহজ। ডাব্লিও থ্রি ওয়েবসাইটে আপনি চেক করলেই বুঝতে পারবেন এর ব্যবহার বিধি।

পিএইচপি

একটি ওয়েব সাইটের এডমিন প্যানেল তৈরিতে মূখ্য ভূমিকা রাখে পিএইপি ল্যাংগুয়েজ। এটি আপনার সাইটকে ডায়ানামিক
ও ভিন্ন করে তুলে অন্য সাইট থেকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পিএইপি ল্যাংগুয়েজ এর অনেক ডিমান্ড। কারন সবাই চায় তার
সাইট যেন ইউনিক ও সুন্দর হয় সবার থেকে। আর তাই আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে চান অবশ্যই পিএইপি
শিখবেন। যেমনঃ

<!DOCTYPE html>
<html>
<body>

<?php
echo “My first PHP script!”;
?>

</body>
</html>

ওয়ার্ডপ্রেস

কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর সব থেকে জনপ্রিয় সাইট হল ওয়ার্ড প্রেস। আপনি যদি ভালো ওয়েব ডেভলপার হতে চান
তবে অবশ্যই ওয়ার্ড প্রেস নিয়ে ধারনা রাখবেন। এতে আপনার কাজের সুবিধা হবে।

এছাড়াও গিট হাব, ইউয়াই, ইউএক্স, এসইও নিয়ে ধারনা থাকা লাগবে যদি আপনি একজন ভালো ওয়েব ডিজাইন ও ওয়েব
ডেভেলপমেন্ট শিখতে চান। আর এইভাবে প্রতিটি জিনিস ভালো করে শিক্ষা নিয়ে আপনি দক্ষ হয়ে উঠবেন কাজে। এই
কোর্স শিখে ক্যারিয়ার গঠন করলে তাতে শতভাগ সফলতা নিশ্চিত। এছাড়া চাইলে আপনি পড়তে পারেনঃ

১।সেরা ৮টি ওয়েব ডিজাইন শেখার ওয়েবসাইট
২। ওয়েব ডিজাইন শেখার বই pdf

আশাকরি আমাদের আর্টিকেল পড়ে আপনি এই কোর্স করতে আগ্রহী হবেন। সবার আগে সর্বশেষ তথ্য পেতে সাথে থাকুন
সেবারুর। আর আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে লিখুন।

আরকে: ওয়েব ডিজাইন কি, ওয়েব ডিজাইন শিখতে কতদিন লাগে, ওয়েব ডিজাইন কি কি শিখতে হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *