প্রাইভেট শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কৌশল

প্রাইভেট শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কৌশল

শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কৌশল অন্যন্য ব্যবসার মত নয়। কারণ অনেকেই এটিকে ব্যবসা বলতে নারাজ। তবুও কোন প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি প্রয়োজনীয়
আয় না থাকে ফলে এক সময় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। যার কারণে এর সাথে সংশ্লিষ্ঠ অনেকেই বেকার হয়ে পড়ে। তাই একটি বেসরকারী বা প্রাইভেট শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানকে
যথাযথ মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে সেবা গৃহিতাকে আকৃস্ট করতে হয়। সেই সাথে কোয়ালিটি শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সুনাম ধরে রাখতে হয়।
সর্বপরি একটি প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সকলের জন্য একটি পরিপূর্ণ মার্কেটিং প্লান দেওয়া হল-

প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৩ ধরনের মার্কেটিং কৌশল

সাধারণত তিনটি পদ্ধতিতে প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য মার্কেটিং করা হয় যথা-

  1. ট্রেডিশনাল মার্কেটিং
  2. মুখে মুখে মার্কেটিং (ওয়ার্ড অব মাউথ)
  3. ডিজিটাল মার্কেটিং

ট্রেডিশনাল মার্কেটিং

এই পদ্ধতিতে ফিজিক্যাল বিজ্ঞাপনই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। যেমন, ব্যনার, ফিস্টন, বিলবোর্ড, লিফলেট, টিকা মারা ইত্যাদি।

মুখে মুখে মার্কেটিং (ওয়ার্ড অব মাউথ)

প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান ভালো হলে মুখে মুখেই যে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে সেটিই মূলত মূখ মার্কেটিং। এতে বাজ্যত কোন খরচ হয় না;কিন্তু এর জন্য সময় ও ইনভেস্টমেন্ট
ও সার্বিক পরিস্থিতি নির্ভর করে।

ডিজিটাল মার্কেটিং

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এটি। এ মার্কেটিং সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing):

পণ্যের প্রচারের জন্য এর চাইতে ভাল জায়গা আর নাই। একটি এ্যাক্টিভ কমিউনিটি তৈরি করুন। এমনভাবে একটি কমিউনটি তৈরি করুন যেখানে সকল মেম্বার এ্যাক্টিভ থাকবে। ফেসবুক মার্কেটিং করার জন্য গ্রুপ কিংবা পেজ তৈরি করুন।
এমনি করে টুইটার, গুগল প্লাস কিংবা লিংকেডিনে কমিউনিটি তৈরি করুন। আপনার টার্গেটকৃত ক্রেতাদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে বিভিন্ন আলোচনাতে অংশগ্রহন করতে পারেন।
কাউকে ইমেইল পাঠানোর ক্ষেত্রে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার পেজ কিংবা গ্রুপের লিংকগুলো সিগনেচার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার নিজের ওয়েবসাইটে কিংবা কোন ব্লগে পোস্ট দেয়ার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার লাইক বাটন যুক্ত করুন।
সকল সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয়ভাবে নিয়মিত অংশগ্রহণের জন্য ম্যানেজমেন্টটুলস (HootSuite, TweetDeck) ব্যবহার করা হয়।
নিয়মিত পোস্ট দিতে হবে। সেটা একটা রুটিন অনুযায়ী করলে ভাল হয়ে। যেমন, ৩ দিন পর, ১ সপ্তাহ পর। এ কারণে ভিজিটর আসবে।

ই-মেইল মার্কেটিং (Email Marketing):

যখন কোন বার্তা গ্রাহকদের কাছে ইমেইলের মাধ্যমে পোঁছায় তখন তাকে ইমেইল মার্কেটিং বলা হয়। সাধারণ এটি সফটওয়ার দিয়ে করা হয়।
ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে একটি অনলাইন মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি আপনার পন্যের এবং সেবার প্রচার করতে করতে পারবেন এবং আপনার সাইটের প্রচার করতে পারবেন।
একটি ই-মেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার দিয়ে আপনার ই-মেইল লিস্ট গ্রাহকদের কাছে সেবা ও পণ্য মার্কেটিং করা হয়ে থাকে।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছোট বড় অসংখ্য প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতির মাধ্যমে তাদের আয় বৃদ্ধি করছে।
সহজভাবে আপনার পণ্যের গুণ বর্ণনা করুন আপনার মেইলে। ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য প্রয়োজন একটি ওয়েবসাইট, এবং পন্য বা সেবা।
ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে মুহূর্তেই আপনি আপনার পণ্য এবং সেবা কে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছে তুলে ধরতে পরবেন।
এতে করে আপনার পন্যটি জনপ্রিয় হতে থাকবে। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার পণ্য অধিক পরিমানে বিক্রি হতে থাকবে ।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (Search Engine Marketing-SEM):

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বা SEM এটি ব্যাপক মার্কেটিং কৌশল যা প্রাথমিকভাবে দেওয়া প্রচেষ্টার মাধ্যমে আপনার ব্যবসা ট্রাফিক ড্রাইভ হয়।
তাকে আমরা Paid সার্চ মার্কেটিং বলে থাকি। আপনার ব্যবসার গঠনশৈলীর উপর ভিত্তি করে সাধারনত এ ধরনের মার্কেটিং করা হয়।
এক্ষেত্রে কোন PPC (পে-পার-ক্লিক করুন) অথবা সিপিসি (খরচ প্রতি ক্লিকে) মডেল বা সিপিএম (খরচ প্রতি হাজার ইমপ্রেশন) মডেল নির্বাচন করতে পারবেন। এসইএম সাধারনত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের হয়ে থাকে। যেমন-গুগুলের AdWords এবং বিং বিজ্ঞপ্তি (গুগল নেটওয়ার্কে), ইয়াহু বিং নেটওয়ার্ক সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এছাড়াও এসইএম বিজ্ঞাপন অনুসন্ধান, মোবাইল মার্কেটিং, পুনঃবাজারজাতকরণের এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
SEM বর্তমান অনলাইন মার্কেটিং এর সব চেয়ে সাশ্রয়ী অনলাইন মার্কেটিং যা কিনা আপনার রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে পারে।

কন্টেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing):

একটি ভাল কন্টেন্ট আপনার ব্যবসার ব্র্যান্ডিং এর জন্য সবচেয়ে ভাল উপায়। অনলাইনে আপনার কনটেন্ট যেমন, কোন পোস্ট কিংবা ফোরাম ডিসকাশনে যাতে আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ডের উপস্থিতি থাকে যাতে খুব সহজে আপনার টার্গেটেড পাঠক আপনাকে খুঁজে পেতে পারেন।
প্রত্যেকদিন নির্দিষ্ট সময় পর পর কন্টেন্ট গুলোকে আপডেট করা উচিৎ।
আপনি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের জন্য আপনার বিষয়বস্তু কাস্টমাইজ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মোবাইল ফোনের জন্য বিষয়বস্তু সহজ এবং সংক্ষিপ্ত হতে হবে।

ইউটিউব মার্কেটিং (YouTube Marketing):

গবেষণায় দেখা গেছে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে ইউটিউব। আগে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ বলতে শুধু ফেসবুক কেই জানত। কিন্ত বর্তমান সময়ে ইউটিউব এতোটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে, ফেসবুক থেকে এখন মানুষ ইউটিউব বেশি ব্যবহার করে। গুগলের পরেই এর অবস্থান।

মোবাইল মার্কেটিং

মোবাইল মার্কেটিং মূলত এসএমএস(SMS) মার্কেটিং, এমএমএস(MMS) মার্কেটিং, ব্লুটুথ মার্কেটিং, ইনফ্রারেড মার্কেটিং ইত্যাদি।
আর এগুলোর মধ্যে এসএমএস(SMS) মার্কেটিং পদ্ধতিটি খুবই গুরুতুপূর্ণ। ফেসবুক, টুইটারে অনেক ফলোয়ার থাকতে পারে। তাদেরকে আপনি মেসেজ অথবা টুইট করতে পারেন আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে। হয়তো তারাও SMS এর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্টের ক্রেতা হতে পারে।
যারা আপনার প্রডাক্টের নিয়মিত সাবস্ক্রাইবার হয়েছে তাদেরকে আপনি আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিবরণের মেসেজ পাঠাতে পারেন।
মেসেজ হবে সংক্ষিপ্ত, to-the–point এ এবং ১৬০ ওয়ার্ডের বেশী নয়। মেসেজ হবে ফ্রেণ্ডলি যাতে সাবস্ক্রাইবার এমন মনে না করে যে আপনি আপনার কোম্পানীর প্রোডাক্ট কেনার জন্য তাকে প্ররোচিত করছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *