বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস

বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস

প্রকৃতির এক অনবদ্য সৌন্দর্যের রুপ হল পাখি। আর জীববৈচিত্রের এই অন্যন্য জীব ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক
কারনে আজ হুমকির মুখে। আর তাই তাদের সুরক্ষিত করতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত হয় মে মাসের
১০ ও ১১ তারিখ। নানা কারনে পাখিরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে তার আবাসস্থল ছেড়ে অন্য দেশে যায়। আর তার এই
ভ্রমণ পরিক্রমায় নানা দূযোর্গ ঘটে। আর তারই ফলস্রুতিতে এই দিবসের (World Migratory Bird Day) সূচনা।

কবে থেকে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত হয়?

২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সংরক্ষণ সংস্থা বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস ঘোষণা করে। পরিবেশগত
ও প্রাকৃতিক নানা কারনে পাখিরা আজ হুমকির মুখে। জলবায়ু তার মধ্যে অন্যতম। পাখিদের আবাসস্থল ও আজ
মানুষের কারনে হুমকির দ্বার প্রান্তে। আর তাই পাখিদের আবাস ও বিচরণ স্থল যেন সুরক্ষিত থাকে তারই প্রয়াসে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি পাখির সুরক্ষায় এই দিনটি মানুষকে সচেতন করতে নানা আয়োজনে পালন করছে
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। আমাদের দেশেও নানা পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে।
আর তাই আমরাও পরিবেশ অধিদপ্তরের উৎযোগে নানা আয়োজনে পালন করি এই দিবসটি।

পরিযায়ী পাখি কারা?

খাদ্য বা বাস্থানের জন্য যখন কোন পাখি তার নিজ অঞ্চল ছেড়ে অন্য অঞ্চলে যায় তাদের পরিযায়ী পাখি বলা
হয়। সাধারনত তারা নিজ আবাসস্থলে অসুরক্ষিত বা খাদ্যাভাব হলেই অন্য অঞ্চল বা দেশে পরিভ্রমন করে।
এই ভ্রমন স্বল্প বা বেশি পরিসরের হতে পারে। আর এই সময় অনেক পাখি নানা কারনে মারাও যায়। তাই এই
পরিযায়ী পাখিদের সংরক্ষনের প্রয়োজন। অঞ্চল ভেদে এই পাখিদের আচরন ও ভ্রমন পথ ভিন্নতর হয়।

বাংদেশের পরিযায়ী পাখির নাম কি?

চাতক পাখি

আমাদের দেশে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে প্রতি বছর। আর তার ফলে
প্রকৃতিতে এক উৎসবের ভাব লক্ষ্য করা যায়। সাধারনত আমরা পরিযায়ী পাখি বলতে নানা প্রজাতির হাঁস
বুঝি। কিন্তু আসলে হাঁস ছাড়াও অন্যান্য আরো পাখি আছে পরিযায়ী পাখির তালিকায়। বাংলাদেশে হেমন্তে
পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে, পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে। আর শীতের শেষে তারা চলে যায় নিজ নিজ
আবাস স্থলেন

পরিযায়ী পাখি

এইসব পাখিদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলঃ সুইচোরা, চ্যাগা, চখাচখীর মানিকজোড়, গেওলা, খঞ্জনা,মাঠ চড়ুই,
বেগুনী কালিম, গাঙচিল, ক্সাই পাখি, ও নানা প্রজাতির বন্য হাঁস। আমাদের সুন্দরবনে ও বিশেষ করে হাওড়
অঞ্চলে এই সব পাখির কলরব শোনা যায়। এছাড়াও জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরো কয়েকটি অঞ্চলে
এই পাখিদের দেখা যায়।

কিভাবে পরিযায়ী পাখি সুরক্ষিত করা যায়?
পরিবেশ সুরক্ষায় পরিযায়ী পাখি সংরক্ষন করুন

মুলত এই বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস এর মুল প্রতিপাদ্য হল পরিভ্রমনের সময় বা প্রাকৃতিক ও জলবায়ুর এই পরিবর্তনে
এই পাখিকুল যেন সুরক্ষা পায় তা নিশ্চিত করা। আর তাই তারা প্রায় ৫৫ টি মাইগ্রেটেড পাখির গায়ে জিপিএস ট্র্যাকার
স্থাপন করেছে। এর উদ্দেশ্য হল পাখিদের ভ্রমন পথ ও তাদের বিচরন পরিলক্ষন করা। যাতে ভবিষতে তাদের বংশ সুরক্ষা
ও তাদের আবাস স্থল সংরক্ষণ করা যায়। বাংলাদেশে ভ্রমনকালে এই পাখি দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়। আর শীতের শেষে আবার
নিজ আবাস স্থলের উদ্দেশ্যে চলে যায়।

কোভিড নাইনটিন অর্থাৎ করোনা কালে প্রকৃতিতে এক নতুন প্রাণের সঞ্চার ঘটে। যার ফলে মাইগ্রেটেড পাখির বিচরন
বেড়ে যায় আমাদের এই দেশে। তাদের অনেকেই এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ পেয়ে বংশ বিস্তারও করে। যা একটি
গুরুত্বপূর্ণ এই মাইগ্রেটেড পাখির সংরক্ষনের জন্য। এছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী এই সব পাখি
হত্যা বা ধরা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যা এই পাখিদের অবাধ বিচরনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

ফেসবুক স্ট্যাটাস

আজ বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস।

পরিযায়ী পাখি (অতিথী পাখি) বাংলাদেশের এবং পৃথিবীর নিসর্গের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

বাংলাদেশের আইনে সকল রকম পরিযায়ী পাখি হত্যা কেনাবেচা নিষিদ্ধ।

তারপরও অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে আমরা প্রতিবছরই পরিযায়ী পাখি হত্যা খাওয়া এবং কেনাবেচার খবর পাই।

বন্ধ হোক এমন অপরাধ।।
https://www.facebook.com/groups/foodlinkbd/permalink/959410398081827/

প্রতিটি পাখি পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই এই দিবসে সবাই সচেতন হয়ে পরিবেশ সুরক্ষায় আরো মনোযোগী
হব। আর একই সাথে পরিযায়ী পাখির আবস স্থল যেন সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করব।

এছাড়াও আপনি আমাদের আন্তর্জাতিক দিবস সমুহ এবং বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দিবস সমূহ আর্টিকেল পড়তে
পারেন। আর জানতে পারেন সকল দিবস নিয়ে যা ব্যক্তি ও সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে।
আপনার মতামত ও মন্তব্য জানতে আমাদের কমেন্ট করতে পারেন। আমরা আছি সব সময় সকল তথ্য নিয়ে
আপনার পাশে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *