কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়

কিন্ডারগার্টেন নীতিমালা ও পরিচালনা কৌশল

কিন্ডারগার্টেন অর্থ কি? কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয় এর মধ্যে পার্থক্য কি? এ ধরনের স্কুলের জন্য মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?
তার মার্কেটিং করার জন্য অনলাইনে যে পদক্ষেপ গুলো নিতে পারে তার একটি ধারণা প্রদান করা হয়েছে এই প্রবন্ধে।

এ লেখা থেকে কারা উপকৃত হবেন?

এক: কিন্ডারগার্টেন ব্যবসায়ী
দুই: কিন্ডারগার্টেন এ চাকরি করেন যিনি
তিন: কিন্ডারগার্টেন বিনিয়োগ কারী
চার: কিন্ডারগার্টেন এর ছাত্র
পাঁচ: ডিজিটাল মার্কেটার

কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলার নিয়ম

কিন্ডারগার্টেন স্কুল তৈরি করার আসলে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।
কারণ, আবেগের বশবর্তী হয়ে হুট করে আরম্ভ করলে লোকসানও হতে পারে। সেক্ষেত্রে খুব সীমিত আকারে দু -চার জন বাচ্চা নিয়ে প্রি-স্কুল বা
৪ বছরের বাচ্চাদের হাতে খড়ি দেওয়ার মাধ্যমে শুরু করা যেতে পারে। যাই হোক কিন্ডারগার্টেন স্কুল যদি খুলতেই চান তবে নিচের স্টেপ গুলো
ফলো করতে পারেন।

ফিজিবিলিটি স্টাডি:

কিন্ডারগার্টেন ব্যবসা আরম্ভ করার আগে সংশ্লিষ্ঠ ব্যবসা করা যাবে কি না? সময়ের চাহিদা কেমন? ইত্যাদি বিষয়ে জানার জন্য নিচের সাক্ষাৎকারটি সংশ্লিষ্ঠ কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গ্রহণ করা যেতে পারে। অথবা অন্য যে কোন উপায়ে নিচের বিষয় গুলোর ধারণা নেওয়া আবশ্যক।

কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য

শিশুরা কিন্ডারগার্টেনে উপস্থিত হয়ে পারস্পরিক যোগাযোগ রক্ষা করাসহ একে-অপরের সাথে খেলাধূলা করবে এবং
অন্যের সাথে স্বাচ্ছন্দ্যে উপযুক্ত কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করবে। শ্রেণীকক্ষে একজন শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা উপকরণ সঙ্গে রাখবেন।
অতঃপর উপকরণগুলোর বাস্তবমূখী কলা-কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে শিশুর মনোযোগ আকর্ষণ করবেন।
উপযুক্ত ভাষা ও শব্দ ভাণ্ডার প্রয়োগের মাধ্যমে পড়বেন কিংবা শিক্ষার্থীকে পড়াতে উদ্বুদ্ধ করবেন।
গণিত, বিজ্ঞানসহ সঙ্গীত, কলা, সামাজিক আচার-আচরণ শেখানোও তার প্রধান দায়িত্ব।

কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সাক্ষাৎকার

একটি কথা মনে রাখতে হবে দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য অনেক প্রতিযোগির প্রয়োজন হয়।কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করাও একটি দৌড় প্রতিযোগিতার মত।
তাই আশে পাশের সমজাতীয় স্কুল থাকলে আপনার স্কুল চলবে না একথা বলা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তাদের সেবার চেয়ে আপনারটা উন্নত হলে আপনিই প্রথম হবেন।
তাই আপনাকে একটু কস্ট করে নিচের ফরমেটে আশে-পাশের স্কুল গুলোর ডাটা সংগ্রহ করতে হবে। তবে খুব সতর্কতার সাথে কাজটি করতে হবে, যাতে
করে কেউ আপনাকে প্রতিযোগী না ভাবে। এর পর ডাটা এনালাইসিস করে আরম্ভ করে দিন।
নিচে নমুনা সাক্ষাৎকার দেওয়া হল-

  • কিন্ডারগার্টেন স্কুলের নাম ও ঠিকানা:
  • পদবীসহ যোগাগোকারীর নাম ও মোবাইল নম্বর:
  • সেবার ধরণ:
  • স্কুল আরম্ভের তারিখ:
  • শিক্ষক সংখ্যা:
  • ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
  • উল্লেখযোগ্য মতামত:
  • সংযুক্তি: ভিজিটিং কার্ড ও অন্যান্য ডকুমেন্ট সংগ্রহ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে।

কিন্ডারগার্টেন শব্দের অর্থ কী ?

জার্মান শব্দ কিন্ডারগার্টেন এর ইরেজী অর্থ হচ্ছে দ্যা চিলড্রেনস গার্ডেন । বাংলায় অর্থ হল শিশুদের বাগান।

কিন্ডারগার্টেন এর জনক কে?

জার্মান দার্শনিক ফ্রেডরিক ফ্রোয়েবেল ১৮৩৭ সালে গতানুগতিক বিদ্যালয়গুলোর সমস্যা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন এবং তার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যানিকেতনের জন্য বিদ্যালয় শব্দটি ব্যবহার করতে অনীহা প্রকাশ করেন। তার মতে, শিশুদেরকে বাগানের অগণিত চারা ও ফুলের সাথে তুলনা করা চলে, ফ্রোয়েবেলের শিশু উদ্যানে থাকবে না বই খাতার বহর। শিশুরা পাবে ঘরের চেয়েও অধিক আদর যত্ন ও স্নেহ-মমতা, খেলবে মনের আনন্দে। নানা ধরনের খেলাধূলার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে জন্ম নিবে শিক্ষার আগ্রহ, কেটে যাবে স্কুলভীতি।

কিন্ডারগার্টেন এর বিস্তার

পৃথিবী জুড়ে আজ এর বিস্তৃতি ঘটেছে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার।বাংলাদেশে বর্তমানে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা ব্যবস্থাই শিক্ষার মূল হাল ধরেছে।
শিশুশিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থায় একাডেমিক ধাপ বিস্তার লাভ করেছে। দেশের শহরাঞ্চলে ব্যাপক হারে গর্জে উঠার পর এখন গ্রামাঞ্চলেও কে.জি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে। উন্নত ও আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে তোলা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করে সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অত্যধিক ছাত্র বৃদ্ধির ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাহিদায় বড় ভূমিকা রাখছে।

কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক কেমন হওয়া উচিৎ

প্রাক-বিদ্যালয় হিসেবে কিন্ডারগার্টেনে সাধারণতঃ কোমলমতি শিক্ষার্থীর বয়সসীমা ৩ থেকে ৫ বছরের হয়ে থাকে। তাদের মনের মাঝে পারিবারিক পরিবেশই সর্বদা বিরাজমান থাকে। অনুকূল পরিবেশই তাদের শিক্ষাজীবনের মূল ভিত্তি। সাধারণতঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষিকাদের সংখ্যাই বেশি থাকে। বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধায় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীর মা, বাবা কিংবা শিক্ষার্থীর সহচরকে খণ্ডকালীন কিংবা পূর্ণকালীন চাকুরীর ব্যবস্থাও প্রদান করতে পারে।

কি শিখবে কিন্ডারগার্টেনে?

অধিকাংশ দেশে কিন্ডারগার্টেনকে শিশুর শৈশবকালীন শিক্ষার অংশ হিসেবে নেয়া হয়েছে। তবে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর মানসিক গঠন ও উন্নয়ন সংক্রান্ত মাপকাঠি দেশে-দেশে ভিন্নতা রয়েছে। মূলত এ শিক্ষাপদ্ধতিতে নিম্নলিখিত বিষয়াদির মাধ্যমে শিশুর মানসিক গঠন ও মেধা বিকাশকল্পে নজর দেয়া হয়। যেমন,

  • সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং আবেগিক উন্নয়ন
  • ভাষা, কথা বলায় দক্ষতা এবং শোনার মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ
  • বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ ও বোঝার ক্ষমতা অর্জন
  • সৃষ্টিশীলতা এবং সৌন্দর্য্যবোধে উন্নয়ন
  • স্বাস্থ্য সচেতনতা
  • দলগতভাবে কাজ করা
  • আত্মরক্ষামূলক কলাকৌশল ও দক্ষতা অর্জন
  • সাহিত্য চর্চা
  • প্রাথমিকভাবে বক্তৃতা প্রদানে সক্ষমতা

কিন্ডারগার্টে এর বই পিডিএফ অথবা প্রিন্ট আকারে কিন্ডারগার্টেন বই অনলাইনে কিনুন এখানে।

কিন্ডারগার্টেন এর নাম

কি পড়ানো হচ্ছে কিন্ডারগার্টেন গুলোতে ?

আমাদের দেশে ছোট ছোট শিশুদের এক গাদা বই দেয়া হয়। বাড়ীর কাজ এতো বেশি থাকে যে শিশুকে হিমশিম খেতে হয়। তার এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য চাই গৃহশিক্ষক। গৃহশিক্ষকেরও দক্ষতা প্রয়োজন। ইংরেজি বিভাগের কদর বেশী, তবে ইংরেজি ভাল জানলেই অভিভাবকদের চাহিদা, একটি নার্সারীর শিশুকে পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক নিয়োগের সময় ভাইভা বোর্ডের আয়োজন করা হয়ে থাকে এদেশে। কিন্তু উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন শিক্ষিকা মায়ের মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালবাসা, আদর সোহাগে ভরে দিবেন শিশুর মন। সেজন্য মাস্টার্স ডিগ্রীধারীদের চেয়ে একজন এস এস সি পাশ যার শিশু মনোবিজ্ঞানের দক্ষতা এবং প্রফেশনাল কমিটমেন্ট আছে তিনিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য। কিন্তু আমাদের দেশে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচী এতো ভারী যা চিন্তা করলে বিস্মিত হতে হয়। এ ভারী সিলেবাস পড়ানোর জন্য অভিভাবকেরা ভাল শিক্ষক খোঁজেন, বাংলা মাধ্যমের কোন কোন কিন্ডারগার্টেন বাংলা নাম শিশু শ্রেণী কোন কোনটিতে আবার প্লে গ্রুপ, কেজি ইত্যাদি নামও রাখা হয়। ক্লাশ বা শ্রেণীর কোন সামঞ্জস্য থাকেনা। কোন কোন কিন্ডারগার্টেনে প্রথম শ্রেণী বা ষ্টান্ডার্ড ওয়ানের আগে তিনটি শ্রেণী আবার কোন কোনটিতে দুটি শ্রেণী আছে। অর্থাৎ প্রথম শ্রেণীর আগে শিশুকে কিন্ডারগার্টেনে তিনটি বা দুটি শ্রেণীতে পড়তে হয়।

এ অসামঞ্জস্যতার ফলে প্রয়োজনবশতঃ অবস্থানগত বদলির কারণে এক কিন্ডারগার্টেন থেকে অন্য কিন্ডারগার্টেনে শিশুদের ভর্তি করাতে গেলে অভিভাবকরা পড়তে হয় সমস্যায়। কোন নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত না হওয়ায় কিন্ডারগার্টেন ধরণের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবাধে মাধ্যমিক এমনকি উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে। ফলে এসব শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষা দেয় অন্য কোন রেজিষ্টার্ড বা অনুমোদিত স্কুল-কলেজের অধীনে চুক্তি ভিত্তিতে – গোপনে। এ নিয়ে স্কুল এন্ড কলেজের আঙ্গিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়ে চলেছে এবং কোথাও কোথাও এক ধরণের দুর্নীতিও চলছে। আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা, অপরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা, সুনির্দিষ্ট নীতিমালাহীন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা চলে এলেও এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন রকম মাথাব্যাথা নেই। ফলে লাগামহীন অপরিকল্পিত কিন্ডারগার্টেন বেড়ে চলেছে এবং চলছে। নিজস্ব গতিতে ইচ্ছানুযায়ী, মহানগরীতে প্রি-ক্যাডেট জাতীয় স্কুল রয়েছে যা ক্যাডেট ভর্তি কোচিং থেকে এসেছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী পড়ানোর ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। বাধ্য হয়ে দুর্নীতির আশ্রয়-নিয়ে তাদেরকে অন্য বেসরকারী বিদ্যালয়ের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এজন্য ঐ বেসরকারী স্কুল কলেজের প্রধানদের মোটা অংকের টাকা উৎকোচ দেয়া হয় এবং যার ভাগ শিক্ষাবোর্ড পর্যন্ত পৌছায় বলে জানা গেছে। বেশীরভাগ শিক্ষাক্ষেত্রে নিম্নমানের বা যেগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী কম, এমন বেসরকারী অনুমোদিত স্কুল-কলেজের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা এস এস সি বা এইচ এস সি পরীক্ষা দেয়। ইংলিশ স্কুলগুলোর এ জাতীয় সমস্যা নেই। তাদের শিক্ষার্থীরা ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘ও’ লেভেল ‘এ’ লেভেল পরীক্ষা দেয়।

কিন্ডারগার্টেন নীতি মালা

কিন্ডারগার্টেন চলছে নিয়মনীতির তোয়াক্কা ছাড়াই। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা সুদৃঢ় ও সমাদৃত। সরকারী উদ্যোগে শিক্ষাকে সঠিক পথে পরিচালনা, অবহেলা এর মুল কারণ। দেশের কিন্ডারগার্টেনগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও এ ধরণের জরীপ কার্যক্রমও এ সংক্রান্ত সরকারী কোন নীতিমালা নেই। ১৯৯৬ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিন্ডারগার্টেন ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমনঃ ইংরেজি ও বাংলা মিডিয়াম নার্সারী, প্রিপারেটরী ও ইংলিশ স্কুলগুলোর ঠিক তথ্য সংগ্রহ করে নীতিমালা প্রণয়ন করার উদ্যোগ নেয়। কমিটি ১৯৯৭ সালে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রাথমিক তথ্যের মধ্যে ছিল স্কুলের নাম ঠিকানা ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ও স্কুল প্রধানের নাম সংগ্রহ। এজন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দেয়া হয়। দেশের সকল জেলা শিক্ষা অফিসার এ জরীপের দায়িত্ব পান। এ জরীপে প্রাথমিক তথ্য সংগৃহীত হয় মাত্র ১৬৭৩টি প্রতিষ্ঠানের। পরবর্তী সময়ে এসব প্রতিষ্ঠান পূর্ণাঙ্গ জরীপ করার জন্য ৬ পৃষ্ঠার একটি জরীপ ফরমও তৈরী করা হয়, এটি পূরণ করার জন্য মন্ত্রণালয় পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। প্রথমদিকে সময় ছিল ওই বছরে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। পরে একমাস বর্ধিত করে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু তাতেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
২০০১ সালে এসে আবার এ রকম জরীপের উদ্যোগে নেয়া হয় এবং আবারো জেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ বৎসরের ৭ মার্চ জরীপ কার্যের সিদ্ধান্ত হলে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জমা প্রদানের জন্য। তাতে আশানুরূপ ফল হয়নি এজন্য পরিকল্পিতভাবে সুনির্দিষ্ট প্রচারেও ছিল গড়িমসি এবং দায়সারা প্রকৃতির। কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানগুলোও এ জরীপকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। অথচ সারাদেশে ৬ হাজারেরও অধিক কিন্ডারগার্টেন আছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এ জরীপ ফরম পূরণ করেনি বা তথ্যাদি দিতে পারেনি তাদের বিরুদ্ধে ১৯৯৭ সালে যেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি ২০০১ সালেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সুতরাং এটা শুধুমাত্র উদ্যোগ এর কোন প্রতিফলন নেই। এ ধরণের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ও কোন রকম নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী আশির দশকে এদেশে কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠার হিড়িক পড়ে। তখন থেকেই সরকার, এগুলোর তৎপরতার ব্যাপারে কোন নিয়ন্ত্রণ করেনি। অথচ স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই প্রি-প্রাইমারী বা প্রাক প্রাথমিক থেকে যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ১৯৬২ আইন চালু ছিল, যা এখনো বহাল আছে। এ আইন অনুযায়ী যে কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে গেলে প্রথম শর্ত হচ্ছে ঐ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জমি থাকতে হবে। দ্বিতীয় একটি পরিচালনা পরিষদের মাধ্যমে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হবে যাতে সরকারেরও একজন প্রতিনিধিও থাকবে। কিন্তু শর্তগুলো এখন পুরো দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (প্রাইভেট) মেনে চলছে না। দিনে দিনে কিন্ডারগার্টেন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ভাড়া বাড়িতে দেদারছে গজে উঠেছে। কোন প্রকার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ইন্ডাষ্ট্রী দোকান-পাটের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে অথচ নিয়ন্ত্রণও নেই, নীতিমালাও নেই কিংবা আইনের কোন শুদ্ধিও নেই।
১৯৬২ সালের এ আইনের ব্যর্থতা দেখে ১৯৮৩ সালে কিন্ডারগার্টেন ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মার্শাল ল’ ইনভেষ্টিগেশান টিম অব প্রাইভেট স্কুল নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। উক্ত কমিটি রাজধানীর বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে একটি রিপোর্ট দেয়। কিন্তু পরে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। ১৯৮৩ সালের পরে ১৯৮৯ সালেও নতুন এ্যাক্ট হয় ১৯৬২ সালের এ্যাক্ট পরিবর্তন করে। এ নতুন আইনেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজস্ব বাড়ী, নিজস্ব পরিচালনা পরিষদ এবং ঐ পরিষদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এ তিন শর্তই বহাল ছিল। ঐ আইনের ভিত্তিতে কিন্ডারগার্টেন গুলো রেজিষ্ট্রেশন প্রদানও শুরু হয়। সে সময় ১৫০টি এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান রেজিষ্ট্রেশন নেয়। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কিন্ডারগার্টেনের রেজিষ্ট্রেশন বন্ধ করে দেয়। এরপর পরবর্তী সরকার একটি খসড়া নীতিমালা করলেও কার্যকর হয়নি।

কি হবে কিন্ডারগার্টেন গুলোর ভবিষ্যৎ?

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় কিন্ডারগার্টেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকার নতুন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে পারেনি-জনগণের কাছে সে প্রভাব পড়েনি কিন্ডার গার্টেনগুলো গজে উঠার কারণে। কিন্তু এজন্য সরকারী নীতিমালা প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থা, পাঠদান, পরীক্ষা পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে। এরিমধ্যে শিক্ষাকে পূঁজি করে এ ধরণের প্রতিষ্ঠানকে যারা বাণিজ্যিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ন্যায় গড়ে তুলেছেন তাদের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ জরুরী। কারণ সেখানে শিক্ষার পরিবর্তে বাণিজ্যের প্রভাব অত্যধিক লক্ষণীয়।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৬২ সালের সংশোধন করে মন্ত্রী পরিষদে অনুমোদনের জন্য পাঠায়। সংশোধনীতে কিন্ডারগার্টেন গুলোকে প্রাইমারী স্কুল হিসাবে রেজিষ্ট্রেশনের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু মন্ত্রী পরিষদ ওই সংশোধনী আবারো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানোর নামে কার্যতঃ নাকচ করে দেয়। ফলে সন্দেহ দেখা দিয়েছে এ বিষয়ে আদৌ কোন নীতিমালা হবে কিনা। সরকারের এ ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। কেননা নীতিনিয়ম ব্যতিরেকে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষাজীবনের অনিশ্চিত সময় ক্ষেপন কখনো কাম্য নয়।

ট্যাগ: কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলার নিয়ম, কিন্ডারগার্টেন শব্দের অর্থ কী, কিন্ডারগার্টেন এর জনক কে, কিন্ডারগার্টেন এর নাম, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বৈশিষ্ট্য, কিন্ডারগার্টেন বই,
ইসলামী কিন্ডারগার্টেন,

বাংলাদেশের উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার মাইলফলক হিসেবে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলার নিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।


ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে ফ্রি পরামর্শ চান? বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন
আরও জানতে ভিজিট করুন: অনলাইন ইনকাম ।। ফেসবুক গ্রুপ ।। ইউটিউব চ্যানেল।। যোগাযোগ
মোবাইল+হোয়াটসঅ্যাপ (shebaru): 01711981051 (সকাল ১০ – রাত ৯ টার মধ্যে কল করুন)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *