দোয়া কুনুত এশার নামাজের পর ওয়াজিব বিতরের নামাজে পড়তে হয়। অর্থাৎ দুআ কুনুত বিতর নামাজে পাঠ করা ওয়াজিব।
জামে\’ আত-তিরমিজি শরীফ, সুনানে ইবনে মাজাহ ও সুনানে আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত তিনটি হাদিস কে বিতর নামাযে দোয়া কুনুত
পড়ার ব্যাপারে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। নিচে দোয়া কুনুত এর বাংলা উচ্চারণসহ অনুবাদ ও পড়ার
বিস্তারিত নিয়ম ও মাসয়ালা সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
আরবী উচ্চারণ:
اَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈ’নুকা, ওয়া নাস্তাগ্ফিরুকা, ওয়া নু’’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ’, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, – ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা – আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ব।
সেহরি ও ইফতারের ক্যালেন্ডার ২০২২
দোয়া কুনুত অর্থ:
হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি। আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।
আরও পড়ুন:
- সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২২
- কোরআনে রোগ মুক্তির ৬টি সেরা দুআ…
- বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কেন করবেন? যোগ্যতা কি লাগে? স্কলারশিপ লাভের উপায় কি?
বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পারলে করণীয় কি?
এশার নামাযের পর বিতর নামায তিন রাকাত আদায় করতে হয়। এবং এ নামাযে দোয়ায়ে কুনুত পড়া ওয়াজিব। দোয়ায়ে কুনুতের পরিবর্তে তিনবার সূরা ইখলাস পড়া গ্রহণযোগ্য মত নয়। কারণ, সূরা ইখলাস কুনুত বা দোয়া সম্বলিত সূরা নয়। বিতর নামাযে কুনুতের উদ্দেশ্য হচ্ছে- দোয়া করা। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দোয়া ব্যতীত অন্য যে কোনো দোয়া পড়লেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে এবং নামায সহীহ হয়ে যাবে। অবশ্য হাদীসে বর্ণিত দোয়া যেমন ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতায়িনুকা’ এটা পড়া সুন্নত সুতরাং হাদীসে বর্ণিত এ দোয়া কেউ না জানলে দ্রুত শিখে নিতে হবে।
ইমাম নববীর মতানুসারে যে কোন দোয়া পড়লে এর দ্বারা কুনুত হয়ে যাবে; এমনকি দোয়া সম্বলিত এক বা একাধিক কুরআনের আয়াত পড়লেও কুনুতের উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে যাবে। তবে, হাদিসে যে দোয়া এসেছে সেটা পড়া উত্তম। (ইমাম নববীর ‘আল-আযকার ৫০)
কিন্তু কেউ যদি বিতর নামাজে কোনো দোয়াই না পড়ে তাহলে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। (আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/৪২; রদ্দুল মুহতার ১/৪৬৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/২৮০)
দুআ কুনুতের ঐতিহাসিক ঘটনা
আহমদ বিন হাম্বল, মুহাম্মাদ ইবনে ইসা আত-তিরমিজি এবং আবু দাউদের বর্ণনা থেকে জানা যায়, হাসান ইবনে আলী রাঃ এই দোয়াটি মুহাম্মাদের (সা.) কাছ থেকে শিখেছিলেন। দাউদ আরো বলেছেন যখন মুসলমানদের উপর কোন বিপদ অথবা বিপর্যয় আসতো তখন মুহাম্মদ (সা.) দোয়া কুনুত পড়তেন।
বেতর নামাজ ও দোয়া কুনুত
বিতর নামাযের পদ্ধতি নিয়ে ওলামায়ে কেরামদের মতভেদ রয়েছে। ঐক্যমতে তিন রাকআত বিতর নামায পড়তে হয়। এর শেষ রাকআতে রূকুর পূর্বে বা পরে দু‘আ কুনূত পড়া আবশ্যক।
বেতরের নামাযে দোয়া কুনত পড়া ওয়াযিব। কিন্তু অনেকেই এ দোয়াটি জানে না অথবা শুদ্ধভাবে পড়তে পারেনা । তাই উপরের আলোচনায় যদি কারো উপকারে আসে
সে জন্য এই প্রচেষ্টা। সেবারু ডট কমের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
ঘরে বসে অনলাইনে ইসলামিক স্টাডিজ বেসিক কোর্স করুন ও নিয়ে নিন ১০০০+ ইসলামিক বই। রেজিস্ট্রেশ করুন এখনি…